জীবন বদলের ৪০ হাদিস
সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-০৬-২৬ ১২:০৯:৪০
★ জান্নাত বা জাহান্নাম, স্বর্গ বা নরক তোমার খুব কাছেই, জুতার ফিতার চেয়েও কাছে।- আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা); বোখারী।
★ মনোলোভা ভোগ্যপন্যের আড়ালেই অপেক্ষা করছে নরক বা জাহান্নাম। আর কষ্ট, ধৈর্য ও সংগ্রামের পেছনে অপেক্ষা করছে স্বর্গ বা জান্নাত।- আনাস (রা),
আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম।
★ তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। তোমাকে তোমার দায়িত্বের ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে। নেতাকে তার অধীনস্থের ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে। পরিবার প্রধানকে পরিবারের ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে। স্ত্রীকে তার স্বামীর সংসারের রক্ষনাবেক্ষণ সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্বের জন্যে জবাবদিহি করতে হবে। – আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা); বোখারী, মুসলিম।
★ ছোট ছোট পাপ সম্পর্কে সচেতন হও। যখন জবাবদিহি করতে হবে, তখন ছোট ছোট পাপ জমা হয়ে তোমার সর্বনাশের কারন হবে। – সহল ইবনে সাদ
(রা), আহমদ। : যে ধৈর্যশীল হতে চায়, আল্লাহ তাকে পর্যাপ্ত ধৈর্য বা সবর দান করেন। ধৈর্য বান্দার প্রতি আল্লাহর সবচেয়ে বড় উপহার।
—আবু সাঈদ খুদরী (রা); বোখারী, মুসলিম
চলাফেরায় তাড়াহুড়ো কোরো না। ধীরস্থিরভাবে চলাফেরা করো। তাড়াহুড়োয় কোনো কল্যাণ নেই।
—আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); বোখারী, মুসলিম
আল্লাহ চান তুমি ধীরস্থিরভাবে কাজ করো। আর শয়তান চায় তুমি তাড়াহুড়ো ও হুলস্থুল করো।
—আনাস ইবনে মালেক (রা); বায়হাকি
একজন বিশ্বাসীর জানমাল-সন্তানের ওপর বিপদ-আপদ লেগে থাকতে পারে। (এটা তার জন্যে পরীক্ষা। যে সবর সহকারে পরিস্থিতির মোকাবেলা করবে) সে গুনাহমুক্ত হয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে।—আবু হুরায়রা (রা); তিরমিজী
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে যদি কেউ সকল কষ্ট ও ক্ষয়ক্ষতিতে ধৈর্যধারণ করে, তবে সে জান্নাতে
প্রবেশ করবে।—আবু উমামা (রা); ইবনে মাজাহ :
★ আল্লাহ-সচেতনতা ও সুন্দর চরিত্র জান্নাতে যাওয়ার রাজপথ। – আবু হুরায়রা (রা); তিরমিজী, হাকেম।
★ জাহান্নামের আগুন কখনো দুই জোড়া চোখকে স্পর্শ করতে পারবেনা।
১. আল্লাহর (কাছে জবাবদিহিতার) ভয়ে যে চোখে অশ্রু ঝরে।
২. আল্লাহর পথে জেহাদের ময়দানে যে চোখ রাত জেগে পাহাড়া দেয়।- আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); তিরমিজী।
★ তিন শ্রেণির মানুষ জান্নাতে যাবে-
১. ন্যায়পরায়ন শাসক, যে তার সাধ্যমতে কল্যাণ কাজ করে।
২. হৃদয়বান মানুষ, যার সহমর্মিতার ছোঁয়া পায় আত্মীয় থেকে
শুরু করে চারপাশের সবাই।
৩. এমন ধর্মপরায়ণ মানুষ, সংসারী হয়েও যে সংযমী।
– আয়াজ ইবনে হিমার (রা); মুসলিম।
★ আমার সকল উম্মতই জান্নাতে প্রবেশ করবে, শুধু অস্বীকারকারী ছাড়া। যারা আমাকে অনুসরণ করবে, তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যারা অনুসরণ
করবেনা, তারাই অস্বীকারকারী। – আবু হুরায়রা (রা); বোখারী।
