যৌন হয়রানি সুরক্ষা আইনসহ জেন্ডার প্লাটফর্মের সাত দফা দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-১১-২৭ ১৫:৪১:৩৮


যৌন হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ‘কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনের জোট জেন্ডার প্লাটফর্ম।

রোববার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন মুকুট, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সীমা জহুর, কর্মজীবী নারীর নির্বাহী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সানজীদ সুলতানা প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস্ এর পরিচালক নাজমা ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই মোট ৩৭১ জন নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৬২ জন কন্যাসহ ৯১ জন। তার মধ্যে ১২ জন কন্যা ও ১০ জন নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে, ২ জন কন্যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও ৫ জন কন্যাসহ ১০ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। নারী ও কন্যা পাচারের ঘটনা ঘটেছে ৬৩টি। এর মধ্যে ১৮ জন কন্যা।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে নাজমা ইসলাম বলেন, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই দশ মাসে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮৩০ নারী। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৩৯ নারী, আর এ কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৭ জন। এ ছাড়া আরও ১৪১ নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে।

নারীর প্রতি এ সহিংসতা রোধে নতুন আইন প্রণয়ন ও পুরাতন আইনগুলোকে সংস্কার এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, নারীদের প্রতি সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নারী নির্যাতনের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ।

সংবাদ সম্মেলনে হয়রানি ও নির্যাতন রোধে সাত দফা দাবি তুলে ধরে জেন্ডার প্লাটফর্ম। দাবিগুলো হলো-

১. যৌন হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন’ প্রণয়ন করতে হবে।

২. কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন বিষয়ক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থন করতে হবে।

৩. যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালে দেয়া হাইকোর্টের নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে এবং সমাজে নারী শ্রমিকদের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।

৪. আদালতের নির্দেশনা যাতে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, সে জন্য সরকারি উদ্যোগে একটি তদারকি কমিটি গঠন করতে হবে।

৫. যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচার নিষ্পত্তি করা ও বৈষম্যমূলক আইন সংশোধন করতে হবে।

৬. বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ এর সংশোধনীতে মহিলাদের প্রতি আচরণ সংক্রান্ত নতুন বিধি ৩৬১ ক এবং সেই বিধি (২) এ বর্ণিত অভিযোগ কমিটি গঠন হাইকোর্টের প্রদানকৃত গাইডলাইনের ভিত্তিতে করতে হবে।

৭. নারীর প্রতি সহিংসতামুক্ত সংস্কৃতি চর্চা করতে হবে।

এম জি