ছবিই কথা বলে, আমরা ভিসা নীতি নিয়ে মাথা ঘামাই না : তথ্যমন্ত্রী
সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-০৯-২৭ ২১:৩৪:৫৮
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো এবং আমাদের সাথে এই সম্পর্ক উত্তরোত্তর ঘনিষ্ঠ হচ্ছে’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, জো বাইডেন দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সেলফি তুলেছেন এবং নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীকে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। জো বাইডেন সস্ত্রীক প্রধানমন্ত্রীর সাথে নিউ ইয়র্কে ছবি তুলেছেন, ছবিই কথা বলে, আমরা ভিসা নীতি নিয়ে মাথা ঘামাই না।’
বুধবার বিকেলে মিরপুর ১০ গোলচত্বর সংলগ্ন রোডে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে মন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
ভিসানীতি নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফখরুল সাহেব বলেছেন যে, ভিসা নীতিতে তাদের আন্দোলন বেগবান হয়েছে। তিনি জানেন যে, ভিসা নীতিতে বলা হয়েছে যে, যারা নির্বাচনে বাধা দেবে, তাদের ওপর এই নীতি প্রয়োগ হবে। আর যাদের ওপর ইতিমধ্যেই ভিসানীতি কার্যকর করা হয়েছে তাদের মধ্যে বিরোধী দলের নেতারাও আছে সেটি ফখরুল সাহেব জানেন না। জানলে এ কথা বলতেন না।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাকে ভিসা দিলো, কাকে দিলো না, এটি তাদের ব্যাপার। এই ভিসানীতি বহু আগে থেকেই তাদের আছে। তাদের ভিসানীতিতে যেটি বলা আছে সেই অনুযায়ী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে তারা পদক্ষেপ নিয়েছে। এটি নতুন কোনো কিছু নয়। সুতরাং এই ভিসা নীতি একটি বিচ্ছিন্ন বিষয়। আমাদের সাথে মার্কিনা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।
তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বহু দেশের ওপর ভিসানীতি কার্যকর করেছে। তারা নাইজেরিয়ার ওপর ভিসানীতি কার্যকর করেছে সরকারের কিছু হয় নাই, কম্বোডিয়ার ওপর কার্যকর করেছে সরকারের কিছু হয় নাই। উগান্ডার ওপরও তারা ভিসানীতি কার্যকর করেছে সরকারের কিছু হয় নাই। কিউবার ওপর ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ভিসানীতি কার্যকর ছিলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১শ’ মাইল দূরে কিউবার কিছু হয় নাই। সুতরাং এই ভিসা নীতি নিয়ে এতো কিছু মাতামাতি করার কোনো কারণ নাই।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে ধস নামানোর বিজয়ের মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেছেন। বিএনপি ২০১৪ সালে নির্বাচনের পর বলেছিলো, সরকার বড়জোর তিন মাস টিকবে। আমরা পাঁচ বছর সরকার পরিচালনা করেছি। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বলেছিলো এই সরকারও তারা টেনে ফেলে দেবে। এখন বিএনপিই রশি ছিঁড়ে পড়ে গেছে। অর্থাৎ এখন মির্জা ফখরুল সাহেব ও তাদের নেতারা যে সমস্ত কথা বলছেন সেটি হচ্ছে খালি কলসি বেশি বাজার মতো।’
হাছান বলেন, ‘আজকে আমি একটু আগে অনলাইনে দেখলাম বিএনপি নেতারা বলেছেন, ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জ ঘেরাও করে সরকারের পতন ঘটানো হবে। আমরা প্রস্তুত আছি। আমরা বিএনপিকে ঘেরাও করবো। ওরা যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় আমরা বিএনপিকে ঘেরাও করবো। তাদের ঘেরাও করে গণপিটুনি দেবো না, তাদের শিক্ষা দেবো আমরা। যদি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালায় তাহলে তাদেরকে ঘেরাও করা হবে।’
‘তাই বিএনপির এই আন্দোলনের ধপধপানি হচ্ছে চেরাগ নিভে যাওয়ার আগে ধপধপানির মতো’, বলেন মন্ত্রী।
নেতা-কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করে হাছান বলেন, ‘এই দেশ বঙ্গবন্ধুর দেশ। এই দেশের নেতা বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনা কোনো রক্তচক্ষুকে পরোয়া করে না। আমি নেতাকর্মীদের বলবো, আওয়ামী লীগ রাজপথের দল, আওয়ামী লীগ লড়াই সংগ্রামের দল। আমরা ২১ বছর বুকে পাথর বেঁধে রেখেছিলাম। আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা এ দেশের মানুষের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সুতরাং আওয়ামী লীগ কোনো কিছুকে পরোয়া করে না। সমস্ত ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে আবার ধস নামানোর বিজয়ের মাধ্যমে আমরা সরকার গঠন করবে।’
‘আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো নির্বাচনে আসুন, নির্বাচনে যদি না আসেন তাহলে আপনাদের অনেক নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে’ বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে দলীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ফারুক খান এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি, অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন মায়া, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার প্রমুখ সমাবেশে বক্তব্য দেন।
এএ