ক্যান্টন ফেয়ার : ওয়ালটন পণ্যের প্রতি বিদেশী ক্রেতাদের ব্যাপক আগ্রহ
আপডেট: ২০১৬-০৪-১৮ ২২:৩৪:২৪
চীনের গুয়াংজু শহরে চলছে বিশ্বের বৃহত্তম পণ্যমেলা- ক্যান্টন ফেয়ার। মেলায় ওয়ালটন গ্রুপের মেগা প্যাভিলিয়নে বিদেশী ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মেইড ইন বাংলাদেশ খ্যাত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্যের প্রতি তারা বিশেষ আগ্রহ দেখিয়েছেন। ওয়ালটন পণ্যের গুনগত উচ্চমান, আকর্ষণীয় ডিজাইন ও কালার এবং মূল্য সাশ্রয়ী হওয়ায় তারা পণ্য আমদানির ব্যাপারে আগহ দেখিয়েছেন।
১৫ এপ্রিল শুরু হয়েছে ক্যান্টন ফেয়ার। মেলার আন্তর্জাতিক জোনে আকর্ষণীয় ডিজাইনে স্থাপন করা হয়েছে ওয়ালটন মেগা প্যাভিলিয়ন। এছাড়া মেলার তিনটি গুরুত্বপূর্ণস্থানে রয়েছে ওয়ালটনের জায়ান্ট বিলবোর্ড। বড় পর্দায় প্রদর্শিত হচ্ছে ওয়ালটন পণ্য তৈরির উপর নির্মিত বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র এবং ওয়ালটনের বিজ্ঞাপন চিত্র।
শুক্রবার মেলার প্রথম দিন থেকেই ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে ছিলো ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়। এবারের মেলায় ২ শ‘ টিরও বেশি দেশ থেকে ৩ লক্ষাধিক বিদেশী ক্রেতা অংশ নিচ্ছে। সেইসঙ্গে চীনের ক্রেতারাতো আছেনই। তৃতীয় দিন রবিবারে বিদেশী ক্রেতাদের ভিড় ছিল বেশি।
বিশেষ লক্ষ্যনীয় হলো- এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার পাশাপাশি ওয়ালটন পণ্য নিয়ে এবার আমেরিকা, ইউরোপ এবং অষ্ট্রেলিয়ার ক্রেতাদের আগ্রহ দেখা গেছে। মেলায় ওয়ালটন নিয়ে এসেছে সর্বাধুনিক ইনভার্টার প্রযুক্তির ফ্রিজ। রপ্তানির জন্য তৈরি বিশেষ ডিজাইনের এই ফ্রিজগুলো দূর থেকে দেখেই ক্রেতাদের দৃষ্টি আটকে যাচ্ছে। পরে তারা কাছে গিয়ে ভালো করে দেখেছেন। এক্সিকিউটিভদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জেনে নিচ্ছেন। আগ্রহ দেখাচ্ছেন নিজ দেশে ওয়ালটন পণ্য আমদানির।
তেমনি একজন হলেন অস্ট্রেলিয়ার এএএ (এফএন) কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তেরান্নাভা। তিনি প্রথমেই জিজ্ঞেস করলেন, এটি কোন দেশের পণ্য? বাংলাদেশ শুনে ভেতরে এসে ভালো করে দেখলেন। বললেন, ওয়ালটন ফ্রিজের আউটলুক খুবই আকর্ষণীয়। কালার অভিজাত। বড় ফ্রিজগুলো চমতকার। সেইসঙ্গে ৪৬ লিটারের ছোট ফ্রিজটাও ভালো। আন্তর্জাতিক বাজারে এ ধরনের ফ্রিজের চাহিদা খুব বেশি।
মেলায় আসা আন্তর্জাতিক ক্রেতারা প্রধানত দেখছেন কার পণ্যের মান কত ভালো, সেটা কত কম দামে কেনা যাচ্ছে। এই বিষয়টিই আশা জাগাচ্ছে ওয়ালটনকে। কারন পণ্যের মাথাপিছু উৎপাদন মূল্যে অনেকটাই এগিয়ে আছে ওয়ালটন। মান নিয়েও ক্রেতারা সন্তুষ্ট। আর তাই ওয়ালটন টিভি, হোম এ্যাপ্লায়েন্সেস, সুইচ-সকেট, বাল্ব এসব নিয়েও তাদের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে।
স্লোভেনিয়ার লাকা ফ্লেন্ডার, কাজাখস্তানের রাহামানভিওভ, বলিভিয়ার এলিয়ান ডি লা ভেগা, কামেরুনের রাউল সোভেনা, তুরস্কের আয়াক্স, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ব্যবসায়ী এডি লাম সবাই অনেক সময় নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছেন ওয়ালটন ব্র্যান্ডের প্রায় প্রতিটি পণ্য। তাদের কথা, মূল্য আরেকটু কমাতে পারলে ওয়ালটন ব্র্যান্ড সব দেশেই চলবে।
এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের রিচার্ড ডগলার্স, সিঙ্গাপুরের ভেট ঘাট লি. এর ধোনগানা; মরিশাসের আরটিকে ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্যাট্রিক কো, কোরিয়ার মিরো কোম্পানির সিনিয়র প্রতিনিধি মিন কিম, সুরিনামের ব্যবসায়ী হ্যারি সাখারনি, কলম্বিয়ার এজেড ডি কোম্পানির নিকোলাস আরিয়াস, সৌদি আরবের হামাদ বো আলিও ওয়ালটন পণ্যের প্রতি তাদের আগ্রহ দেখিয়েছেন।
এছাড়া অসংখ্য বাংলাদেশী ব্যবসায়ী পরিদর্শন করেছেন ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন। ওয়ালটনের বিলবোর্ড দেখে তারা প্যাভিলিয়নে চলে এসেছেন। বিশ্বের বৃহত্তম এই মেলায় ওয়ালটনকে দেখে বাংলাদেশীরা উচ্ছ্বসিত। উল্লেখ্য, ক্যান্টন ফেয়ারে এবারই প্রথম কোনো বাংলাদেশী ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড অংশ নিয়েছে।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ক্যান্টন ফেয়ারে ওয়ালটনকে দেখে বিস্মিত হয়েছি। খুব ভালো লাগছে। প্রতিদিইন এখানে আসছি। তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের সবার অলক্ষ্যে ওয়ালটন যে এতো বড় হয়ে উঠেছে টের পাইনি। ঢাকা চেম্বারের আরেক সাবেক পরিচালক আবুল হোসেইন বলেন, এখানে বাংলাদেশী একটি ব্র্যান্ডের গৌরবময় উপস্থিতি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আশা করি ওয়ালটন একদিন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। আমরা চাই সব বাংলাদেশী ব্র্যান্ড পৃথিবীর সব প্রান্তে ছড়িয়ে পড়–ক।
১১৯তম আন্তর্জাতিক ক্যানটন ফেয়ার শেষ হচ্ছে ১৯ এপ্রিল। পাঁচ দিনের এই মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে ওয়ালটন কারখানায় তৈরি রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এলইডি টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, রিচার্জেবল ফ্যান, ইলেকট্রিক সুইস, সকেট, ইন্ডাকশন কুকার, ব্লেন্ডার, এসিড লেড রিচার্জেবল ব্যাটারি ইত্যাদি।