পশ্চিমবঙ্গে ভোটগ্রহণ চলছে

প্রকাশ: ২০১৬-০৫-০৫ ১৬:০১:২৩


polls-in-west-bengal20160505072548বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোটগ্রহণ চলছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি কোচবিহার জেলা ছাড়াও পূর্বমেদেনীপুরের ২৫ আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।

এর আগে ৫ দফায় মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে ২৬৯ আসনে ভোটগ্রহণ শেষ করে নির্বাচন কমিশন। ২৯৪ আসনের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সব আসনে ভোট পর্ব শেষ হবে বৃহস্পতিবার। ছয় পর্বের এই ভোট উৎসবে বিরোধী এবং ক্ষমতাসীন দল থেকে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

তবে পূর্বমেদেনীপুর জেলার অধিকাংশ আসনে বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। এ জেলায় মোট আসন রয়েছে ১৬ টি। সকালে মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার পথে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুবীর সরকার সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয়েছেন। এছাড়া মুর্শিদাবাদে ভোট পরবর্তী সহিংসতায় স্থানীয় একজন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

এদিকে, সহিংসতার আশঙ্কায় নির্বাচন কমিশন পূর্বমেদেনীপুর ও কোচবিহারে বাড়তি সর্তকর্তা জারি করেছে।

নির্বাচন কমিশনের কাছে সকাল দশটা পর্যন্ত ৫৮০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর অধিকাংশই তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদেনীপুর থেকে করা হয়েছে। ওই জেলার হলবিবাড়ি, পাশকুঁড়া, নগর লালবাজার, হলদিয়ায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার চেষ্টা এবং হুমকি দেওয়ার  অভিযোগ করেছেন বিরোধী বাম-কংগ্রেস জোটের নেতারা। কোচবিহারের দিনহাটা, নাটাবাড়ি ও শীতলকুঁচিতে একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নির্বাচন কমিশনের সামনে আজকের এই ভোট দুটি দিক থেকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। প্রথমত, ভারতের মাটিতে বিলুপ্ত বাংলাদেশি ৯ হাজার ৭৭৬ জন সদ্য ভারতীয় ছিটমহলবাসীর সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করা। দ্বিতীয়ত, পূর্বমেদেনীপুরের নন্দিগ্রামে যেখানে ভূমি অধিকার রক্ষার আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, সেখানে আড়াই লাখ ভোটারের নির্বিঘ্ন ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করা।

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে ৫৮ লাখ ৪ হাজার ১৯ জন ভোটার ১৮ নারীসহ মোট ১৭০ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। এর মধ্যে তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, বিদায়ী মন্ত্রী ও প্রখ্যাত চিকিৎসক সুদর্শণ ঘোষদস্তিদার, নির্বেদ রায়, অখিল গিড়ি, অর্ঘ রায় প্রধান, বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, হিতেন বর্মন, উদয়ন গুহ, রবীন্দ্র নাথ ঘোষ এবং বামফ্রন্টের অক্ষয় ঠাকুর, পরেশ অধিকারী, তাপস সিনহা।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, কোচবিহার জেলার ৫১টি বিলুপ্ত হওয়া বাংলাদেশি ছিটমহলে ১৪ হাজার ৮৬৪ জন বাসিন্দার মধ্যে ১৮ বছরের বেশি বয়সের ৯ হাজার ৭৭৬ জন প্রথমবারের মত ভারতীয় হিসেবে ভোট দেবেন। এজন্য প্রত্যেকেই সচিত্র ভোটার কার্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১ ছিটমহল থেকে ভারতের মূল ভূখন্ডের অন্তর্ভূক্ত হওয়া ৯২২ বাসিন্দার মধ্যে ৫৭৪ জন ভোট দিতে পারবেন।

গত ৪ এপ্রিল থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। তৃতীয় দফার ভোটে মুর্শিদাবাদের ডোকমলে সিপিএমের একজন অ্যাজেন্ট বোমার আঘাতে মারা যায়। ওই ঘটনা ছাড়া দীর্ঘ এই ভোটপর্ব শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে। আগামী ১৯ মে ভোটের ফল প্রকাশ করা হবে।

যদিও ফলাফল প্রকাশের আগেই রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিধানসভায় সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন। বিরোধী বাম-কংগ্রেস জোটের বিদায়ী বিরোধী দল নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রও দাবি করেছেন, দুই শতাধিকেরও বেশি আসনে জয়ী হবেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গে সরকার গঠন করতে গেলে ১৪৮ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন।

সানবিডি/ঢাকা/আহো