উপকূলে ৭ নং বিপদ সংকেত

প্রকাশ: ২০১৬-০৫-২০ ২৩:৩০:৪০


ruano_cycloneবঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’র (ROANU) প্রভাবে চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসহ উপকূল ও উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের ১৩ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে এই বিপদ সংকেত জারি করা হয়। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সারা দেশে নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। আর চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলের লাইটারেজ জাহাজগুলোকে শুক্রবার রাত ৮টার মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার বিকাল বা সন্ধ্যা নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চারটি সমুদ্রবন্দরেই ৪ নং স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত জারি ছিল। সেটি নামিয়ে শুক্রবার বিকালে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আবহাওয়ার ১২ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে এই বিপদ সংকেত জারি করা হয়। এর ফলে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর পুনঃ ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর পুনঃ ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট,খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেত পুনঃ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর পুনঃ ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেত পুনঃ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘন্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এর আগে বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় উপকূলীয় অঞ্চলের সব সরকারি ও আধা-সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে সরকার। একইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ে সাইক্লোন সেন্টারগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়াবিদদের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেলের তালিকা অনুযায়ী এই ঝড়ের নাম দেয়া হয়েছে ‘রোয়ানু’। নামটি মালদ্বীপ প্রস্তাব করেছিল।