★ যে ব্যাক্তি একাগ্র বিশ্বাসের সাথে সাক্ষ্য দেবে যে, ‘ আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ (স) তাঁর রসুল’, আল্লাহ তার জন্যে জাহান্নামের আগুন
হারাম করে দেবেন। – ইতবান ইবনে মালেক (রা); বোখারী, মুসলিম।: একঘণ্টার ধ্যান ৭০ বছরের নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম।
—আবু হুরায়রা (রা); জামে উস-সগীর, ইবনে হিব্বান
আল্লাহর সৃষ্টির বৈচিত্র্য নিয়ে ধ্যান করো, তাঁর মহিমা আঁচ করতে পারবে। আল্লাহকে নিয়ে ধ্যান করতে যেও না। (কারণ তুমি কখনো তাঁর ক্ষমতার কূলকিনারা পাবে না।)—আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); আবু নায়ীম, গাজ্জালী
যে মৌন থাকল, সে রেহাই পেল।
—আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা); তিরমিজী
সদাচরণ বা শুদ্ধাচার ও দীর্ঘ মৌনতার সমতুল্য কোনো আমল নেই।—আবু যর গিফারী (রা); আবু ইয়ালা, তাবারানী
হে আবু যর! তোমাকে কি আমি দুটো আমলের কথা বলব, যা পালন করা সহজ কিন্তু পাপ-পুণ্যের পাল্লায় ওজনে খুব ভারী? ‘অবশ্যই বলবেন, হে আল্লাহর রসুল’ [আবু যরের (রা) উত্তর]।নবীজী (স) বললেন, আমল দুটো হচ্ছে—দীর্ঘ মৌনতা ও সদাচরণ বা শুদ্ধাচার!—আনাস ইবনে মালেক (রা); মেশকাত, তাবারানী
মৌনতা প্রজ্ঞার পথ। কিন্তু খুব কম মানুষই মৌনতার…:
★ অন্যের দোষ খুঁজে বের করার ব্যাপারে কখনো অনুসন্ধিৎসু হবে না। যখন কোনো দোষ প্রকাশ্যে দৃশ্যমান হবে, তখন তা আমলে নিতে পারো।
– আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা); আবু দাউদ।
★ অন্যের ছিদ্রান্বেষন না করে যে নিজের দোষত্রুটি নিয়ে (তা সংশোধন করতে) ব্যস্ত থাকে, সে-ই আশীর্বাদপ্রাপ্ত।- আনাস ইবনে মালেক (রা); বাজ্জার।
★ কারো কাছে হাত পাতবেনা (কারো দয়ার ওপর কখনো নির্ভরশীল হবে না)। – আউফ ইবনে মালেক (রা); মুসলিম।
★ দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত হয়েও যে ব্যক্তি অন্যের কাছে হাত পাতে না, সে-ই হচ্ছে মিসকিন, সেই হচ্ছে গরিব (সাহায্য পাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত
ব্যাক্তি)।- আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম।
★ আল্লাহ তাঁর সেই আত্মমর্যাদাসম্পন্ন বান্দাকে ভালোবাসেন, যে গরিব হওয়া সত্বেও অন্যের কাছে হাত পেতে বেড়ায় না।- ইমরান ইবনে হোসেইন (রা); ইবনে মাজাহ
★ অভাব-অনটনের মুখে যখন কেউ হাত পাতাকে অভ্যাসে পরিণত করে, তখন আল্লাহ তার জন্যে দারিদ্র্যের দ্বার উন্মোচন করে দেন। – ওমর ইবনে সাদ
(রা); তিরমিজী।
★ বেশি বেশি দরুদ পড়ো। যত পারো দরুদে নিমগ্ন থাকো। তোমার সকল অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা ভেসে যাবে। তোমার গুনাহরাজি ক্ষমা পাবে। – উবাই ইবনে
কাব (রা); তিরমিজী।
★ আমার উপর যে একবার দরুদ পড়বে, আল্লাহ তার ওপর ১০ বার রহমত বর্ষণ করবেন। – আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা); মুসলিম। ভালো সময়ে আল্লাহকে স্মরণ করো, তাহলে দুর্দিনে তিনি তোমাকে দেখবেন। জেনে রাখো, যা তুমি পাওনি তা তোমার নয়। যা তোমাকে ভুল পথে নিয়ে যায়, তা কখনো তোমাকে সত্যে পৌছাবে না। আর যা তোমাকে ভালো কাজে সাহায্য করে, তা কখনো বিভ্রান্তির পথে নেবেনা। মনে রেখো, অবিচল বিশ্বাস ও নিরলস পরিশ্রমই আল্লাহর সাহায্য প্রাপ্তির পথ। দুঃখকষ্ট, সংগ্রামের পথেই আসে সমৃদ্ধি। আর দুঃসময়ের পরেই আসে সুসময়, প্রতিটি দুঃখের সাথেই সুপ্ত আছে সুখ। – আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); নাসাঈ, রিয়াদুস সালেহীন।
