ওয়ালটনের ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার, ক্যাসেট ও সিলিং টাইপ এসি আসছে
প্রকাশ: ২০১৭-০২-২১ ১৯:০১:৫১
আবহাওয়ার উষ্ণায়নের ফলে গরম ক্রমশঃ বাড়ছে। এবছর আগে ভাগেই বিদায় নিয়েছে শীত। আর গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশে বাড়ছে এয়ার কন্ডিশনার বা এসির চাহিদা। ক্রমবর্ধমান এসির চাহিদা পূরণে এগিয়ে রয়েছে দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন। এবার গতবছরের চেয়ে ৫৭ শতাংশ বেশি এসি বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানটি।
ওয়ালটন কর্তৃপক্ষের দাবি- অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, সঠিক বিটিইউ (ব্রিটিশ থারমাল ইউনিট) ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা, গোল্ডেন ফিনের ব্যবহার, সাশ্রয়ী মূল্য, ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি, সর্বোচ্চ ৩৬ মাসের সহজ কিস্তিতে ক্রয়ের সুবিধা, দেশব্যাপী বিস্তৃত সেলস ও সার্ভিস পয়েন্ট থাকায় গ্রাহক পছন্দের শীর্ষে উঠে এসেছে ওয়ালটন এসি।
ওয়ালটন কর্মকর্তারা জানান, হঠাৎ অসহনীয় গরম পড়লে এসির চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। তখন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হয়। তাই এবছর আগে ভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ওয়ালটন। কারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ানো হচ্ছে মজুদ। এমাসেই আসছে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি। আসছে ওয়ালটনের ৪ ও ৫ টনের সিলিং এবং ক্যাসেট টাইপের এসি।
একসময় দেশের এসির বাজার ছিল পুরোপুরি আমদানি নির্ভর। ফলে, সঠিক বিটিইউ সম্পন্ন এসি পাওয়া ছিল দুষ্কর, অধিকাংশ এসি নি¤œমানের এবং দামও ছিল আকাশ ছোঁয়া। কিন্তু, গত কয়েক বছর ধরে দেশেই উচ্চমানের এসি তৈরি হওয়ায় তার সুফল ভোগ করছেন ক্রেতারা। গাজীপুরের চন্দ্রায় নিজস্ব কারখানায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে মানসম্পন্ন এসি তৈরি করছে ওয়ালটন। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানিও হচ্ছে। অত্যাধুনিক মেশিনারিজ স্থাপনের প্রেক্ষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আনুষঙ্গিক কাঁচামাল নিজস্ব কারখানায় তৈরির ফলে উৎপাদন খরচ কমেছে বহুলাংশে। ফলে বাজারে এসির দাম কমে এসেছে।
ওয়ালটন এসি বিপণন বিভাগের প্রধান আব্দুল বারী বলেন, চলতি বছর এসির সিংহভাগ বাজার দখলে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৫৭ শতাংশ। বাজারে ছাড়া হচ্ছে দেশের আবহাওয়া উপযোগি অসংখ্য মডেলের এসি। এর মধ্যে রয়েছে ৬৫’হাজার টাকা মূল্যের ১.৫ টনের ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি। চলতি মাসেই ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির ২ টনের এসিও আসছে, যা সাধারণ এসির তুলনায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
বাজারে ৩৫ হাজার টাকায় ১টন, ৪৩,৯০০ টাকায় ১.৫ টন ও ৫৪ হাজার ৬’শ টাকায় ২ টনের ওয়ালটন এসি পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মত এসির কনডেনসারে অ্যান্টি করোসিভ হাইড্রফিলিক গোল্ডেন কালার ফিন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে ওয়ালটন। এতে এসির স্থায়ীত্ব আরো বাড়বে।
এ প্রসঙ্গে ওয়ালটন আরএন্ডডি বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী তাপস কুমার মজুমদার বলেন, গোল্ডেন ফিন হলো এসির কনডেন্সারে হিট এক্সেঞ্জারের পৃষ্ঠতলে ক্ষয় ও মরিচারোধক হাইড্রফিলিক আবরণ। যা ধুলো, ময়লা, বাতাসের আর্দ্রতা ও উষ্ণতার কারনে সৃষ্ট ক্ষয় রোধ করে। সেইসঙ্গে তা কনডেন্সারে হিট এক্সেঞ্জারের স্থায়িত্ব ও কার্যকারীতা বাড়ায়। এটি ব্যবহারের ফলে ক্রেতাকে ঘনঘন এসি পরিষ্কার বা মেরামতের ঝামেলা পোহাতে হয় না।
ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, ইনভার্টার প্রযুক্তির এসিতে সেন্সর থাকায় ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা বুঝে সেই অনুযায়ী রেফ্রিজারেন্ট সরবরাহ করে এবং ঘর ঠান্ডা হয়ে গেলে কম্প্রেসার ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে। প্রয়োজন অনুযায়ী তাপমাত্রা সরবরাহ করে বিধায় এতে বিদ্যুৎ খরচ অনেক কম হয়। কম্প্রেসারের স্থায়ীত্বও বাড়ে।
এসির বিক্রয়োত্তর সেবা আরো সহজতর করতে গত বছর থেকে উইন্টার সার্ভিস ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হচ্ছে। ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের মেকানিক্যাল প্রোডাক্ট ডেভলপমেন্টের প্রধান আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, শীতকালে কয়েকমাস বন্ধ রেখে আবার চালু করতে গেলে এসিতে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে, সিডিউল সার্ভিসিং এর প্রয়োজন পড়ে। ২০১৫ সালের ১লা ফেব্রুয়ারির পরে যারা ওয়ালটন এসি ক্রয় করছেন এবং চলতি বছরের ৩১ শে জানুয়ারির মধ্যে ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের কল সেন্টার (১৬২৬৭) এ ফোন করে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তাদের ঘরে ঘরে গিয়ে ফ্রি সিডিউল সার্ভিসিং দেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ওয়ালটনরে রয়েছে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ আরএন্ডডি (উন্নয়ন ও গবেষণা) কেন্দ্র। অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি এয়ারকন্ডিশনার নিয়েও প্রতিনিয়ত গবেষণা হচ্ছে। দেশী-বিদেশী প্রকৌশলীরা আবহাওয়া স্ট্যান্ডার্ড, সাশ্রয়ী মূল্যে বেশি কার্যকর এসি তৈরির জন্য গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছেন। কঠোরভাবে কিউসি বা কোয়ালিটি চেক করা হচ্ছে।