সব মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-১২-১৯ ১৮:১৭:৩৫


তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সব মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। ডিজিটালি মানহানির শিকার হওয়ার পর প্রতিকার পেতে অনেক সাংবাদিকও এ আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। এ আইনের কোনো অপপ্রয়োগ যাতে না হয়, তা নিয়ে সরকার সতর্ক।

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।

এরআগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় করেন তথ্যমন্ত্রী।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন মামলা হলেই সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা যায় না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে এখন জামিনযোগ্য করা হয়েছে। এটি নিয়ে যে প্রশ্ন ছিল, তার অনেকগুলোর নিরসন করা হয়েছে। যখনই কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কথা আমার কানে আসে, আমার যা করা দরকার, তা আমি করি।

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি নিহত হওয়ার ঘটনায় আটকে থাকা তদন্ত নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে কথা বলবেন জানিয়ে ড. হাছান বলেন, দরকার হলে আইনমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব।

তথ্যমন্ত্রী জানান, বিএনপি শুরু থেকে তাদের কার্যালয়ে পুলিশের তল্লাশি নিয়ে অতিরঞ্জিত করে বক্তব্য রাখছে। পুলিশ তল্লাশি করে সেখানে তাজা বোমা পেয়েছে। যে অফিসে তাজাবোমা পাওয়া যায়, সেখানে তন্নতন্ন করে তল্লাশি করা স্বাভাবিক।

‘সেখানে শুধু তাজাবোমা না, আরও অনেক কিছু পাওয়া গেছে। সেখানে ক্যাশ টাকা, লাঠিসোঁটা, ১০৭ বস্তা চাল, আড়াই লাখ পানির বোতল পাওয়া গেছে, যেগুলো স্বাভাবিক নয়। আমাদের অফিসে কি চাল, ডাল পাওয়া যাবে?’ যোগ করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করছে। আসলে পুলিশ তল্লাশির স্বার্থে তল্লাশি করছে। কিন্তু তারা (বিএনপি) যে অভিযোগগুলো করছে, সেগুলো সঠিক নয়। বিএনপিকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন বহুবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আমাদের অফিস তছনছ করেছে, তল্লাশি করেছে এবং অনেককে গ্রেফতার করেছে।’

বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলছে, এ বিষয়ে তার মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা কি রাষ্ট্রসংস্কারের নামে দেশকে জিয়াউর রহমানের মার্শাল ডেমোক্রেসিতে (সামরিক গণতন্ত্র) নিয়ে যেতে চায়, সেটি হচ্ছে আমার প্রশ্ন। আজ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, জাতিসংঘের মহাসচিব, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে পৃথিবীর সব নেতা বাংলাদেশের প্রশংসা করছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এই সংকটময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ যেভাবে উন্নয়ন অগ্রগতি করেছে, সেটা অন্য দেশের জন্য উদাহরণ। যাদের জন্ম আসলে অগণতান্ত্রিকভাবে, তারা যখন রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলে তখন মানুষ ভাবে বিএনপি আবার মার্শাল ডেমোক্রেসি ফিরিয়ে আনতে চায়।’

সম্প্রতি শাহীনবাগে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের যাওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। তারা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী। গত ৫০ বছর যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উন্নয়ন অগ্রগতিতে ভূমিকা রেখেছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে যে ঘটনা, সেটা হতো না, যদি তিনি ১৯৭৭ সালে যারা জিয়ার হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন, তাদের বক্তব্যটি শুনতেন এবং স্মারকলিপিটা নিতেন।’

তিনি বলেন, ‘সেখানে যারা তার (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলো, তারা তাকে হুটহাট করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। সেটা না করে তাদের দু’চারটি কথা শুনতে পারতেন। এবিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সেখানে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। সেখানে কিছু লোক দাঁড়িয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেছিলো।’

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন যদি এ সরকার না চান, তাহলে নির্বাচনে আসেন। তখন বোঝা যাবে জনগণ এই সরকারকে চায় না, তাদেরকে চায়। তারাতো জনগণের কাছে বহুবার আহ্বান জানিয়েছেন। ১০ ডিসেম্বর সরকার পতনের ডাক দিয়েছিলেন, সেদিন সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবেন, কিন্তু সেদিন তারা নিজেরা পদত্যাগ করে চলে গেছেন।’

এএ