পুঁজিবাজার সংস্কার হচ্ছে, সাময়িক সমস্যা মেনে নিতে হবে: অর্থ উপদেষ্টা

সানবিডি২৪ প্রকাশ: ২০২৫-০১-০৭ ১৯:২২:৫৬


অস্থিরতা কাটছেই না দেশের পুঁজিবাজারে। আইপিওতে দেখা দিয়েছে মন্দাভাব। বিনিয়োগকারীদের আসা-যাওয়া ও লেনদেন কমে যাওয়া, বাজার মূলধন কমে যাওয়া ও সূচকের পতনের মতো নানা ঘটনায় অনিশ্চয়তায় দোল খাচ্ছে পুঁজিবাজার। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুঁজিবাজারে অনেক সংস্কার চলছে। এজন্য সাময়িক সময় কিছু সমস্যা মেনে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) রাজধানীর নিকুঞ্জে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ভবনে দেশের পুঁজিবাজারে চলমান সংকট নিরসনে করণীয় নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আপনারা অনেক সময় দেখেন যে শেয়ারমার্কেট পরে গেছে। এর কারণ বাজার রিফর্ম হচ্ছে৷ কারও উপকার করার জন্য এখানে কোন পলিসি নেয়া হয়নি, যা অতিতে হয়েছিলো। পুঁজিবাজারে শুধু সূচক বেড়ে ৯ হাজার পয়েন্ট হওয়া ভালো কিছু নয়। সেটা স্বাভাবিক না। সেটা কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয়। সেখানে কারসাজির মতো সমস্যা থাকে। উত্থান-পতনের মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবে বাজার ভালো করতে হবে। বর্তমানে ব্যাংকে ৮-৯ শতাংশ পর্যন্ত আমানতের সুদ পাওয়া যায়। যেখানে বাজারে ১২ শতাংশ হলেও অনেক আমানতকারী সেটা নিরাপদ মনে করে সেখানে যায়।

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, বাজারের মধ্যস্থতাকারীরা পুঁজিবাজারের অংশ। তারা খারাপ নাকি ভালোভাবে ব্যবসা করবে, সেটা তাদের ওপর নির্ভর করে। এতে বাজার ভালোও হতে পারে, খারাপও হতে পারে। এটা গত ১৫ বছরে দেখে এসেছেন। এখন বাজার ভালো করার সময় এসেছে। গত ১৫ বছরে এ সুযোগ পাওয়া যায়নি। তাই, পুঁজিবাজারের ভালো করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের সবাই আগ্রহী। তার জন্য প্রয়োজনে নীতি পরিবর্তন করা হবে। তবে, সেটা দ্রুত করতে হবে। এ সরকার দীর্ঘ মেয়াদে থাকবে না। কিন্তু, বাজরকে দীর্ঘ মেয়াদে ভালো রেখে যেতে হবে। এজন্য দ্রুত কাজ করতে হবে।

পুঁজিবাজারের সাথে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্পর্ক আরো মজবুত করতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে আসা হয়েছে উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন,আমাদের দেশে বেশিরভাগ ব্যবসা করে ব্যাংক থেকে। ভালো কোম্পানিগুলো শেয়ার ছাড়তে চায় না। ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে আরেকটা সুবিধা আছে, সেটা হচ্ছে, টাকা নিয়ে ফেরত দেওয়া লাগে না। ব্যবসার ক্ষেত্রে ঋণ আর শেয়ারের বিষয়ে সমন্বয় না করলে বাজার ভালো হবে না। এজন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া এবং শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য করতে হবে। সেক্ষেত্রে বাজারে ভালো কোম্পানি আনতে হবে, যেটা বাংলাদেশে হয় না।

বাজার ভালো হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ব্রোকারেজ হাউজ, দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ও বাজার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসলাম। তাদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কথা বলেছি। আমরা কনফিডেন্ট যে- বাজার ভালো হবে।

পুঁজিবাজারের সংকট কাটাতে ডিএসই’র উদ্যোগে আয়োজিত সভায় অংশ নেন বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, ডিএসই চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম।

এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল), সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল) এবং ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) প্রতিনিধি সভায় অংশ নেন।

বিএইচ