কেমন ফার্স্ট লেডি হবেন মেলানিয়া ট্রাম্প?
প্রকাশ: ২০১৬-১১-০৯ ১৮:১৭:৩১
১৮ শতক হতেই মার্কিন রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন ফার্স্ট লেডিরা। ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরে তার তৃতীয় স্ত্রী ও বর্তমান সঙ্গী সাবেক মডেল মেলানিয়া ট্রাম্প হতে যাচ্ছেন ফার্স্ট লেডি।
যদিও ফার্স্ট লেডির কোনো দাপ্তরিক স্বীকৃতি নেই। ফার্স্ট লেডি বিভিন্ন সামাজিক ইস্যু নিয়ে কাজ করবেন এবং হোয়াইট হাউজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্টের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন। ১৯৭০ সালে কমিউনিস্ট যুগোস্লাভিয়ায় জন্ম নেয়া মেলানিয়া ১৮২৫ সালের পর বিদেশি বংশোদ্ভূত প্রথম ফার্স্ট লেডি। প্রেসিডেন্ট জন কুইন্সি অ্যাডামসের স্ত্রী লুইসা অ্যাডামস ছিলেন ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত।
মজার ব্যাপার হচ্ছে মুক্ত বাণিজ্যর দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি হতে চলা মেলানিয়ার বাবা ভিক্টর নাভস স্লোভেনিয়ান কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। মা আমালিজা নাভস ছিলেন শিশুদের পোশাক নির্মাতা। মেলানিয়ার একটি বোন এবং একটি সৎভাই রয়েছে যার সঙ্গে তার কখনো দেখা হয়নি। লুবজানার একটি মাধ্যমিক স্কুলে ডিজাইন ও ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।
৪৬ বছর বয়সী মেলানিয়ার মডেলিং ক্যারিয়ারের শুরু ১৬ বছর বয়সে। ১৮ বছর বয়সে একটি মডেলিং এজেন্সির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। হার্পার বাজার ভ্যানিটি ফেয়ারসহ বিভিন্ন ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ হয়েছে মেলানিয়াকে নিয়ে। ব্রিটিশ ম্যাগাজিন জিকিউ এর জন্য নগ্ন ফটোশ্যুটও করেছেন। মেলানিয়ার নামে নিজস্ব জুয়েলারি, স্কিন কেয়ার পণ্য রয়েছে। স্লোভেনিয়ান, সার্বিয়ান, ইংলিশ, ফ্রেঞ্চ ও জার্মান ভাষায় সাবলীল তিনি।
৫ ফুট ১১ ইঞ্চি লম্বা মেলানিয়ার সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাত জয় ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের একটি ফ্যাশন পার্টিতে। তখন সদ্যই দ্বিতীয় স্ত্রী মারিয়া মার্পলসের সঙ্গে ট্রাম্পের বিচ্ছেদ হয়েছে। ২০০৪ সালে তাদের বাগদান হয় এবং এক বছর পরে ফ্লোরিডার একটি চার্চে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মেলানিয়ার বিবাহ পোশাকটির দাম ছিল ১ লাখ ডলার। তাদের রিসেপশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরাজিত ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও তার স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। ২০০৬ সালে তাদের একটি পূত্র সন্তান হয় যার নাম রাখা হয় ব্যারন। মেলানিয়া ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ড লাভ করেন এবং ২০০৬ সালে নাগরিকত্ব লাভ করেন।
ফার্স্ট লেডি হিসেবে অভিবাসী থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়া মেলানিয়া ফার্স্ট লেডি হিসেবে কেমন হবেন সেটা নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা চলছে। ট্রাম্পের জমকালো প্রচারণা মঞ্জে তাকে খুব বেশি একটা দেখা যায়নি, তবে তিনি বলেছেন স্বামীর সব কথায় তিনি একমত পোষণ করেন না। সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, আমি তাকে অনেকবার বিভিন্ন ইস্যুতে পরামর্শ দিয়েছি। সে যা বলে তার সবকিছুর সঙ্গে একমত পোষণ করি না। আমি নিজের মতো ভাবি। আমি কী ভাবি সেটা তাকে বলি এবং সেটা একটি সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপুর্ণ।
নারীদের যৌনহয়রানি করার বিষয়ে ট্রাম্পের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হওয়ার পরেও স্বামীর পাশেই ছিলেন মেলানিয়া। কিন্তু রিপাবলিকান পার্টির কনভেনশনে ২০০৮ সালে মিশেল ওবামার দেয়া ভাষণ নকল করার অভিযোগে শিরোনামে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৯ সালে একটি সাক্ষাতকারে বলেছিলেন তার স্বামী যদি প্রেসিডেন্ট হয় তাহলে তিনি বেটি ফোর্ড কিংবা জ্যাকি কেনেডির মতো প্রথাগত ফার্স্ট লেডি হবেন।
মেলানিয়া ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সাইবার হয়রানির বিরুদ্ধে কাজ করবেন। আশা করা যায়, এই কাজে সিদ্ধহস্ত স্বামীর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারটা কমানোর চেষ্টাও করবেন তিনি। স্কাই স্পোর্টস।