শ্যামল কান্তি যদি জামাত-বিএনপি করতেন..?
প্রকাশ: ২০১৬-০৫-১৯ ১৩:৫৮:৩০
এটা কোন যুক্তি নয়, তর্ক নয়। কেমন এক ধরনের হিংসুটে মনোভাব। কেমন একধরনের পৈশাচিক অনুভুতি।
আজ যারা বিনা বিচারে শাস্তির পক্ষ নিচ্ছেন তারা অনেকেই কেবল এ কারনেই নিয়েছেন যে যে লোকটাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে সেই লোকটি ”হিন্দু”। আপনারা ন্যায় অন্যায়ের উর্ধ্বে উঠে বিষয়টাকে হিন্দু মুসলমানের অভ্যন্তরীন সমস্যার মধ্যে বেধে ফেলেছেন। একই কাজ যদি কোন মুসলমানের সাথে করা হতো আপনারা শাস্তিদাতার পক্ষে যেতেন বলে মনে হয়না। আবার আজ যারা সেই শিক্ষকের পক্ষ নিয়েছেন তারাও অনেকে এ কারনেই নিয়েছেন যে লোকটি “হিন্দু” বলে। একইভাবে শাস্তিটি যদি কোন “শিবিরের” ছেলে বা বিএনপি বা জামাতপন্থি শিক্ষককে দেয়া হতো হয়তো আপনারা তা নিয়ে হাসি তামাশা করে শেযার করতেন। আপনারা তখন হয়তো শাস্তিদাতাকে বাহবা দিতেন।
আমি আবারো বলছি- আমার প্রতিবাদ বিচারহীনতার বিরুদ্ধে। কোন মানুষকে বিচারের মুখোমুখি না করে যখন তখন ধরে অত্যাচার করা আমার চোখে অপরাধ। মস্ত অপরাধ। আর এ অপরাধ মেনে নিলে শাস্তিদাতাকে অনিয়ন্ত্রিত অধিকার দেয়া হয় যার মাধ্যমে সে মানুষ থেকে দানবেও পরিনত হতে পারে।
শিক্ষক যদি সত্যিই ধর্ম অবমাননা করে থাকেন তার ”সামাজিক” বিচারে আমার আপত্তি হতোনা যদি এই নিয়ে কোন আইন না থাকতো। যতদূর জানি কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতে সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের কারাদন্ড। আর এই অপরাধের জন্য একজন শিক্ষককে কেন একজন এমপি জনসমক্ষে তার শিক্ষার্থীদের সামনে কান ধরে ইঠবস করাবে? কান ধরে উঠবস করানো তো এ অপরাধের শাস্তি নয়, আর এ ধরনের অপরাধের বিচারক হিসাবে তো আদালত এমপিদের নির্ধারন করে দেননি। বলা হয় জনরোষ থেকে বাঁচাতে তাকে এটা করা হয়েছে। জনরোষ থেকে বাঁচাতে কেন তাকে এটা করতে হবে? সেখানে তাহলে পুলিশ ছিলো কি করতে?
কয়েকটা বিষয় খুব পরিষ্কার হলো-
মানুষ তার মনের মধ্যে একজন কল্পিত শত্রু নিয়ে বাস করে। সেই শত্রুকে যে আঘাত করবে তার অতীতের , সব অপরাধও ক্ষমা করে দেয় তারা। আর কখনো কখনো এই শত্রুটিযে কে এটা বোঝা কঠিন হয়ে যায়। বাংলাদেশে এটা আরো জটিল। আমি নিজে দেখেছি অনেক গৃহবধূ শাশুড়ী বা স্বামীকে শিক্ষা দিতে সন্তানকে বেদম প্রহার করে। বা অনেক স্বামী তাদের মায়ের সাথে রাগ করে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে মারে। সেই স্ত্রীকে যখন জিজ্ঞেস করেছি কেন মেরেছে, তারা কখনোই তাদের স্বামীকে দোষ দেয়নি। আরা সবসময় দোষ দিয়েছে তাদের শাশুড়ীদের। আর এত মাইর খেয়েও যে একবার কারো কাছে বলতে পেরেছে যে শাশুড়ী সকল অন্যায়ের মূর এটাই যেনো তাদের কাছে বিজয়। অন্তত আমার কাছে তাই মনে হতো। বাংলাদেশ অনেক বিচিত্র একটা জায়গা। এখানে কে কাকে কেন কোন অপরাধে শাস্তি দিবে সব সময় সেটা অঙ্কে বা শাস্ত্রে নাও মিলতে পারে।
