মোটরসাইকেল চালানোর যে ভুল ধারণাগুলো বাদ দেওয়া জরুরী
প্রকাশ: ২০১৬-০৫-০৪ ১০:৪৫:৩১
প্রচুর মানুষ এখন মোটরসাইকেল চালিয়ে কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। রাস্তাঘাটে অন্যান্য পরিবহনের পাশাপাশি তাই মোটরসাইকেলও থাকে অনেকগুলো। এতে যেমন অনায়াসে যাতায়াত করা যায়, তেমনি গণপরিবহনের ওপরে নির্ভরতাও কমিয়ে আনা যায়। তবে মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকতে হয় বই কী। নয়তো মারাত্মক দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন আরোহী। মোটরসাইকেল চালানোর নিরাপত্তার ব্যপারে কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। মে মাসকে মোটরসাইকেল সেফটি অ্যাওয়ারনেস মান্থ হিসেবে বিবেচনা করে তেমনি কিছু ভুল ধারণা আপনাদের জানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে আজ।
১) লেদার জ্যাকেট শুধু ফ্যাশন নয়
লেদারের জ্যাকেট মূলত বাইকাররা পরেন, কিন্তু তারমানে এই নয় যে এটা শুধু ফ্যাশন করে পরেন তারা। এটা মূলত লেদারের শক্তপোক্ত স্বভাবের কারণে বেছে নেন তারা। কোনো দুর্ঘটনায় রাস্তার সাথে ঘষা খেলেও লেদার সহজে ছেঁড়ে না, ফলে আরোহী কিছুটা হলেও আহত হবার হাত থেকে রেহাই পান। বড় দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে এটা কার্যকরী না হলেও ছোটখাটো আঘাত থেকে আরোহীকে বাঁচাতে পারে ভালো মানের একটি লেদার জ্যাকেট। আর শীতকালে বাইকারকে ঠাণ্ডার হাত থেকেও তা রক্ষা করে। কিছু কিছু লেদার জ্যাকেটে বাইকারকে নিরাপদে রাখার জন্য কাঁধ, কনুই এবং পিঠে প্যাডিং করা থাকে। অনেকে জ্যাকেট না পরলেও লেদার গ্লাভস, ভেস্ট এবং বুট পরে থাকেন আত্মরক্ষার জন্যই।
২) পুরো মুখ ঢাকা হেলমেট ব্যবহার করুন
অনেকেই ভাবেন পুরো মুখ ঢাকা হেলমেট ব্যবহার করলে দেখতে সমস্যা হবে। কিন্তু অবশ্যই তা হয় না। দেখার জন্য যথেষ্ট সুবিধা রেখেই এসব হেলমেট তৈরি করা হয়। পুরো মাথাসহ মুখ ঢাকা থাকে বলে বাতাস, ধুলো, পোকা থেকে রক্ষা পায় আপনার চোখমুখ, আর দুর্ঘটনার সময়ে যে মাথাকে নিরাপদ রাখে তা তো বলাই বাহুল্য।
৩) প্রথম প্রথম বড় বাইক ব্যবহার করা কি ঠিক?
অনেকেই বলেন শুরুতেই বড় বাইক নিয়ে প্র্যাকটিস করা ভালো। কিন্তু এটা মোটেই ভালো আইডিয়া নয়। শুরুতেই অতিরিক্ত কনফিডেন্স নিয়ে বড় একটা বাইক নিয়ে চলাটা বোকামি। এগুলো ভীষণ ভারি হয়, ফলে টার্ন এবং পার্কিং করতে গেলে এগুলো সামলানো কষ্ট হয়। আর চালানোর সময়েও এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন দক্ষ চালকেরাই। শুরুতেই বড় বাইক ব্যবহার না করে মাঝারি ধরণের বাইক বেছে নিন।
৪) অতিরিক্ত শব্দ হলেই কী ভালো?
এসব বাইকে ভীষণ শব্দ করে বলে আশেপাশের অন্যান্য যানবাহনের চালকেরা এর ব্যাপারে সতর্ক থাকেন, এতে দুর্ঘটনা হয় না- এই ধারণা যদি আপনারও থাকে তাহলে তা ঝেড়ে ফেলুন। কারণ সামনের চালকেরা এটা শুনতে পাবেন এমন আশা করা যায় না। বরং এমনভাবে বাইক চালান যাতে আশেপাশের চালকেরা সহজেই আপনাকে দেখতে পায়। ডিভাইডারের কাছাকাছি থাকুন। রাতের বেলায় রিফ্লেক্টিভ কাপড় পড়ুন। অন্যান্য যানবাহনের বেশি কাছে চলে যাবেন না।
৫) ক্র্যাশ হলে কী করবেন?
অনেকেই উপদেশ দেন, ক্র্যাশ হতে যাচ্ছে বুঝলে মোটরবাইক শুইয়ে দিতে হবে কাত করে। আসলেই কি তাই? অ্যাকশন মুভিতে এটা করা হয় তারমানে এই নয় যে বাস্তবেও আপনি তাই করবেন। এ সময়ে আসলে ব্রেক করা এবং যার সাথে ক্র্যাশ করতে যাচ্ছেন তার থেকে দূরে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া ছাড়া অন্য কোনও কিছু চিন্তা করার দরকার নেই, সম্ভবও না। আর অবশ্যই ক্র্যাশ এড়াতে সর্বক্ষণ সাবধানে বাইক চালাতে হবে।
এছাড়াও মেনে চলুন আরও কিছু সাবধানতা-
– সজ্ঞানে বাইক চালান। ঘুম, ওষুধ বা মাদকের প্রভাব নিয়ে কোনো অবস্থাতেই বাইক চালাবেন না। এতে আপনি এবং আশেপাশের সব যানবাহনের মানুষের প্রাণের ঝুঁকি থাকে।
– হঠাৎ বাইক থামাতে হলে কখনোই ফ্রন্ট ব্রেক আগে কষবেন না। প্রথমে রিয়ার ব্রেক ব্যবহার করুন সব অবস্থাতে।
– বালু এবং পাথরকুচির ওপর দিয়ে চালানোর সময় খুব সাবধান থাকুন।
– সম্ভব হলে খারাপ আবহাওয়ায় বাইক চালানো থেকে বিরত থাকুন।
– অ্যান্টিলক ব্রেক ব্যবহার করুন যদি সম্ভব হয়।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস