নাসিরনগরে তাণ্ডবের ঘটনায় গ্রেফতার ৩২

আপডেট: ২০১৬-১১-০৫ ১৬:০৯:১৮


hindu-hamlaব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু পল্লীতে চালানো তাণ্ডবের ঘটনায় আরো ৩২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৫টি হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। বণিকপাড়া, দক্ষিণপাড়া, নমশুদ্রপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও ঠাকুরপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশ দাবি করছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরগুলো গবাদিপশু রাখার ও রান্নার কাজে ব্যবহার হতো। এর আগে গত রবিবার একই উপজেলায় ১২টি মন্দির এবং বেশকিছু হিন্দু বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার রেশ না কাটতেই নতুন করে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এলাকায় সংখ্যালঘুদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
নাসিরনগরে ৫ বাড়িতে আগুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি ও নাসিরনগর সংবাদদাতা জানান, উপজেলা সদরের ফুল কিশোর সরকারের বাড়ির গোয়ালঘর, মৃণাল কান্তি সরকারের রান্নাঘর, অমর দেবের রান্নাঘর, ঠাকুরপাড়ার সেন্টু কবিরাজের একটি পরিত্যক্ত ঘর ও সাগর দাসের বাড়ির দুর্গামন্দির ঘরে রাত তিনটার দিকে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে রান্নাঘরের আসবাবপত্র, দুর্গা প্রতিমা এবং পূজার কাজে ব্যবহূত জিনিসপত্র পুড়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনার সংবাদ পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক  মো. রেজওয়ানুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ও উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম মনিরুজ্জামান সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, রাতে কে বা  কারা আগুন লাগিয়েছে তারা জানেন না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ জানান, অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তবে কে বা কারা এটা করেছে  তা জানা যায়নি।
জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল করিম জানান, ভোরে কে বা কারা উপজেলা সদরের সংখ্যালঘুদের পাঁচটি গোয়ালঘর ও রান্নাঘরে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোস্ট করার জের ধরে গত রবিবার উপজেলা সদরে আহলে সুন্নত জামায়াত ও হেফাজত ইসলামের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের সময় একদল লোক হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, বাড়ি-ঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এসময় হামলাকারীরা ব্যাপক লুটপাটও করে। হামলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েক জন আহত হন।