ধর্ম এই মুহুর্তে বাংলাদেশে এখন একটা বড় ইস্যু। সব মানুষ ধর্ম মানেনা, তবে ধর্মের নাম ব্যবহারে সবাই সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে চায়। মুসলমান হিসাবে নিজের যত অপরাধ, অন্যায এবং পাপ কাজের ক্ষতিআন সবকিছু যেনো একবারেই মোছা যাবে কোন একটা ঘটনায় ঈমানের পরীক্ষাটা দিয়ে দিতে পারলে। এই মুহুর্তে এটা পড়েছে একজন “হিন্দু” শিক্ষককে ঘৃনা করার উপরে।
বলা হয় বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। যে চিত্র গত কয়েক ঘন্টায় দেখেছি তাতে তা মনে হয়নি। মনে হয়েছে বিষয়টা এক তরফা। কিছু মনে করবেন না। বিষয়টা এ কারনেই দেখতে পেরেছি যে আমিও আমেরিকায় অন্য ধর্মের সংখ্যা গরিষ্টদের মধ্যে থাকি যেখানে আমার ধর্মের লোকেরা সীমিত। আর আজ কাল ডোনাল্ট ট্রাম্পদের কথায় বেশ ভয় পাই। এই কয়েকঘন্টায় মনে হয়েছে বাংলাদেশে ঘরে ঘরে ডোনাল্ট ট্রাম্প এখন।
শিক্ষক অপরাধ করতে পারেন না বা করেন নি এটা আমি কখনো বলিনি এবং বলতে পারবোনা। শিক্ষক যে অপরাধ করেছেনই এটাও আমি হলফ করে বলতে পারবোনা। কারন উভয় পক্ষে ভিডিও করা মতামত আছে। কিন্তু সেই অপরাধের জন্য আচড়ন বিধিতে শারিরিক মারপিট এবং কান ধরে উঠবস করার শাস্তি কোথাও লিপিবদ্ধ করা নেই।
শিক্ষক যদি অভিযোগকৃত সেই শব্দগুলো ব্যবহার করেও থাকেন, তাহলে সেটা ইসলাম ধর্মের জন্য কোন অপমানও নয়, এবং ধর্মের কোন ক্ষতিও এতে হয়নি। ইসলাম এত ঠুনেকো নয়। তবে মুসলমানদের মনে আঘাত হানবে এতে কোন সন্দেহ নেই। আমার নিজেরও কষ্ট হবে। তবে শিক্ষক ইসলাম ধর্মের নন। তিনি মুসলমানদের সাথে একই সৃষ্টি কর্তায় বিশ্বাসী নন। তাই মুসলমানদের কাছে মুর্তি বা দেবদেবী যেমন মূল্যহীন, একজন হিন্দু শিক্ষকের কাছে মুসলমানদের সৃষ্টিকর্তা হয়তো তেমন মূল্যহীন যতক্ষন না তার বিশ্বাসে পরিবর্তন আসে। বিষয়টা বিশ্বাসের। তবে শিক্ষক হিসাবে তিনি কোনভাবেই তার শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কথা বলতে পারেন না। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশে এ বিষয়ে তেমন কোন গাইডলাইন আছে বলে আমার জানা নেই। আমার ছোটবেলায় আমি দেখেছি শিক্ষকরা কিভাবে ছাত্র ছাত্রীদের অপমান করেন। তাদের পারিবারিক অবস্থান এবং পেশা নিয়ে খাটো করেন। যেমন একজন শিক্ষক একজন জেলের ছেলে পড়া না পারলে অনেক সহজেই ভৎসনা করে বলতেন, “পড়বি ক্যা বাপের মতোন জাইল্যা হবি।” বা একজন গৃহকর্মীর সন্তানকে বলতো, “মায়ের মতোন বান্দি হবি।” আমি এসবের পক্ষে নই। তবে যারা ধর্ম নিয়ে খোটা দেন তারা আদতে ধর্মকে খাটো করার জন্য করেন বলেও আমার মনে হয়না। এটা যার সাথে কথা বলা হচ্ছে তাকে তীব্রভাবে আঘাত করার জন্যই হয়তো বলেন।.