সপ্তাহ ব্যবধানে সূচক, লেনদেন, বাজার মূলধন ও পিই রেশিও সবই বেড়েছে

প্রকাশ: ২০১৬-০৫-০৭ ২২:৫২:১৪


DSE-CSE-Logo-594x400বেশ কয়েক সপ্তাহ দরপতনের পর অবশেষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। গেল সপ্তাহে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে সব ধরণের মূল্য সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেন হওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটের দর। একই সঙ্গে বেড়েছে বাজার মূলধনের ও পিই রেশিও। তবে দুই বাজারেই কমেছে টাকার অংকে লেনদেনের পরিমাণ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগের (সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার লিমিট) সমন্বয়ের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে সময় না বাড়িয়ে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মূলধন বাড়ানোর মাধ্যমে সমন্বয়ের যে নীতি বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রহণ করেছে তা বাজারের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি ফলপ্রসূ হবে। ফলে বাজারে সেল প্রেসার থাকবে না। আর সেল প্রেসার কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন উদ্যোগ বর্তমান বাজারের জন্য ইতিবাচক। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক্সপোজার নিয়ে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিলো তা কেটে গেছে। ফলে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পহেলা মে (রবিবার) সরকারি ছুটির কারণে গেল সপ্তাহে চার কার্যদিবস দেনদেন হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। ফলে গেল সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রথম কার্যদিবস সোমবার লেনদেন শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৮৫ কোটি ২৯ লাখ ৩০ হাজার ১৬৪ টাকায় এবং শেষ কার্যদিবসে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৫ হাজার ৫৭৮ কোটি ৬৪ লাখ ৭৮ হাজার ৩৪ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ৫৯৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বা ১ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

গত সপ্তাহে চার দিনে টাকার অংকে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭৪৫ কোটি ৯১ লাখ ৮২ হাজার ২২৯ টাকা। যা এর আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বা ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে পাঁচ দিনে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭৫৭ কোটি ৩৪ লাখ ৮১ হাজার ৪৯৪ টাকা।

তবে গত সপ্তাহে ডিএসইতে বেড়েছে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ। প্রতিদিন গড়ে টার্নওভার দাঁড়িয়ে হয়েছে ৪৩৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। যা তার আগের সপ্তাহে ছিল ৩৫৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে গড়ে টার্নওভার বেড়েছে ৮০ কোটি ২৫ লাখ টাকা বা ২২ দশমিক ৫৩ শাতংশ বেশি। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১১১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ, ডিএস৩০ সূচক বেড়েছে ৫২ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৩১ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ১২ শতাংশ। গেল সপ্তাহে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩২৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২০১টির, কমেছে ১০০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির আর লেনদেন হয়নি ৩টি কোম্পানির শেয়ার।

সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারের সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে ১৪ দশমিক ১৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। গত সপ্তাহে দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ, সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স বেড়েছে ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং শরীয়াহ সিএসআই সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। সপ্তাহে সিএসইতে গড়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২৬৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬১টির, কমেছে ৭৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির। টাকার অংকে লেনদেন হয়েছে ৯৭ কোটি ৮৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।

উল্লেখ্য, এক্সপোজার বিষয়ে গত সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, শেয়ারবাজারে বাড়তি বিনিয়োগ সমন্বয়ের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংককে কোনো শেয়ার বিক্রি করতে হবে না। শেয়ারবাজারে বর্তমানে নির্ধারিত সীমার চেয়ে সামান্য বেশি বিনিয়োগ রয়েছে ১০টি ব্যাংকের। তা আইনি সীমায় নামিয়ে আনতে তাদের জন্য কেস টু কেস ভিত্তিতে সমাধান দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।