কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তার ব্রিজের বেহাল দশা,দূর্ভোগ চরমে
প্রকাশ: ২০১৬-১০-২২ ১৪:০৯:৪১
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়া ত্রিশাল- ধুরধুরিয়াগামী সড়কের ব্রিজ (বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন) ভেঙে বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও ত্রিশাল বাজারের গোহাটা মোড় থেকে ধুরধুরিয়া পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, এলাকাবাসীসূত্রে জানা গেছে,বেশ কয়েক বছর থেকে এই সড়কের কোন সংস্কার কাজ হয়নি।এছাড়া ঘন ঘন সড়ক খনন করে গ্যাস লাইন সংযোগ দেয়া হলেও কোনো সংস্কার করা হয়নি । প্রতিদিন সড়ক দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী এবং কয়েক হাজার এলাকাবাসীসহ অনেক ভারি যানবাহনও চলাচল করে। ফলে যানবাহনের দূর্ঘটনা যেন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তার ব্রিজের ভাঙ্গনের ফলে দূর্ঘটনার নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে ।
এলাকাবাসীর জন্য এই রাস্তাটি ময়মনসিংহ শহর এবং ত্রিশাল বাজারে যাওয়ার জন্য একমাত্র অবলম্বন। সড়কটি চলাচলের প্রায় অনুপযোগি হওয়ায় এক কিলোমিটারের রাস্তা তিন কিলোমিটার ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের তিনগুন ভাড়া গুনতে হচ্ছে ।
কেন এই সড়ক সংস্কার করা হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এলাকাবাসী জানান,বর্তমান মেয়রের সাথে তিন নং ওয়ার্ডের এক সাবেক কমিশনারের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থাকা, এছাড়াও সাবেক বিএনপিপন্থী মেয়রের এলাকায় এই রাস্তা হওয়ায়, সংস্কারের কোনো সম্ভাবনাই নেই ।
রাস্তাটি সংস্কারের দাবিতে গত বছরের ২৯ মে,রোজ শুক্রবার সড়কের কাদায় ধানের চারা রোপন করে এবং শুয়ে থেকে প্রতিবাদ করেছে এলাকাবাসী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঐ বছরের ৩০ মে,রোজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর ফটকের সামনে কাদায় মাছের পোনা ছেড়ে আবারও প্রতিবাদ জানিয়েছিল এলাকাবাসী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা।
গত বছরের পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সড়ক সংস্কারের দাবির প্রেক্ষিতে ত্রিশালের পৌর মেয়র এবি.এম. আনিসুজ্জামান বলেছিলেন, খুব শীঘ্রই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করবেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে,ঘোষণা দেয়ার দুই বছর অতিবাহিত হলেও এখনো সংস্কার কাজ শুরু হয়নি। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেও সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, পথিকদের এবং যানবাহনের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। মেয়র আনিসুজ্জামান আগামী মাসেই সংস্কার কাজের দরপত্র আহবান করবেন বলে জানিয়েছিলেন গত বছর। বর্তমানে সড়কে অচলাবস্থা বিরাজ করছে।
আলমগীর নামে এক এলাকাবাসী বলেন, সর্বশেষ কবে যে এই রাস্তার কাজ করা হয়েছে তা আমার মনে পড়ে না। তবে এটুকু জানি গত পাঁচ সাত বছরে এই রাস্তায় একটি ইট ও পড়ে নাই।
স্থানীয় এক চা বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পৌরসভার মেয়র রাস্তাটি করার জন্য বহুবার আশ্বস দিয়েছেন কিন্তু তা আর বাস্তবায়ন হয়নি।তিনি আরও বলেন, আসলে এই রাস্তাটি দেখার মত কেউ নেই, আর কত পাঁচ বছর যে এই অবস্থায় দেখব তা আমি জানি না ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ পড়ুয়া শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম হিমেল দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে রাস্তার এই অবস্থা দেখে আসছি এবং শুনে আসছি যে এই মাসে রাস্তার কাজ শুরু করবে কিন্তু এই বলে পাঁচ বছর পার হয়ে গেলো , তাই মনে হয় না আর ভাল রাস্তা দেখে যেতে পারব।
গত বছর রাস্তাটি নিয়ে অনেক টেলিভিশন চ্যানেল এবং জাতীয় পত্রিকায় একাধিকবার প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও স্থানীয় প্রশাসনের টনক নড়েনি ।
সানবিডি/জাককানইবি/আজিজার/এসএস