শিক্ষক হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে কফিন মিছিল ও অবস্থান ধর্মঘট
প্রকাশ: ২০১৬-০৫-০২ ১৭:৫১:০৮
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সোমবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করে।
এর আগে সাধারণ শিক্ষার্থীরা শিক্ষক হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে মুকুল সংহতি ও প্রতিবাদ মঞ্চ থেকে একটি প্রতীকী কফিন মিছিল বের হয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সিনেট ভবনে সামনে শিক্ষক সমিতির অবস্থান ধর্মঘটে অংশ নেয়। এছাড়া ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ। বিভাগসমূহ মিছিল নিয়ে সিনেট ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতির অবস্থান ধর্মঘটে মিলিত হয়।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ্ আজমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সেলিনা পারভীন, সমাজকর্ম বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. ছাদেকুল আরেফিন, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. তোফাজ্জল হোসন, ভূতত্ত্ব ও খণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক খোন্দকার ইমামুল হক, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নীলুফার সুলতানা, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান, সমাজকর্ম বিভাগের সাবেক অধ্যাপক জালাল উদ্দিন।
অবস্থান ধর্মঘটে বক্তারা বলেন, ‘অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যার পূর্বে অনেককেই হত্যা করা হয়েছে। আর কতো মৃত্যু হলে আমরা জাগবো, সুশীল সমাজ জাগবে? প্রতিনিয়ত আমাকে ভাবতে হচ্ছে, আমাকে মেরো না, আমি সেতার বাজাই না, আমি মুক্ত চিন্তা করি না, আমি নাস্তিক না। আমি কি স্বাধীন? অধ্যাপক রেজাউল করিম কি স্বাধীন ছিলেন? আমি স্বাধীন নই; আমার কথা বলার অধিকার নেই; আমরা সবাই চূড়ান্ত নৈরাজ্যের মধ্যে বাস করছি। প্রতিনিয়ত ভাবছি আজ কার পালা, কাল কার পালা! আমরা এসব হত্যাকাণ্ডের শেষ চাই।’
বক্তারা আরো বলেন, ‘যখনই মুক্তির কথা বলা হয় তখনই হত্যার সম্মুখীন হতে হয়। একজন পুলিশ যখন মারা যায়, তখন তাকে দেখতে হাসপাতাল, পরিবারের কাছে ছুটে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু রাবির একজন অধ্যাপকে হত্যা করা হলো কেউ তাকে দেখতে আসেনি, সহানুভূতি জানাতে আসেনি। তার অপরাধ তিনি মুক্তমনা, তিনি সেতার বাজাতেন? অধ্যাপক রেজাউল করিমের হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে আপনারাও রেহাই পাবেন না। আজ রাবি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, কে হত্যা করেছে, কারা হত্যা করেছে, সে যারাই হোক আমাদের একটাই দাবি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রাবিতে আজ সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত রাবি শিক্ষক সমিতির কর্মবিরতি ছিলো। আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল ১১টায় এক মাহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে যেখানে অংশগ্রহণ করবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ ও রাজশাহীর সকল আসনের সাংসদরা উপস্থিত থাকবেন।
সানবিডি/ঢাকা/হৃদয়/আহো