সোমবার ৪০ জনকে পদক দেবেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-০২-১২ ১৯:১৪:৩৪


র ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হবে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি)। আগারগাঁওয়ে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী কোস্ট গার্ডের নবনির্মিত স্টেশন লক্ষীপুরের দুটি ভবন ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন। পাশাপাশি কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা, নাবিক এবং অসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ কাজের জন্য কোস্ট গার্ড পদক, প্রেসিডেন্ট কোস্ট গার্ড পদক, কোস্ট গার্ড (সেবা) পদক ও প্রেসিডেন্ট কোস্ট গার্ড (সেবা) নামে চার ক্যাটাগরিতে পদক পরিয়ে দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী উপস্থিত থাকবেন।

কোস্ট গার্ড পদক (বিসিজিএম) পাবেন যারা

রিয়ার অ্যাডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী, ক্যাপ্টেন সাব্বির আহমেদ খান, ক্যাপ্টেন মো. সাহেদ সাত্তার, কমান্ডার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, লে. কমান্ডার মো. তারেক হাসান প্রীতম, লে. কমান্ডার মো. নাঈম, লে. এস এম তাহসিন রহমান, (এক্স), এম মোখলেছুর রহমান, মরণোত্তর পারভেজ আলম ও মরণোত্তর সালমান সরকার।

কোস্ট গার্ড প্রেসিডেন্ট পদক (পিসিজিএম) পাবেন যারা

কমান্ডার মোহাম্মদ মেসবাউল ইসলাম, কমান্ডার মো. জিয়াউল হক, লে. কমান্ডার মো. মামুনুর রহমান মুন, লে. মো. সাদিক হোসেন, লে. মো. নাজমুল ইসলাম, ফারুক আহম্মেদ, মো. হুমায়ুন খান, মো. আব্দুল হাকিম, শুভজিৎ দাস ও শাহাজুল ইসলাম।

কোস্ট গার্ড পদক-সেবা (বিসিজিএমএস) পাবেন যারা

কমোডর মো. এনামুল হক, ক্যাপ্টেন মো. শহীদুল্লাহ আল ফারুক, কমান্ডার মুহাম্মদ নাজমুল হক, কমান্ডার এস এম নূর-ই-আলম, কমান্ডার এম সেলিম আখতার, মো. ওসমান গণি, মো. আল মামুন, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. ইলিয়াস রেজা খান ও এম শমসের আলী।

কোস্ট গার্ড প্রেসিডেন্ট পদক-সেবা (পিসিজিএমএস) পাবেন যারা

কমান্ডার মো. আবু বকর, কমান্ডার রিয়াজ শহীদ, সার্জন লে. কমান্ডার মো. ইমরান জুয়েল, মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন, শাকিল আহমেদ, মো. রফিকুল আলম, এম নজরুল ইসলাম, মো. আবু এমরান সুজন, জিয়াউর রহমান ও মো. আব্দুর রহিম মোল্লা।

১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বর্তমানে দেশের বিশাল সমুদ্র ও উপকূলীয় অঞ্চলের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। দেশের সমুদ্রসীমা ও উপকূলীয় এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, জনগণের জানমাল রক্ষা, চোরাচালান, মাদক ও মানবপাচার দমনের পাশাপাশি নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ ও সহায়তা প্রদানের মধ্য দিয়ে কোস্ট গার্ড মানুষের মাঝে নিরাপত্তা ও আস্থার বিশ্বস্ত প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

এছাড়াও কোস্ট গার্ডের নিরলস প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম বন্দর ঝুঁকিপূর্ণ বন্দরের তালিকা থেকে বের হয়ে একটি নিরাপদ বন্দরে পরিণত হয়েছে। কোস্ট গার্ড প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার ২৮৯ কোটি টাকার বেশি মূল্যমানের অবৈধ মালামাল জব্দ করেছে।

চোরাচালান প্রতিরোধ অভিযানে কোস্ট গার্ড প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় ৯৭৯ কোটি ১৭ লাখ টাকার বিভিন্ন চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে।

মৎস্য সম্পদ রক্ষা-

১৭ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা মূল্যমানের বিভিন্ন অবৈধ জাল মৎস্য সম্পদ রক্ষায় জব্দ করা হয়েছে।

৩০ লাখ ৮৭ হাজার ১২২ কেজি জাটকা, ৩৫৯ কোটি ২১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৪৫ মিটার কারেন্ট জাল, ৯২ কোটি ১২ লাখ ৪১ হাজার ১৩৯ মিটার অন্যান্য জাল, ২০ লাখ ৬৮ হাজার ৯৪৬ পিস বেহুন্দী/মশারি জাল, ২৯৩ কোটি ৩১ লাখ ৭০ হাজার ২১৩ পিস চিংড়ি/ফাইসা পোনা জব্দ করা হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অভিযানে কোস্ট গার্ড নিয়মিতভাবে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে।

বনজ সম্পদ রক্ষা

কোস্ট গার্ড বনজ সম্পদ রক্ষায় ৪৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা মূল্যের প্রায় ৪ লাখ ৮৫ হাজার ২১৩ ঘনফুট কাঠ উদ্ধার করেছে।

পরিবেশ রক্ষা

৩ হাজার ৬০৮ কেজি হরিণের মাংস, ৩০৯টি হরিণের চামড়া, ১৩৯টি হরিণের মাথা, ৪২টি তক্ষক ও ৫ হাজার ২৮৯ জন চোরাকারবারীকে আটক করা হয়।

উদ্ধার অভিযান

২ হাজার ১৭৪ জন অপহৃত জেলে/মৌওয়ালকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। নৌ-পথে দুর্ঘটনায় কবলিত ১৯২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয় ও ৩৭২টি অপহৃত বা ভাসমান নৌকা উদ্ধার করা হয়।

কোস্ট গার্ডের দায়িত্বাধীন এলাকায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাসহ ছোট বড় অনেক বোট ও জলযান মিয়ানমার ফেরত/হস্তান্তর করা হয়েছে।

কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী জানান, বিভিন্ন আধুনিক জাহাজ, ঘাঁটি ও জলযান সংযোজনের মাধ্যমে বর্তমানে কোস্ট গার্ড বাহিনীর সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সময়ের পরিক্রমা ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার নিপুণ বাস্তবায়নের মাধ্যমে কোস্ট গার্ডকে অধিকতর কার্যকর, শক্তিশালী ও সুদক্ষ বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে বাহিনীর প্রতিটি সদস্য উজ্জীবিত ও বদ্ধপরিকর।

আই এইচ