ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও রুশ দূতাবাসের ‘টুইট যুদ্ধ’

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-১২-২২ ২২:০৮:৫০


ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ‘স্নায়ুযুদ্ধের’ আঁচ পৌঁছে গেল বাংলাদেশে। তৃতীয় দেশে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে ঢাকায় রুশ দূতাবাস থেকে বিবৃতি দিলে মস্কোকে পাল্টা কটাক্ষ করে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস। এবার যুক্তরাষ্ট্রকে খোঁচা দিয়ে পাল্টা জবাবে ব্যঙ্গচিত্র শেয়ার করেছে রুশ দূতাবাস। এই পাল্টাপাল্টি চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

রুশ দূতাবাস গত মঙ্গলবার তাদের ফেসবুক পেজে বাংলাদেশসহ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের বিষয়ে বিবৃতি দেয়। এর পরদিন ওই বিবৃতি নিয়ে পাল্টা টুইট করে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস। সেখানে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান নিয়ে মস্কোকে খোঁচা দেয় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। এরপর গতকাল বুধবার রাতে ঢাকায় রুশ দূতাবাস টুইটারে একটি ব্যঙ্গচিত্র শেয়ার করেছে।

ব্যঙ্গচিত্রে রাশিয়া তাদের ভাষায় বুঝিয়েছে, বর্তমানে পররাষ্ট্রনীতি এভাবে চলছে। ব্যঙ্গচিত্রে একটি কাঠের খুঁটিতে চার স্তরে বসে থাকা পাখির ছবির ডান পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের পতাকা। মূলত ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমা বলয়ের নেতৃত্বে যে যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে, সেটিই বোঝানো হয়েছে।

গত মঙ্গলবার রুশ দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অগ্রহণযোগ্যতা এবং তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা-সম্পর্কিত ১৯৬৫ সালের জাতিসংঘের ঘোষণা অনুসারে, কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যা-ই হোক না কেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করার অধিকার অন্য কোনো রাষ্ট্রের নেই। দুর্ভাগ্যবশত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে (বিশেষত, স্নায়ুযুদ্ধ শেষের পর থেকে) হস্তক্ষেপ না করার নীতি লঙ্ঘনের সমস্যাটি বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। কারণ, অনেকে বিশ্বাস করে যে তারা তাদের নিজেদের স্বার্থে ওই নীতি লঙ্ঘন করতে পারে।

দূতাবাস আরও বলে, যেসব দেশ নিজেদের বিশ্বের শাসক বলে মনে করে, তারা ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের’ অজুহাতে নিজেদের মত ও সিদ্ধান্ত বিভিন্ন দেশের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়। এর পরিণতিতে স্থিতিশীলতার পরিবর্তে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে নৈরাজ্যের পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।

এর পাল্টা জবাবে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস গতকাল বুধবার তাদের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডলে প্রশ্ন তুলেছে, ইউক্রেনের ক্ষেত্রে কি এই নীতি মানা হয়েছে?

এমন এক সময় দুই পরাশক্তি এই পাল্টাপাল্টি কথা বলা শুরু করেছে যখন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রকাশ্যে মত দিতে শুরু করেছে বাংলাদেশে বিদেশি মিশনগুলো। সরকার মিশনগুলোর এমন আচরণ নিয়ে কড়াভাবেই প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে।

এএ