জরুরিভিত্তিতে রিজার্ভ থেকে ডলার সহায়তা চায় এফবিসিসিআই
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-১২-১২ ২০:৩৮:৪০
আসন্ন পবিত্র রমজান মাস ও ঈদকে কেন্দ্র করে আমদানিতে বাণিজ্যিক ঋণপত্র (এলসি) খুলতে অগ্রাধিকার চেয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। বিশেষ করে এলসি খোলায় যাতে কোনও সমস্যায় পড়তে না হয় এজন্য জরুরিভিত্তিতে রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোকে ডলার সহায়তা চেয়েছেন তারা। একই সঙ্গে আমদানি-রফতানিতে ডলারের এক রেট দাবি করেন তারা।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সভা শেষে এসব দাবির কথা জানায় এফবিসিসিআই। এতে নেতৃত্ব দেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি উল্লেখ করেন, অনেক ব্যবসায়ী এলসি খুলতে পারছেন না। এক্ষেত্রে এলসি খোলা সহজ করতে জরুরিভিত্তিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার সহায়তা দিতে হবে।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ৮ পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এলসি সহজ করে সার্কুলার জারি করেছে। কিন্তু এই ৮ পণ্যের বাইরে আরও পণ্য আছে।
রফতানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ঋণ সুবিধা বাড়ানোর দাবি করে তিনি বলেন, ইডিএফ যেটা ১৮০ দিন মেয়াদ আছে, সেটা ২৭০ দিন করার কথা বলেছি। আমরা গ্যাস-জ্বালানি সমস্যায় আছি, কারখানা চালাতে পারছি না। কারখানা চালাতে না পারলে শ্রমিকের বেতন দিতে পারবো না। যেখানে আমি এলসির সমস্যায় পড়ে কাঁচামাল আমদানি করতে পারছি না, সেখানে ঋণ পরিশোধ কীভাবে করবো? এজন্যই তারা আগামী জুন মাস পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে ডলারের অভিন্ন দরের কথা জানিয়ে তিনি জানান, আমাদের আমদানিতে ডলারের দাম ১০৫ টাকা পড়ছে, যেখানে রফতানিতে ১০১ টাকা। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে ডলারের অভিন্ন দরের কথা বলেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের যৌক্তিক দাবির প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।
সুদহারের ক্যাপ তুলে নেওয়ার বিষয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, সুদহার কম হলে বিনিয়োগ বাড়ে। আমরা মনে করি, আগামী এক বছর সুদহারের ক্যাপ না তোলার দাবি জানাই।
তিনি বলেন, করোনাপরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন ব্যবসায়ীরা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এখন ডলার সংকট তৈরি হয়েছে। এলসি খুলতে পারছেন না অনেকে। ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে নতুন বিধিনিষেধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে ঋণের কিস্তি সময়মতো পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। এজন্য আগামী ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো কথা জানিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংকও বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে।
এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, করোনা ঊর্ধ্বমুখী সময়ের মতো নীতি সহায়তা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাশিয়া-ইউক্রেন সমস্যার কারণে এটা চেয়েছেন, নিয়মিত লোনের জন্য এটা। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থনীতির স্বার্থে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে বিষয়টি। এলসি খোলায় যাতে সমস্যা না হয় এজন্য ৮ পণ্যের বিষয়ে সার্কুলার হয়েছে, প্রয়োজনে বাড়ানো হবে।
তিনি বলেন, ডলার সরবরাহের কথা যেটা বলা হয়েছে, সেখানে আমাদের রেমিট্যান্স বেড়েছে। আগামীতে ঈদ আছে, রেমিট্যান্স সরবরাহ আরও বাড়াবে ব্যাংকগুলো। ব্যাংকগুলো নিজেরাই এলসি খুলছে এবং তারা সেটেলমেন্ট (নিষ্পত্তি) করছে। আমদানি-রফতানিতে ডলারের একদর করার কথা বলা হয়েছে। আমরা কিন্তু ধীরে ধীরে সেদিকেই যাচ্ছি। আর সুদহারের ক্যাপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
এএ