সরকারিভাবে জাকাত সংগ্রহ ও বিতরণে সংসদে বিল

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-১১-০৬ ২২:০২:৩৫


সরকারিভাবে জাকাত সংগ্রহ ও বিতরণের বিধান রেখে জাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা বিল, ২০২২ সংসদে উঠেছে। প্রস্তাবিত বিল অনুযায়ী শরিয়া সম্মত খাত ছাড়া অন্য কোনো খাতে জাকাতের অর্থ ব্যয় বা বিতরণ করা যাবে না।

রোববার (৬ নভেম্বর) বিলটি উত্থাপন করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। পরে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে সামরিক সরকারের আমলে করা আইন ‘জাকাত ফান্ড অরডিন্যান্স, ১৯৮২’ বিলুপ্ত করে নতুন আইন করতে এ বিল আনা হয়েছে।

উত্থাপিত বিলে ধর্ম মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে জাকাত বোর্ড গঠনের কথা বলা হয়েছে। এর সদস্য হবেন— ধর্ম সচিব (ভাইস চেয়ারম্যান), ধর্ম, অর্থ ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন করে যুগ্ম সচিব পদ মর্যাদার তিন কর্মকর্তা, সরকার মনোনীত পাঁচজন আলেম, সরকার মনোনীত ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের দুইজন প্রতিনিধি এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (সদস্যসচিব)। বছরে এই বোর্ডের কমপক্ষে দুইটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। বোর্ডের পরিচালনা ব্যয় সরকার বহন করবে।

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, জাকাত সংগ্রহ, বিতরণ, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরির ক্ষমতা বোর্ডের থাকবে। স্থানীয়ভাবে জাকাত সংগ্রহ ও বিতরণে কেন্দ্রীয়, সিটি করপোরেশন, বিভাগ, জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কমিটি গঠন করতে পারবে।

জাকাত তহবিলে অর্থের উৎস সম্পর্কে বিলে বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে সংগৃহীত জাকাত; প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিম নাগরিক, কোনো বিদেশি মুসলিম ব্যক্তি বা কোনো সংস্থায় জমাকৃত জাকাতের অর্থ থেকে পাওয়া জাকাত এবং শরিয়া সম্মত অন্য কোনো উৎস থেকে পাওয়া জাকাত।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কিত বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘সংগতিসম্পন্ন মুসলিমের ওপর আল্লাহ জাকাত ফরজ করেছেন। জাকাত দারিদ্র্য বিমোচন ও পুনর্বাসনের হাতিয়ার। জাকাত কোন স্বেচ্ছামূলক দান নয়, বরং জাকাত ধনীর সম্পদ থেকে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তদের জন্য আল্লাহ নির্ধারিত বাধ্যতামূলকভাবে দেওয়া নির্দিষ্ট অংশ।’

তিনি বলেন, ‘দেশে ব্যক্তিগত পর্যায়ে জাকাত ব্যবস্থা চালু থাকলেও নানা কারণে তার কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া যাচ্ছিল না। জাকাতের মাধ্যমে এক সময় সারা মুসলিম জাহানে দারিদ্র্য দূরীকরণ সম্ভব হয়েছিল। এই আইন পাস হলে দেশ থেকে দারিদ্র্য দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।’

চট্টগ্রাম শাহী মসজিদ বিল সংসদে উচ্চ আদালতের নির্দেশে সামরিক সরকারের আমলে করা আইন ‘চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ অরডিন্যান্স, ১৯৮৬’ বিলুপ্ত করে নতুন আইন করতে ‘চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ বিল, ২০২২’ সংসদে উঠেছে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বিলটি উত্থাপন করেন। পরে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিলে আছে ফাউন্ডেশন মসজিদের ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা হবে। একই সঙ্গে মসজিদের যাবতীয় বিষয় সরকারের জবাবদিহির মধ্যে থাকবে। তহবিলের সব অর্থ তফসিলি ব্যাংকে জমা দিতে হবে।

বিলের কারণ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরে অবস্থিত নান্দনিক স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন এই মসজিদ। এই আইন পাস হলে অত্র অঞ্চলে ইসলাম প্রচার ও প্রসারে মসজিদটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

এএ