যেমন বাংলাদেশে “বাবার জন্মে হয়নি” বলে গালি দেয়াটা একটা ফ্যাশেন হয়ে গেছে। কেউ এটা আক্ষরিক অর্থে বলেনা। আমাদের একজন শিক্ষক ধর্ম নিয়ে ব্যঙ্গ করতেন অবশ্য ঠাট্টা করে। তিনি ছাত্র ছাত্রীরা ক্লাশে কথা বললে, ঠাশ করে বলে উঠতেন, “নোমোর চ্যাট।” গ্রামে ”চ্যাট” শব্দটার একটা আপত্তিকর অর্থ ছিলো তখন। আর ”নোমো” বা হিন্দুদের একটা গোত্রকে উদহরন টানা হতো সকল নিচু কাজের উদহরন হিসাবে। ফলে তার এই বাক্য ক্লাসের সব শিক্ষার্থীদের বিষ্মীত করতো যে একজন শিক্ষত লোক এমন নীচু কথা কেমনে বলেন ক্লাসে। তখন তিনি ক্লাসের বোর্ডে হাসতে হাসতে ইংরেজীতে লিখে দিতেন, “নো মোর চ্যাট।” আমাদের ক্লাসে কোন হিন্দু ছিলোনা। কিন্তু যদি থাকতো তারা কি আমাদের শিক্ষকের এই সস্তা রসিকতায় খুশি হতো? আসলে বিষয়টা অরিয়েন্টেশনের অভাব। মূল্যবোধের অভাব। “নুমুইর্রা, মালাউন, কচ্ছমখাওয়া” এইসব শব্দ ব্যবহার করে অনেক মুসলমানকে গালি দিতে শুনেছি। কিন্তু কেন? এগুলোতো হিন্দুদের সাথে সম্পর্কিত শব্দ ছিলো, মুসলমানেরা এগুলো বলে কেন গালি দিত, একবার ভেবেছেন? মানুষের অনুভুতি আছে। সবারই আছে সে হিন্দু হোক আর মুসলিম, বা অন্যধর্মের বা সম্পূর্ন ধর্মহীন। আর যারা এটা বোঝেন না তারা আসলে কোন ধর্মের সাথে সম্পর্কিত নন। তারা আসলে নিজেরাই এমন। এই যে আমিরিকায় থাকি এখানেও বাংলাদেশের মানুষেরা একই ব্যবহার করে। কেউ যেনো তাদের মাথায় বন্দুক ধরে আমেরকিায় জোড় করে আসতে বাধ্য করেছে। এদেশের সকল সুবিধা ভোগ করে এদেশকে গালিদিবে প্রতিদিন। এদেশের মানুষদের সম্পর্কে বাজে কথা বলবে। যদি কখনো কোন ভিন্ন ধর্মী মানুষ নিয়ে কথা বলে নিজেরা নিজেরা, তাকে তুই সম্বোধন করে কথা বলবে। যেমন একজন অশীতিপর বৃদ্ধর কথা বলবে, ”আমি বলছি, ”তুই” বাজার টা ব্যাগে ভরে ”দে” তারা তারি।” ব্যক্তিটি নিজের ভাষার বা নিজের ধর্মের হলে নিশ্চয় তাকে তুই বলতেন না; আপনি বলতেন। শ্রদ্ধা আর সম্মানটা আসলে আমাদের বাংলাদেশের মূল্যবোধে সমস্যা এখন, বিশেষ কোন ধর্মের নয়। শিক্ষক শ্যামলকান্তি যদি সত্যিই ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করে থাকেন আর তার অপরাধ যদি হিন্দু ধর্মের উপর চাপানো হয়, এখন মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে, এটাও আমাদের দেশের মানুষদের মূল্যবোধের সমস্যা। ইসলাম ধর্মের সাথে এটা যুক্ত নয়।
বাংলাদেশের টোটাল শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একটা কষ্ট আছে আমার। আমেরিকায় সকল শিক্ষকদের কমপক্ষে মাস্টার্স শেষ করতে হয়। শিক্ষা বিষয়ে ট্রেইনিং নিতে হয়। আমাদের শিশুবেলায় প্রাইমারী শিক্ষকদের কোন ভালো লেখা পড়া জানতে হয়নি। দুই তিনবার মেট্রিকে ফেইল করা, বা থার্ড ডিভিশনে পাশ করা মানুষেরাই কেবল প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকতা করতেন। ফলে তাদের জবান ছিলো তাই যা শুনে তারা বড় হয়েছেন। শিক্ষা দানে তাদের শৃজনশীলতার দুর্বলতা ঢাকা দিতে রাগ, ধমক, মারা মারি , কুটক্তি, এগুলিরই আশ্রয় নিতেন বেশি। এখন হয়তো চিত্র পাল্টাতে পারে। আমার জানা নেই। অথচ শিশুদেরই বেশি দক্ষ মানুষের সঙ্গ প্রয়োজন। তারা সবকিছু দেখে শেখে যা সম্পর্কে তাদের কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। বড়রা