নিয়োগ জালিয়াতি, ঢাবি ছাত্রসহ গ্রেফতার ৮

আপডেট: ২০১৫-১১-০৬ ১৮:১১:৩৩


du_jaliatiরাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষায় চার ভুয়া প্রার্থীসহ নিয়োগকারী জালিয়াত সিন্ডিকেটকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এরমধ্যে চারজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র।

জানা গেছে, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১৩৩টি পদের নিয়োগের পরীক্ষা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। এ পরীক্ষায় আনুমনিক ৪৭ হাজার পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। শুক্রবার সকাল ১০টায় ও বিকাল সাড়ে ৩টায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৫ রাজশাহীর উপ-পরিচালক মেজর আবদুস সালামের নেতৃত্বে একটি অপারেশন দল অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত চক্রের মূল হোতাসহ চারজন, চার ভুয়া পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার এবং তিনটি মাইক্রোবাস ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট অনেক দলিলাদি ও নগদ অর্থ উদ্ধার করে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সিন্ডিকেট পরিচালনাকারী চক্রের সদস্য নীলফামারী বাসিন্দা ও ঢাকা কলেজের ছাত্র মো. জাকির হোসেন (২৫), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. জাকির হোসাইন (২৫), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র মো. আল-মামুন, (২৭) এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রকল্পের কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল।

আর এই চক্রের মূলহোতা মো. সোহেল রানা বর্তমানে জনতা ব্যাংক করপোরেট শাখা, ফার্মগেটে কর্মরত আছে বলে জানা যায়।

এছাড়া অভিযান চারজন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। এরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র মাইদুল ইসলাম ও সাইম আহমেদ, সমাজ কল্যাণ বিভাগের ছাত্র ওসমান গনি ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র নূর আলম।

র‌্যাবের দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, সোহেল, জাকির, মামুন মিঠু, কাজল এবং আরও কতিপয় ব্যক্তি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ জালিয়াতি ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।

রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে এই সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠে। এ পর্যায়ে প্রার্থীদের চাকুরি দেয়ার আশ্বাসের ভিত্তিতে মূল প্রার্থীর পরিবর্তে ভুয়া মেধাবী প্রার্থী ব্যবহার করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় এই জালিয়াতি চক্র।

এ চক্র একজন প্রার্থীর নিকট হতে নূন্যতম ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করে। এ টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা অফেরতযোগ্য এবং অবশিষ্ট টাকা প্রার্থী নির্বাচিত না হলে মূল পরীক্ষার্থীকে ফেরত প্রদান করার আশ্বাস দেয়া হয়।

অন্যদিকে একজন মেধাবী ভুয়া পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা দেয়ার বিনিময়ে ২ লাখ টাকা প্রদান করা হয় যার মধ্যে ২০ হাজার টাকা অগ্রিম দেয়া হয়। অবশিষ্ট ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা পরীক্ষার্থী নির্বাচিত হলে প্রদান করা হয়।

প্রতারক সিন্ডিকেটের স্বীকারোক্তির মাধ্যমে জানা গেছে, ওই চক্র ৮০ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে এই পরীক্ষার জন্য নিয়োগ প্রদান করে। সোহেল-জাকির সিন্ডিকেট প্রার্থীর প্রবেশপত্র পাওয়ার পর ফটোশপের মাধ্যমে ক্রসম্যাচ করে একটি নতুন ছবি তৈরি করে প্রবেশপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে ভুয়া পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশপত্র তৈরি করতো।