দুঃখের দিনে আনন্দ এনে দিলেন মেয়েরা

প্রকাশ: ২০১৭-০১-১৬ ১৭:৫৮:৩৮


Kubraওয়েলিংটন টেস্টে পরাজয়ের হতাশায় পুড়েছে মুশফিকের দল। কিন্তু কক্সবাজারে ভিন্ন দৃশ্য—সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েদের ১০ রানে হারিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের আনন্দে ভাসিয়েছেন রুমানারা। দুর্দান্ত এই জয়ে সিরিজে ফিরেছে বাংলাদেশ।

গত ম্যাচে বাংলাদেশের মুঠো গলে জয় বেরিয়ে গিয়েছিল। আজও ভয় জাঁকিয়ে বসতে শুরু করেছিল। ৯৬ রানে ৯ উইকেট ফেলে দেওয়ার পরও বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছিল শেষ উইকেটে গড়া দক্ষিণ আফ্রিকার ৩০ রানের জুটি। সালমা খাতুনই শেষ উইকেট তুলে নিয়ে আনন্দে ভাসান দলকে। সহজ জয়টা নাটকীয়ভাবে এল বলেই হয়তো আনন্দ বাঁধ মানল না। ওয়েলিংটনের হতাশার ক্ষতে কিছুটা হলেও তো প্রলেপ পড়ল।
বাংলাদেশ ১৩৬ রানে অলআউট হওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকাকেও গুটিয়ে দিল ১২৬ রানে। জয়ের মূল নায়িকা অবশ্য খাদিজাতুল কুবরা। ৩৩ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। আগের ম্যাচেও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন বাংলাদেশের এই অফ স্পিনার। আজ ছাড়িয়ে গেছেন সেটিকেও। ১৫তম ওভারে হ্যাটট্রিকের সুযোগও পেয়েছিলেন। সেটি না হলেও দলের জয়ের সম্ভাবনা উঁকি দেয় ওই ওভারের পর থেকেই। ৭ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর হয়ে যায় ৬৭/৭। এরপর গড়ে ওঠে ২০ রানের একটা জুটি। খাকাকে রান আউটে ফিরিয়ে স্বস্তি এনে দেন লতা মন্ডল। খাদিজা কারস্টেনকেও ফেরালে জয় থেকে বাংলাদেশ তখন এক উইকেট আর দক্ষিণ আফ্রিকা ৪১ রান দূরে।
একাই লড়াই চালিয়েছেন ফন নিকর্ক। প্রোটিয়া অধিনায়ক খেলেছেন অপরাজিত ৪২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। অবশ্য নিকর্ক একটা সুযোগ দিয়েছিলেন, রুমানার বলে যখন মিডঅনে সানজিদা ইসলামের হাতে তিনি ক্যাচ তুলে দেন দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ২২ রান। নিকর্ককে ফেরাতে পারলেই জয় নিশ্চিত। কিন্তু প্রোটিয়া অধিনায়কের সহজ ক্যাচটাই লুফে নিতে পারেননি সানজিদা। তখনো মনে হচ্ছিল, আবারও কি জয় মুঠো গলে ​বেরিয়ে যাবে। ১৬ জানুয়ারি দিনটা কি হতাশার দিনলিপিই লিখবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে? অবশেষে জয় নিশ্চিত হলো ৩৭ ওভারে, সালমা খাতুন যখন তুলে নিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ উইকেট।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার শারমিন সুলতানা ও শারমিন আক্তার। দুই শারমিনের ওপেনিং জুটিতে এসেছে ৪২ রান। সুলতানার ব্যাটিং দেখে মনেই হয়নি এ ম্যাচ দিয়ে তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু। মার্সি লেতসোয়ালার বলে কাভারে লিজলে লির ক্যাচ হওয়ার আগে শারমিনের রান ১৭। ৫ রানের মধ্যে অডিন কারেস্টেনের বলে মিডঅনে স্টেইনের ক্যাচ হয়েছেন সুলতানা (২১)।
দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর দলকে পথ দেখান তৃতীয় উইকেটে রুমানা আহমেদ-সানজিদা ইসলামের ৪২ রানের জুটি। ছন্দে থাকা বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকেই এসেছে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৮ রান। লুসের বলে রুমানা বোল্ড হওয়ার পরই সেই পুরোনো ছবি—হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার। ৩ উইকেটে ১০৪ ছিল বাংলাদেশের স্কোর। শেষ ৭ উইকেট পড়েছে মাত্র ৩২ ​রানে।
ভাগ্যিস এবার বোলাররা হতাশ করেননি। ৫ ম্যাচ সিরিজের ফল এখন ২-১।