ছুটিতেও ক্যাম্পাসে মিছিল; আতঙ্কে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ২০১৬-০৫-০৫ ১৬:২৪:৫৬


রাবিরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধ্যাপক ড. এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডের ১৩তম দিন বৃহস্পতিবার। কিন্তু প্রিয় শিক্ষকের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের এখনও ভুলতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আতঙ্কে দিন কাটছে রাবি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের।

এদিকে অধ্যাপক রেজাউল হত্যার প্রতিবাদে ও দ্রুত বিচারের দাবিতে ১৩ তম দিনেও আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় মৌন মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুকুল মঞ্চে গিয়ে শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। এসময় বক্তারা বলেন, ছুটির মধ্যেও তাদের আন্দোলনের কারণ একটাই, অধ্যাপক রেজাউলের খুনীদের চিহ্নিত করে এমন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। যা দেখে খুনিরা আর হত্যাকাণ্ড ঘটানোর সাহস না পায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যার ঘটনার ১৩ দিন পেরোলেও মামলার তদন্তের দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি তারা দেখতে পাচ্ছে না। পুলিশ শুধু বলছে ‘তদন্ত চলছে’। কিন্তু এখন পর্যন্ত হত্যার মোটিভ উদ্ধার ও এর সাথে জড়িত প্রকৃত খুুনিদের আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। হত্যাকারীরা আটক না হওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, আমরা এখনও আতঙ্কের মধ্যে আছি। আমাদের মধ্যে এরকম আতঙ্ক ছড়ানোর জন্যই একের পর এক শিক্ষক হত্যা চলছে। তবে আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি আমাদের শিক্ষক শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। আমরা আর কোনো শিক্ষকের লাশ দেখতে চাইনা। ড. অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৭তারিখ গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হবে। এখনই ক্যাম্পাস অনেকটা ফাঁকা। ভয়ে কেউ একা বাইরে বের হতে সাহস পাচ্ছে না। আর বের হওয়ার সময় তারা কাউকে না কাউকে সাথে নিচ্ছেন। আর সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাস মানুষ শূণ্য হয়ে যাচ্ছে।

নিহত অধ্যাপক রেজাউলের সহকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এখনো আতঙ্কে আছেন। খুব সাবধানে চলাচল করছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মজিবুল হক আজাদ খান বলেন, ক্যাম্পাস ছুটি থাকার পরও নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশাসন নজর দিচ্ছে। কারণ ছুটির মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষর্থী বাড়িতে চলে যাচ্ছে। আমরা যারা এখন ক্যাম্পাসে আছি তারা সকলেই এক ধরনের আতঙ্কের মধ্যে আছি। তবে কাউকে খুব বেশি আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য তিনি বলেন।

গত ২৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে সাতটার দিকে নগরীর শালবাগান এলাকায় নিজ বাসার সামনে থেকে ৫০ গজ দূরে রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার দিন বিকেলে নিহত শিক্ষকের ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে মামলা দায়ের করেন।

সানবিডি/ঢাকা/হৃদয়/আহো