সমাবেশকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়ে কড়াকড়ি
সানবিডি২৪ প্রতিবেদক আপডেট: ২০২৩-১০-২৭ ১৫:৩৮:১৫
আগামীকাল শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীতে রাজনৈতিক দলগুলোর সমাবেশকে কেন্দ্র করে যেকোনও ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে, সড়কে ও মোড়ে মোড়ে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে পুলিশ এবং র্যাব। মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে তল্লাশি শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকার প্রবেশদ্বারে হাইওয়ে চেকপোস্ট বসিয়ে যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করতে দেখা গেছে। এছাড়া আজ শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সমাবেশকে ঘিরে কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সেজন্য পূর্বঘোষণা অনুযায়ী পুলিশ ও র্যাব এই কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
আজও সাভারের আমিনবাজার এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পরিবহনে তল্লাশি করতে দেখা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য চেকপোস্ট এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। তাদের উপস্থিতিতে ঢাকাগামী দূরপাল্লার যানবাহনসহ বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করছে পুলিশ। এ ছাড়া হায়েস গাড়ি, মোটরসাইকেল, গণপরিবহন ও প্রাইভেটকার প্রবেশে বিশেষ নজর রাখছে পুলিশ। এ সময় সন্দেহভাজন যাত্রীদের পরিচয় শনাক্তে তাদের পরিচয়পত্র যাচাই করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি জানিয়েছে, আগামীকাল ২৮ অক্টোবরকে সামনে রেখে যারা রাজধানীতে ঢুকবেন তাদের বিষয়গুলো কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে। রাজধানীতে ঢোকার প্রতিটি মুখে মুখে চালানো হবে তল্লাশি। সন্দেহ হলে তাদেরকে পুলিশি জেরার মুখে পড়তে হবে। সমাবেশে অংশ নিয়ে নেতাকর্মীরা যদি অবস্থান নেয় এবং অবরুদ্ধ করার মতো কোনও ঘটনার অবতারণা করে সেই বিষয়গুলোর পরিস্থিতি বিবেচনা করে সব ধরনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
দুপুর থেকে দেখা যায়, সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকেছে পুলিশ, র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা। রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশন, সায়েদাবাদ বাস স্ট্যান্ড, মহাখালী গাবতলীসহ প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুপুর ২টার দিকে নয়াপল্টনের নাইটিঙ্গেল মোড়ে বিপুল পরিমাণ পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে গেছে।
এদিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট, হাজারীবাগ, শেরেবাংলা নগর, তেজগাঁও এবং তেজগাঁও শিল্প এলাকায় চেক পোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব।
সাভারের আমিনবাজারে পুলিশের তল্লাশি
এসব এলাকায় সংস্থাটির বিশেষ রোবাস্ট পেট্রোল এর মাধ্যমে পর্যাপ্ত পিকআপ টহল ও মোটরসাইকেল টহল ডিউটিতে মোতায়েন করা হয়। এছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলো যেসব ভেন্যুতে সমাবেশ করতে চেয়েছে, যেগুলোর এখনও অনুমতি দেয়নি ডিএমপি এসব ভেন্যুর আশেপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করবে এটিই স্বাভাবিক। সম্প্রতি দেখা গেছে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে নগরবাসীকে সব ধরনের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে র্যাব। সমাবেশেকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা দেওয়া হবে। যাতে করে কেউ নাশকতার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র বা বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে সমাবেশে প্রবেশ করতে না পারে। এজন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি অপারেশন্স শাখার যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ মনে করে রাজনৈতিক সভা সমাবেশ করা সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে এ গণতান্ত্রিক অধিকারকে সমুন্নত রেখে মিটিং মিছিল বা সমাবেশ করতে হবে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সব ধরনের পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। যখন যে পরিস্থিতির উদ্ভব হবে তখন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি।
এনজে