আগের রাতে ভোট হবে না, একশ ভাগ নিশ্চিত: সিইসি
সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-১২-২৬ ২০:৫১:৫৭
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগের রাতে ভোট হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে একশ ভাগ নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে এলজিইডি মিলনায়তনে জেলার ১৬টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
‘রাতে ভোট হবে না’ জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আগের রাতে ভোটের যেসব কথাবার্তা হয়েছে- আমরা ৯৯ নয়, শতভাগ নিশ্চিত করতে পারি, সেটি কোনো অবস্থাতেই হবে না। এজন্য অনেক কেন্দ্রে ব্যালট পেপার সকালে যাবে। এখন ব্যালট পেপার সকালে না গিয়ে ১০ দিন আগে অথবা ১০ মাস আগেও যদি যায় তাহলেও প্রার্থীরা তাদের পোলিং এজেন্ট দিয়ে সকালে ভোট কেন্দ্রে স্বচ্ছ বাক্সগুলো খালি কি না সেটি দেখে তারপর বন্ধ করবেন। সেক্ষেত্রে অবৈধভাবে কোনো ব্যালট বাক্স ঢোকার সুযোগ নেই। তারপরও আমরা বিশ্বাস এবং আস্থা অর্জনের জন্য বলেছি, ব্যালট পেপার সকালে পাঠাব। ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্টরা অবশ্যই দাঁড়িয়ে থেকে দেখে নেবেন ব্যালট বাক্সগুলো খালি আছে কি না। তারা ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ গণনা ও ফলাফল পর্যন্ত কেন্দ্রে অবস্থান করবেন।
সিইসি বলেন, আমি ছয়টি স্টেশনে ঘুরে শুনেছি, একটি কথা কয়েকজনে বলেছেন ‘ভোট দিয়ে কী লাভ, ভোট তো এক জায়গায় চলে যাবে’, আবার কেউ কেউ নাকি মুখে মুখেও বলেছেন, ‘আপনারা যে যেখানে ভোট দেন, ভোট জায়গামতো চলে আসবে’। আমরা বিষয়টি শুনেছি। এর মধ্যে আমরা জেনে গেছি, এটি হয়তো ইচ্ছাকৃত অপপ্রচার অথবা ভ্রান্ত ধারণা। ভোট যেখানেই দেন সেখান থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার আশঙ্কা নেই, সেটি আমরা শতভাগ নিশ্চিত করতে পারি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনের সংস্কৃতিতে অনেকে কালো টাকার বিনিময়ে পেশাদার কিছু সন্ত্রাসী ব্যবহার করে। তারা যাতে ভোটকে প্রভাবিত না করতে পারে সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। তাদের বক্তব্য শুনেছি। আমরাও যথাযথ নির্দেশনা দিয়েছি। তারা বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের কথা বলেছেন। পোস্টার ছেঁড়া, ক্যাম্পে আগুন দেয়ার কথা বলেছেন। সার্বিকভাবে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা জানিয়েছেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের আচরণে তারা সন্তুষ্ট।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ভোট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ফুটে উঠবে মিডিয়ার মাধ্যমে। কারণ মিডিয়ার কর্মীরা ভোটকেন্দ্রের বাইরে এবং ভেতরে থাকবেন। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে মিডিয়া ও পর্যবেক্ষকদের প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি নিতে হবে না। তারা সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন এবং ভেতরে ঢুকে ছবি তুলতে পারবেন। সত্য-মিথ্যা জনগণকে জানাতে পারবেন। আমরা একটি অ্যাপস তৈরি করেছি; যেখানে দুই ঘণ্টা পর পর প্রতিটি কেন্দ্রে কত শতাংশ ভোট পড়লো ইনপুট দেয়া হবে। মোবাইলের মাধ্যমে অ্যাপস ডাউনলোড করে সেটা সবাই জানতে পারবেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, ১০টার সময় দেখা গেল ১০ শতাংশ ভোট পড়ল। কিন্তু ১২টার দিকে গিয়ে হঠাৎ ৮০ শতাংশ হয়ে গেল। এটি বিশ্বাসযোগ্য হবে না। এজন্য আমরা বিভিন্ন পরিমাপক নিয়েছি। যাতে ভোট গ্রহণের সত্যতা মানুষের মাঝে ফুটে ওঠে।
কোনো পেশিশক্তির উদ্ভব ঘটলে প্রিজাইডিং অফিসারকে ভোট বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘প্রিজাইডিং অফিসার যদি বন্ধ না করেন; রিটার্নিং অফিসার অবহিত হলে তিনি বন্ধ করে দেবেন। তিনিও যদি বন্ধ না করেন, আর আমরা ঢাকা থেকে অবহিত হলে সেখান থেকে বন্ধ করে দেব।’
‘কথাগুলো বললাম আমাদের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে একটা অনাস্থার সৃষ্টি হয়েছে, সেটি যাতে দূরীভূত হয়। আমরা নির্বাহী প্রশাসন ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি। এখানে ওসি, ইউএনও, ডিসি ও এসপিদের বক্তব্য শুনেছি। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ ভালো,’ যোগ করেন সিইসি।
এএ