চট্টগ্রামে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ : আহত ৩০, আটক ২০

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-০১-১৬ ২১:১৬:০৩


বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বের করা মিছিলকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর কাজীর মোড়ে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। সংঘর্ষে ১০ পুলিশ সদস্য ও দ্বিগুণ সংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এতে বিএনপির কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির অন্তত ২০ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিএনপি কার্যালয় ও এর আশেপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে কাজীর দেউড়ি মোড়ে যখন বিএনপির সংঘর্ষ চলছিল তখন এর আধা কিলোমিটার অদূরে নেভাল মিউজিয়াম সড়কে লাঠিসোটা নিয়ে যানবাহনের ওপর চড়াও হন উচ্ছৃঙ্খল কিছু যুবক। এ সময় তারা লাঠিসোটার আঘাতে ও ইটপাটকেল ছুঁড়ে মেরে ৮ থেকে ১০টি প্রাইভেটকার ও সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করে।

কাজীর দেউড়ি মোড়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ চলছিল নসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে। এ সমাবেশে যোগ দিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে নুর আহম্মদ সড়কের দলীয় কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। মিছিলটি কাজীর দেউড়ি মোড়ে আসতেই সেখানে থাকা পুলিশের ওপর হামলা করে। উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ফুটপাতে থাকা ট্রাফিক পুলিশের একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় নেতাকর্মীরা। প্রথম দিকে পুলিশের সংখ্যা কম থাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় অন্তত দশ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

পরবর্তীতে ব্যাপক সংখ্যক ফোর্স এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। আধ ঘণ্টার জন্য পুরো এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল চারটার দিকে পুলিশ কাজীর দেউড়ির আশপাশে অভিযান শুরু করে। অভিযানে বিএনপির ২০ জন নেতাকর্মীকে আটক করে। শুধু তাই নয়; জেলা পুলিশের একটি গাড়ি রেডিসন ব্লু’র সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা সেখানেও হামলা করে। এতে এক পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কোনো উস্কানি ছাড়াই বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলা করা হয়েছে। গাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি আগুনও দিয়েছে। আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বাড়তি ফোর্স আনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। অভিযান চলমান রয়েছে। এখন পর্যন্ত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে।’

তবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ বাধা দিয়েছে বলে দাবি করেছেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা: শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ চলছিল। কাজীর দেউরী এলাকা থেকে যুবদলের একটি মিছিল সমাবেশে অংশ নেয়ার জন্য আসছিল। কিন্তু মিছিলে বাধা দিয়ে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং ফাঁকা গুলি টিয়ার শেল ছুড়তে থাকে। এতে আমাদের ২০ থেকে ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের অনেকের অবস্থা গুরুতর। আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার জন্য পুলিশ হামলা করেছে।

এএ