ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা আটকে দিলেন আদালত

প্রকাশ: ২০১৭-০২-০৬ ১২:৫১:০৮


trumpযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে আটকে দিলেন দেশটির একটি আদালত।

এর মধ্য দিয়ে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সাত মুসলিম দেশের নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য আবারও আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন। এ-সংক্রান্ত ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে মধ্যপ্রাচ্যের ইরাক, ইরান, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং আফ্রিকার লিবিয়া, সুদান ও সোমালিয়ার নাগরিকদের তিন মাসের জন্য ভিসা দেওয়া বন্ধ করা হয়।

ওয়াশিংটনের সিয়াটলের এক বিচারক শুক্রবার ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রায়ে বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের পরিপন্থি। তবে সরকারি আইনজীবীদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো রাজ্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে না। কিন্তু ফেডারেল বিচারক জেমস রবার্ট আইনজীবীদের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে রায় দিয়ে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন।

গত সপ্তাহে জারি করা ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ হয় এবং বিমানবন্দরে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। বিমানবন্দরে ওই সাত দেশের নাগরিকরা নানা সংশয় ও সংকটে পড়েন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নির্বাহী আদেশের পর থেকে এ পর্যন্ত ওইসব দেশের প্রায় ৬০ হাজার ভিসা বাতিল করা হয়েছে।

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী কার্যক্রম ১২০ দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। সিরীয় শরণার্থীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই সাত দেশের সব নাগরিকের জন্য ৯০ দিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন রাজ্য প্রথম মামলা করে এবং পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় মিনেসোটা। ওয়াশিংটন রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল বব ফার্গুসন এ মামলার রায় সম্পর্কে বলেছেন, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা অবৈধ ও অসাংবিধানিক। কারণ এর মাধ্যমে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে।

আদালতের এই রায় ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। এ রায়ের ফলে ওই সাত দেশের নাগরিকদের ভিসার জন্য আবেদনের বৈধ ভিত্তি তৈরি হলো। তবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন।

ট্রাম্পের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রকে সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে দূরে রাখতে ওই সাত দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তার আদেশের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হলে তিনি বলেন, ‘অধিকতর নিরাপদ নীতি’ গ্রহণ করার পর আবারও ভিসা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। তিনি দাবি করেন, এটি মুসলিমদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা নয়।

এর আগে বেশ কয়েকটি রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ট্রাম্পের আদেশকে অসাংবিধানিক বলে  উল্লেখ করেন। কয়েকজন ফেডারেল বিচারক বৈধ ভিসাধারীদের বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন। তবে এবার সিয়াটলের বিচারকের রায় পুরো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রযোজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সাময়িকভাবে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রোধ হলো।

ভার্জিনিয়া, নিউ ইয়র্ক, ম্যাসাচুসেটস ও মিশিগান রাজ্যের আদালতে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে শুনানি চলছে।