প্রবল শক্তি নিয়ে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’

আপডেট: ২০২৪-১০-২৪ ০৮:৩৮:৫৮


বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট হওয়া গভীর নিম্নচাপ দানা বেঁধেছে ঘূর্ণিঝড় দানা। এর প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকার আকাশ মেঘলা রয়েছে। অনেক স্থানেই দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি ঝরেছে। প্রবল শক্তি নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি আজ বৃহস্পতিবার রাতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। দুর্যোগের শঙ্কায় ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকায় দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। বিশেষ করে দুর্বল বেড়িবাঁধ নিয়ে ভয় বেশি।

‘দানা’ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসায় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর রয়েছে উত্তাল। ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।  উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় নেওয়া হয়েছে সতর্ক ব্যবস্থা। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়ার সঙ্গে জেলা সদরসহ সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনির সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। উপকূলে প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের যে গতি-প্রকৃতি, তাতে এর আছড়ে পড়ার সম্ভাব্য এলাকা ভারতের উড়িষ্যার উপকূল। এর প্রভাব পড়তে পারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশালের বিভিন্ন এলাকায়।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টির যে গতিবিধি, তাতে এটি ভারতের উড়িষ্যা উপকূলমুখী। ধামারা বন্দরের দিকেই এটি উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির অতিক্রম করার যে এলাকা, সেখান থেকে বাংলাদেশের উপকূল ডান দিকে। আর ডান দিকে থাকার কারণে বাংলাদেশের উপকূলে এর প্রভাব থাকবে কিছুটা বেশি। বাঁ দিকে থাকলে সাধারণত কম থাকে। দানা যদি উপকূল অতিক্রম করার জন্য দীর্ঘ সময় নেয়, তবে এর প্রভাবও দীর্ঘ সময় ধরে অনুভূত হবে। আবার বাতাসের গতিবেগ তখন কেমন আছে, এর ওপরও বাংলাদেশের উপকূলে এর সম্ভাব্য প্রভাব নির্ভর করবে।

তবে জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার ঘূর্ণিঝড়ের যে সম্ভাব্য গতিপথ দেখিয়েছে, তাতে ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার দুপুরে উড়িষ্যার বালাসোর এলাকা দিয়ে উপকূলে উঠে আসতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উড়িষ্যা এবং পশ্চিমবঙ্গের একাধিক উপকূলবর্তী এলাকা থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বাসিন্দাদের। মোতায়েন করা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। দুই রাজ্যেই ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় উপকূলীয় এলাকার জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি সম্পর্কে আলোচনা এবং সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছে। গতকাল জেলা প্রশাসকরা নিজ নিজ সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করেছেন। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে এবং প্রস্তুত রাখা হয়েছে সিপিপি ও রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবকদের।

এনজে