অনেক ক্রিটিক্যাল থিঙ্কার। জীবনের পোড়খাওয়া ঘটনাগুলোর মধ্য দিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা হয় তাদের। কিন্তু শিশুরা কাচা কাদার মতো তাই তাদের জন্যই প্রয়োজন আন্তরিক, যত্নবান এবং সহানুভূতিশীল শিক্ষক। স্কুলগুলোতে কাদের শিক্ষকতার অনুমতি দেয়া হবে আশাকরি বাংলাদেশ আবারো ভেবে দেখবে। আর পিটানোর কালচার দয়া করে বন্ধ করা হোক। পিটিয়ে কখনো মানুষ করা যায়না। তোতা পাখি হয়তো বানানো যায় কখনো কখনো।
হিন্দু মুসলিম সমস্যগুলো সব খুব তারতাড়ি আমাদের গ্রাস করে ফেলে এখন ; অকে সহজে। আমাদের ছোটবেলায় আমরা বড় হয়েছি হিন্দু দোকানের মিস্টি খেয়ে। জগবন্ধু মিষ্টান্ন নাম হলেও সবাই জগার দোকানের মিষ্টি বলে জানতো। অত্যন্ত খাঁটি দুধের তৈরি এ মিষ্টি ছাড়া আমাদের কারো ঘরের মেহমান বা বিয়ে সামাল দেয়া হতোনা। আমাদের বাজার আসতো প্রায় ঘোষাই নামের একজনের দোকান থেকে যাকে কোনদিন চোখে দেখিনি। কিন্তু ভালো জিনিস বিক্রির সুনাম ছিলো তারও।
কোন একসময় হঠাত বাংলাদেশের মানুষেরা পুর্বের জনগোষ্ঠীর চেয়ে বেশি ধার্মিক হয়ে গেলো। তারা সবকিছুর মধ্যেই মুসলমানিত্ব খুঁজতে লাগলো। জেলায় জেলায়, থানায় থানায় নতুন মিষ্টির দোকান গজালো যার নাম “মুসলিম সুইটস”। ভালো কথা। গতবারের আগের বার বাংলাদেশে যেয়ে দেখি সেই মুসলিম সুইটসকে ভ্রম্যমান আদালত জরিমানা করেছে তারা বিষাক্ত, মেয়াদ উত্তীর্ন রং এবং সামগ্রী ব্যবহার করে মিষ্টি বানানোর জন্য। মুসলমানের নাম ভাঙ্গিয়ে মুসলমানদের টাকার বিনিময়ে মুসলমানদের ঘরেই পাঠিয়ে দিচ্ছে বিশ! এখনকি আপনার সকল মুসলমানদের এই অপরাধের অপরাধী হিসাবে দেখবেন?
হিন্দু মুসলমানের সমস্যা যে এভাবে ভিতরে ভিতরে গজাতে পারে এটা আমি আগেই মনে করেছিলাম। ওই যে সকল রিপোর্টের উদৃতি আসে হিন্দু নামের কাছ থেকে এটা দৈবৎ ছিলো বলে আমার মনে হয়নি। সকল পদ ও পদবী যে হিন্দুদের দখলে এটাও আমি কখনো মনে করিনি। যখনই সকল কন্ট্রোভার্সিয়াল কেউসগুলোর বিচারক, এটা সেটা সকল নাম আসতে শুরু করে হিন্দু, তখনই আমার মনে হয়েছিলো যে “এস্কেপগোট” লাইনআপ শুরু হয়ে গেছে। এটা আসলে হিন্দু ভাই বোন, দাদা দিদিদেরওে খেয়াল করা উচিত ছিলো। জগতটা এত সুইট না। এই ধরনের ঘটনাগুলো কখনো দৈবৎও ঘটেনা।
হিন্দু মুসলমানের বিভাজন তৈরিতে যে হারে লাফা লাফি দেখি কদিন পরে যদি শুনি মুসলমান বাঙ্গালীরা অঙ্কে শূন্যের (০) ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে কারন আ্যরাবিক নিউমেরিক এ শূন্যটা হিন্দু অঙ্কবিদের কাছ থেকে ধার করা বলে অবাক হবোনা।
সে যাই হোক আজ তাই একটা বিচারবিহীন ঘটনাও বেশিরভাগ মানুষের মেনে নেয়া দেখে সেই ধারনাই মজবুত হচ্ছে। কত অবাক করা যুক্তি দিয়েও যে মানুষ একজন লোকের বিচারবিহীন শাস্তি মেনে নিয়েছে সেটা আমার পোস্টের কমেন্ট এবং ইনবক্স না পড়লে বোঝা যাবেনা! আল্লাহ এই জনপদকে রক্ষা করুন এবং মানুষের প্রতি মানুষের সহানুভূতি বাড়িয়ে দিন।