প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী জনগণের সেবক, প্রভু নয়: রাষ্ট্রপতি

সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-০৫-০৩ ১৮:৪০:১৪


দায়িত্ব পালনের প্রতিটি স্তরে নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

বুধবার (৩ মে) বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে রাষ্ট্রপতি এই নির্দেশনা দেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে এই প্রথম শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে দেয়া দিকনির্দেশনা মূলক ভাষণে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকারের আইন, বিধি-বিধান ও জনস্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী জনগণের সেবক, প্রভু নয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জনগণ যাতে সহজেই তাদের প্রত্যাশিত সেবা পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি বলেন, দায়িত্ব পালনের প্রতিটি স্তরে নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। বঙ্গভবনের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখার পাশাপাশি কীভাবে আরও বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে ভাবতে হবে।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আশা করেন বঙ্গভবনের প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নিজ দায়িত্ব নিষ্ঠা, সততা ও আন্তরিকতার সাথে পালন করবেন এবং বঙ্গভবনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সচেষ্ট থাকবেন।

তিনি বলেন, তাই আপনাদের (বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারী) প্রতিটি কর্মকাণ্ড এমন হতে হবে যাতে জনগণ আপনাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারে।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সততা ও ন্যায়ভিত্তিক, জ্ঞাননির্ভর ও আলোকিত জনপ্রশাসনের কোনো বিকল্প নেই। আপনারা সরকারের আইন, বিধি-বিধান ও জনস্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হবেন। মনে রাখবেন সব আইন প্রণীত হয় জনগণের কল্যাণের জন্য।

বঙ্গভবনকে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর সাথে মিশে রয়েছে বঙ্গভবনে কর্মরত প্রতিটি কর্মচারীর মেধা, শ্রম ও আন্তরিকতা।

বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হলেও একজন নাগরিক হিসেবে সরকারি কাজের পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে সার্বক্ষণিক প্রয়াস চালাবেন বলে রাষ্ট্রপতি প্রত্যাশা করেন।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাস্তবায়নের পথে।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হয়েছে।

দেশের চলমান উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে প্রত্যেককে নিয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সক্রিয় ভূমিকা রাখারও তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, জনগণ যাতে তাদের প্রত্যাশিত সেবা সহজে ও নির্বিঘ্নে পেতে পারে সেদিকে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে খেয়াল রাখতে হবে।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, মনে রাখতে হবে আপনার জনগণের সেবক, প্রভু নন ।

১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গভবনের ইতিহাস শুধুই যে অহংকার আর গর্বের তাই নয়, খুনি চক্র এই বঙ্গভবনে বসেই বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করেছে।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, কিছু দেশদ্রোহী তাদেরকেও সহায়তা করেছে। ইতিহাস তাদের ক্ষমা করেনি। তারা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, ঘাতকচক্র ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তারা বাংলার মাটি ও মানুষের কাছ থেকে তার নীতি ও আদর্শ মুছে ফেলবে কিন্তু তারা তা পারেনি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু আজ শুধু বাংলাদেশি নয় সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের প্রেরণার উৎস।

রাষ্ট্রপতি বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ই আগস্ট কাল রাতে শাহাদাত বরণকারী বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় চার নেতা ও জাতির ক্লান্তিলগ্নে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

মো. সাহাবুদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সকল সংসদ সদস্য যাদের ভোটে তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

তিনি বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

এএ