চলতি অর্থবছরে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি ৬ মন্ত্রণালয়

সানবিডি২৪ আপডেট: ২০২৩-০৯-১৯ ১৮:১৮:১১


চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের অগ্রগতি ৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ। জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত ১০ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা খরচ করতে পেরেছে মন্ত্রণালয়গুলো। তবে ছয় মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এ দুই মাসে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ণ বিভাগের মাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, একক মাস হিসেবে আগস্ট মাসে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৫২ কোটি টাকা। মাস হিসেবে এ বাস্তবায়নের হার ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অবশ্য আগের বছরের একই সময়ে এ বাস্তবায়নের হার ছিল ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

এ বছর ১ হাজার ৩৯২টি প্রকল্পের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের (এডিপি) বরাদ্দ ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা, বিদেশি অর্থায়ন ৯৪ হাজার কোটি টাকা। বাকি ১১ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছয়টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এ দুই মাসে এক টাকাও খরচ করেনি। এর মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের ২৪টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ১২ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা। এ মন্ত্রণালয় কোনো টাকাই খরচ করেনি দুই মাসে।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৯৬টি প্রকল্পের বিপরীতে এডিপি বরাদ্দ ৭ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। কিন্তু দুই মাস অতিক্রম হলেও এ মন্ত্রণালয় এক টাকাও খরচ করতে পারেনি।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের ১৭টি প্রকল্পের বিপরীতে এডিপি বরাদ্দ ২ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা। খরচের ক্ষেত্রে একই অবস্থা এ বিভাগেরও।

জনপ্রশাসনের ১৬টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ৯৭২ কোটি টাকা। তবে খরচ করেছে নামকাওয়াস্তে, শূন্য দশমিক শূন্য এক শতাংশ। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ১৬ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ৭৪৮ কোটি টাকা, খরচের খাতা এখনও শূন্য।

গত অর্থবছর এক টাকাও খরচ করতে না পারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও খরচের খাতাই খুলতে পারেনি। শূন্যের তালিকায় এবারও রয়েছে তারা। আরেক মন্ত্রণালয় আইন ও বিচার বিভাগের ৫ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ১৬৩ কোটি টাকা, হালখাতা খুলতে পারেনি তারাও।

সদ্য শেষ হওয়া আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন ৮.৫৮ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে গিয়েছিল। সে অবস্থা থেকে কিছুটা উন্নতি হচ্ছে এ অর্থবছর। গত অর্থবছরে সরকারের এডিপি বাস্তবায়ন হার ছিল ৮৪.১৬ শতাংশ। যা আগের অর্থবছরে ছিল ৯২.৭৪ শতাংশ।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা আইএমইডি’র কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নির্মাণ উপকরণের দাম বাড়ায় অনেক প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রকল্প ব্যয়ে সরকারের কৃচ্ছতাসাধন এবং তহবিলের সীমিত ছাড়ও এডিপি বাস্তবায়ন হার কমিয়েছে।

চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় অগ্রাধিকার অনুসারে বিভিন্ন প্রকল্পকে এ, বি ও সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে সরকার। সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ বলে চিহ্নিত প্রকল্পগুলোকে রাখা হয়েছে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে। এসব প্রকল্পের জন্য অর্থ ছাড় সাময়িকভাবে বন্ধ আছে বলে জানান পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এছাড়া, ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত প্রকল্পগুলোর জন্য ৭৫ শতাংশ অর্থ ছাড়ের কথা বলা হয়েছে। আর ‘এ’ ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলোর জন্য নির্ধারিত তহবিলের ১০০ শতাংশই ছাড় করা যাবে।

এএ