গৃহবধূর স্তন কর্তন মামলায় চিকিৎসক গ্রেফতার
আপডেট: ২০১৬-০৫-২০ ২৩:৩৮:২০
ভুল চিকিৎসায় এক গৃহবধূর স্তন কেটে ফেলার অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক শরীফুল ইসলাম শরীফকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুক্রবার দুপুরে শেরপুর শহরের একটি ক্লিনিক থেকে তাকে গ্রেফতার কর হয়। গ্রেফতারের পর ডিবি অফিসে রেখে শরীফুল ইসলাম শরীফকে জিজ্ঞাসবাদ করা হচ্ছে। শনিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে শ্রীবরদী থানার ওসি এস আলম জানান। ওই চিকিৎসক শ্রীবরদী উপজেলার লঙ্গরপাড়া গ্রামের মৃত কছর আলীর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, স্তনের ফোড়াকে টিউমার বলে ভয় দেখিয়ে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ভূতনীকান্দা গ্রামের সোলেমানের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী স্বপ্না বেগমের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে স্তন কেটে ফেলেন চিকিৎসক ডা. শরীফুল ইসলাম শরীফ।
জানা যায়, গত বছরের নভেম্বর মাসে শ্রীবরদী পৌর শহরের শান ক্লিনিকে চিকিৎসক শরীফকে স্তনের ফোড়া দেখাতে যান ওই গৃহবধূ। এ সময় চিকিৎসক তার স্তনে টিউমার হয়েছে বলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে ময়মনসিংহের সেহরা এলাকার কুন্ডু প্যাথলজিতে পাঠান।
সেখানে পরীক্ষায় ফোড়াকে টিউমার চিহ্নিত করে তাতে ক্যানসার রয়েছে বলে রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ডা. শরীফ গত বছরের ১১ নভেম্বর রোগীর স্বামী সোলায়মান মিয়ার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে ঢাকার উত্তরার আবদুল্লাহপুর এলাকার আইচ ক্লিনিকে ভর্তি করান। সেখান থেকে গৃহবধূকে শাহবাগের মডিউল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ওই বছরের ১৫ নভেম্বর তার বাম স্তন কেটে ফেলেন। এ সময় গৃহবধূর স্বামীর কাছ থেকে আরও ৩৫ হাজার টাকা নেয়া হয়।
স্তন কেটে ফেলার পরে প্রথমে ধানমন্ডির আনোয়ারা মেডিকেল সার্ভিসেস ও ঢাকা মেডিকেলে বায়োপসি করানো হলে উভয় রিপোর্টেই স্তনে কোনো ক্যান্সার নেই বলে জানতে পারেন সোলায়মান। এ ব্যাপারে শেরপুর জেলা সহায়তা কেন্দ্রের সহায়তায় ২৮ ডিসেম্বর শেরপুরের শ্রীবরদী সিআর আমলি আদালত-২ এ ওই দুই চিকিৎসককে আসামি করে একটি মামলা করেন সোলায়মান।
ওই আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আনম ইলিয়াস মামলার নালিশি দরখাস্তটিকে এজাহার হিসেবে গণ্য করে তদন্ত করার জন্যে ওসি শ্রীবরদী থানাকে আদেশ দেন। ৩ জানুয়ারি শ্রীবরদী থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
মামলায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগে কর্মরত ডা. শরীফুল ইসলাম শরীফ ও ময়মনসিংহের কুন্ডু প্যাথলজির মালিক অধ্যাপক ডাঃ কেকে কুন্ডুকে আসামি করা হয়।