নুরুল হুদা নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার
আপডেট: ২০১৭-০২-০৮ ১১:০২:৩০
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে প্রাক্তন সচিব কে এম নুরুল হুদাকে বেছে নিলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। নির্বাচন কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- প্রাক্তন অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, প্রাক্তন সচিব রফিকুল ইসলাম, প্রাক্তন জেলা ও দায়রা জজ বেগম কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদত হোসেন চৌধুরী।
সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে নতুন নির্বাচন কমিশনের পাঁচ সদস্যের নাম ঘোষণা করেন। আজই নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে জানান তিনি।
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার বাড়ি পটুয়াখালীতে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ে যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তিনি ১৯৭৩ ব্যাচে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে দীর্ঘদিন ওএসডি থাকার পর ২০০৬ সালে সচিব হিসেবে অবসরে যান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বড় বড় দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মোট ১২৮ জনের নাম প্রস্তাব করে। তার মধ্যে ১০ জনের নাম সার্চ কমিটি চূড়ান্ত করে আজ সন্ধ্যায় মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দুজনের নাম প্রস্তাব করা হয়। এরা হলেন- প্রাক্তন সচিব কে এম নুরুল হুদা ও প্রাক্তন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার। এর মধ্য থেকে নুরুল হুদাকে চূড়ান্ত করেন রাষ্ট্রপতি।’
তিনি আরো বলেন, ‘দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আটজনের নাম প্রস্তাব করে সার্চ কমিটি। এরা হলেন- প্রাক্তন অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অধ্যাপক জেরিনা রহমান, প্রাক্তন সচিব মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, রাজশাহীর প্রাক্তন জেলা ও দায়রা জজ বেগম কবিতা খানম, পরিকল্পনা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য আবদুল মান্নান, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদত হোসেন চৌধুরী, অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। এই আটজনের মধ্যে মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও শাহাদত হোসেন চৌধুরী এই চারজনকে মনোনয়ন দেন রাষ্ট্রপতি।’
সিইসি কোন দল থেকে এসেছেন জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটি এই মুহূর্তে আমার মেমরিতে নেই। রেকর্ড দেখে বলতে হবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবনা থেকেই তার নাম এসেছে।’
নির্বাচন কমিশন বাছাইয়ে সার্চ কমিটি নিরপেক্ষভাবে কাজ করেছে বলে মন্তব্য করেন মোহাম্মদ শফিউল আলম।
কমিশনার হিসেবে কে কোন দলের প্রস্তাব থেকে এসেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবিত নামগুলো প্রায় কমন। রাজনৈতিক দলগুলো থেকে নাম এলেও যাদের নির্বাচন কমিশনে চূড়ান্ত করা হয়েছে তারা সবাই এখন নির্দলীয়। তবে আওয়ামী লীগ থেকে দুজনের নাম প্রস্তাব করা হয়। এরা হলেন- আবদুল মান্নান ও কবিতা খানম। তার মধ্যে থেকে রাষ্ট্রপতি কবিতা খানমকে চূড়ান্ত করেন। বিএনপির প্রস্তাবনা থেকে মাহবুব তালুকদারের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।’
নির্বাচন কমিশনারদের নামগুলো ‘রাজনৈতিকভাবে কালার’ করা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
সংবাদ ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুল ওয়াদুদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে ১০ জন ব্যক্তির নাম চূড়ান্ত করে তার তালিকা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে হস্তান্তর করে সার্চ কমিটি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় থেকে সোয়া ৭টা পর্যন্ত বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সার্চ কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে এই তালিকা হস্তান্তর করা হয়।