আগামী বাজেট হবে ব্যবসাবান্ধব: নজিবুর

প্রকাশ: ২০১৬-০৪-০৯ ২১:৫৩:০৪


pre-budget-230x155ব্যবসার উন্নয়নে বিনিয়োগবান্ধব বাজেট করার লক্ষে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান।

আজ শনিবার চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সদস্য ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাবসায়ীদের সাথে প্রাক বাজেট আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

নজিবুর রহমান আরও বলেন, আসন্ন বাজেটে করের বোঝা না বাড়িয়ে আওতা বৃদ্ধি করাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ৬ষ্ঠ থেকে ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় উত্তরণ হিসেবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জনই হলো এ বাজেটের অন্যতম লক্ষ্য। আগামী ৫ বছর মধ্যম আয়ের ধারা অব্যাহত রাখা এবং পরবর্তী ২০ বছরে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে ভিশন-২০২১, ২০৪১ বাস্তবায়নকেই প্রাধান্য দিচ্ছে সরকার।

এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিনিয়োগবান্ধব ও সৎ ব্যবসায়ীদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ী বাজেট প্রণয়ন করা হবে বলে জানান রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান। তিনি জানান, এ অঞ্চলের ব্যবসায়ী সমাজের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি ৩ মাস অন্তর মতবিনিময় করতঃ একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ মিলেনিয়াম ডেভেলপম্যান্ট গোল (এমডিজি) প্রেক্ষাপট থেকে সাসটেইনেবল ডেভেলপম্যান্ট গোলের গ্রেক্ষাপটের দিকে যাবে। তাই আগামী ২৫ বছর খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ৫ বছরে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের মর্যাদায় সুসংহত হবে। বাকি ২০ বছরে সুখী-সমৃদ্ধ, শিক্ষিত ও ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হবে।

জাতীয় উন্নয়নে চট্টগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের কোনো সমস্যা হলে তা আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করবো। ব্যবসায়ীদের সুযোগ সুবিধা দিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বদ্ধ পরিকর।

সভায় সূচনা বক্তব্যে চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম ইতোমধ্যে চেম্বার কর্তৃক প্রেরিত শুল্ক সংক্রান্ত ১৪২টি, ভ্যাট ২১টি এবং আয়কর ৫৫টিসহ মোট ২১৮টি প্রস্তাবনার কথা উল্লেখ করেন।

তিনি ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২ লাখ ৭৫ হাজার করা, নারী ও ৬৫ বছরের উর্ধ্বে ৩ লাখ থেকে বৃদ্ধি করে সাড়ে ৩ লাখ করার প্রস্তাব দেন।

তার প্রস্তাবনায় আরও ছিল- পাবলিকলি ট্রেডেট কোম্পানির কর ২২.৫% এবং প্রাইভেট লিঃ এর ক্ষেত্রে ২৭.৫% নির্ধারণ, অনাকাঙ্ক্ষিত সারচার্জ প্রয়োগ না করা, ঘর ভাড়া ব্যাংকে জমা রাখার বিধান বাতিল করা, প্রস্তাবিত মূসক আইন পর্যালোচনায় সকল স্তরের ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করা, ইনভয়েস ভ্যালু অনুযায়ী এসেসমেন্ট করা, বিলেট আমদানিতে শুল্ক আরোপ করা। আলোচনায় চট্টগ্রামে বাস্তবায়নাধীন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানান তিনি।

সমাপনী বক্তব্যে চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. নুরুন নেওয়াজ সেলিম বিনিয়োগবান্ধব বাজেট প্রণয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি নতুন নতুন রাজস্ব খাত সৃষ্টির উপর গুরুত্বারোপ করেন।

সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ বলেন, বাজেটের জন্য জনগণ নয়, জনগণের জন্য বাজেট-এ নীতিতে বাজেট হওয়া উচিত।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মো. ফরিদ উদ্দিন ও ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, চেম্বার পরিচালকদ্বয় মাহফুজুল হক শাহ ও অঞ্জন শেখর দাশ, সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের এ. কে. এম. আক্তার হোসেন, শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশন’র আমজাদ হোসেন চৌধুরী, বিজিএমইএ পরিচালক কাজী মাহবুব উদ্দিন জুয়েলসহ আরও অনেকে।

এছাড়া এ সময় চেম্বার পরিচালকবৃন্দ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী, কামাল মোস্তফা চৌধুরী, মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), আলহাজ্ব মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মাহবুবুল হক চৌধুরী (বাবর), মো. আনোয়ার শওকত আফসার, সরওয়ার হাসান জামিল, মো. জাহেদুল হক, মো. আরিফ ইফতেখারসহ প্রাক্তন পরিচালকবৃন্দ, রাজস্ব বোর্ডের সদস্যবৃন্দ পারভেজ ইকবাল, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল’র মহাপরিচালক মো. বেলাল উদ্দিন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, চট্টগ্রামস্থ কর ও শুল্ক কমিশনারবর্গ এবং বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সানবিডি/ঢাকা/আহো