হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ভাড়ায় খাটা: আ.লীগ

প্রকাশ: ২০১৭-০১-১৭ ১৬:০২:৫৮


hasan-mahmudমানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ভাড়ায় খাটা একটি সংগঠন বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বলা হয়েছে, ‘এইচআরডব্লিউ এখন ভাড়ায় কাজ করে, ভাড়া খাটে। পয়সার বিনিময়ে বিবৃতি দেয়। বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে এরা ভাড়ায় কাজ করে। বিএনপি-জামায়াতের নিয়োগ করা মিলিয়ন ডলারের লবিস্ট ফার্মের তৈরি করা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।’

১২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় আজ মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ। সেখানেই তিনি এইচআরডব্লিউ সম্পর্কে এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, এইচআরডব্লিউ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, একপেশে, ভুল তথ্যপূর্ণ ও বানোয়াট। আওয়ামী লীগ এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছে। তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। এটি একটি পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন। কোনো দেশের ‘সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ততাবিহীনভাবে কাজ করার নীতি’ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও সৌদি সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অনুদান গ্রহণ করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। মিসরে মুসলিম ব্রাদারহুড নারীদের স্বাধীন চলাফেরায় যে বাধা দিয়েছিল, এর পক্ষে সাফাই গেয়েছিল এই সংস্থাটি। ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্র ও নার্ভ গ্যাস ব্যবহারের প্রমাণ আছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রকারান্তরে ইরাক আক্রমণের পক্ষে তারা রায় দেয়।

হাছান মাহমুদ দাবি করেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে দেশে হত্যা, খুন, আর সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়। আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সে সময় কোনো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেনি, প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালিয়েছে সংস্থাটি। হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো বিবৃতি দেয়নি এই সংস্থা। ২০১৫ সালে তিন মাসে বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে প্রায় শত শত নিরপরাধ লোককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে। এ নিয়ে কোনো ধরনের উদ্বেগ কিংবা উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেনি তারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান।

১২ জানুয়ারি এইচআরডব্লিউর ‘ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট ২০১৭’ এক প্রতিবেদনে নির্বিচারে গ্রেপ্তার, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ তোলা হয়। প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যম ও বেসামরিক লোকজনের ওপর সরকার দমনপীড়ন চালিয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের হাতে বিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকজন আটক, পঙ্গু, হত্যা ও গুমের শিকার হয়েছেন।