★ প্রতিটি বিষয়, বস্তু ও প্রাণের তকদির (বিকাশ ও পরিণতির প্রাকৃতিক আইন) রয়েছে। এমনকি দুর্বলতা ও বুদ্ধিমত্তারও!- আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা);
মুসলিম, মেশকাত।
★ মানুষকে যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে, সে লক্ষ্যে কাজ করলে সে স্বতঃস্ফূর্ত গতি পাবে। – ইমরান ইবনে হোসেইন (রা); বোখারী, মুসলিম।
কাজ করে যাও। প্রত্যেকের একটা গন্তব্য আছে। গন্তব্য বুঝে কর্তব্য সম্পাদনে যখন কেউ অগ্রসর হয়, তখন তার কাজে স্বতঃস্ফূর্ততা আসে, লক্ষ্য অর্জন সহজ হয়।- আলী ইবনে আবু তালিব (রা); বোখারী, মুসলিম।
★ দোয়া তকদির (বিকাশ ও পরিণতির প্রাকৃতিক আইন বা ভাগ্য) বদলে দেয়।
– সালমান ফারসি (রা), সাওবান (রা); তিরমিজী, ইবনে মাজাহ, মেশকাত।
★ একজন সাহাবী বললেন, হে আল্লাহর রসুল! আমরা খাই কিন্তু তৃপ্তি পাইনা। নবীজী (সা) জিজ্ঞেস করলেন, ঘরে তোমরা কি আলাদা আলাদা খাও?
সাহাবী বললেন, জ্বী হাঁ। নবীজী (স) বললেন, তোমরা একসাথে খাও। আল্লাহর নাম নিয়ে খাও। খাবারে বরকত ও তৃপ্তি পাবে। – ওয়াহশি ইবনে হারব (রা); আবু
দাউদ।
★ বাম হাত দিয়ে পানাহার কোরো না। শয়তান বাম হাত দিয়ে পানাহার করে। – আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা); মুসলিম, তিরমিজী।
★ হেলান বা কাত হয়ে খাবার খেয়ো না। – ওয়াহাব ইবনে আব্দুল্লাহ (রা); বোখারী। নবীজী (স) তিন আঙুল ব্যবহার করে খেতেন। – কাব ইবনে মালেক
(রা); মুসলিম।
খাবার খেয়ে আঙুল না চেটে তা কাপড় দিয়ে মুছবে না।- আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা); বোখারী, মুসলিম।
★ খাবার শেষ করে আঙুল চেটে ও পাত্র পরিষ্কার করে খাবে (যাতে পাত্রে কোনো ঝুটা না থাকে)। – জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা); মুসলিম।
★ খাবার প্লেট পুরোপুরি পরিষ্কার করে খাবে। প্লেটে কোনো খাবার উচ্ছিষ্ট করবে না। শয়তানের জন্যে খাবারের কোনো অংশ রাখবেনা। কোনো লোকমা হাত
থেকে পড়ে গেলে ধুলা বা ময়লা পরিষ্কার করে তা খেয়ে নেবে। খাবার শেষে আঙুল চেটে নেবে (যাতে আঙুলে লেগে থাকা খাবারের অংশবিশেষও অপচয় না হয়। কারণ তুমি জানোনা — আজকের খাবারের কোন অংশে বরকত রয়েছে।- আনাস ইবনে মালেক (রা); মুসলিম।
★ খাবার গ্রহন করার পর তুমি বলো, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর। তিনি আমাকে খাওয়ালেন। আমাকে রিজিক দিলেন, যা (শুধু) আমার প্রয়াস ও ক্ষমতায় সম্ভব
ছিল না। সবটাই তাঁর দয়া।’ তোমার সকল গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।- মুয়াজ ইবনে আনাস (রা); আবু দাউদ, তিরমিজী।যে এক লোকমা খাবার গ্রহন করেই
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, এক চুমুক পানি পান করেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে (আলহামদুলিল্লাহ’ বলে) তার ওপর আল্লাহ সন্তুষ্ট থাকেন। – আনাস ইবনে মালেক
(রা); মুসলিম।
★ একজন বিশ্বাসী অন্য বিশ্বাসীর জন্যে একই ঘরের দেয়ালস্বরুপ। এক অংশ অন্য অংশকে শক্তিশালী করে ও দৃঢ়বদ্ধ রাখে। – আবু মুসা আশায়ারী (রা);
বোখারী, মুসলিম।
★ যে ব্যাক্তি প্রতারণা করে, সে বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত নয়। – আবু হুরায়রা (রা); মুসলিম।
সূত্র-হাদীস শরীফ বাংলা মর্মবাণী
এনজে