‘গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়েছিল কে ?’
প্রকাশ: ২০১৭-০৩-১১ ১৮:৫১:৫৬
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা (বিএনপি) যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই অর্থসম্পদের মালিক হয়েছে। যারা অর্থসম্পদের মালিক হয়েছে, তাদের জোরে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করেছে। এটা ছাড়া তারা আর কিছুই করেনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে খুব ভারতবিরোধী কথা শুনি। আমার প্রশ্ন, ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে যখন মার্কিন কোম্পানি আমাদের গ্যাস বিক্রি করতে চাইল ভারতের কাছে, তখন গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়েছিল কে ? খালেদা জিয়া। মুচলেকা দিয়েই তো ক্ষমতায় এসেছিল।’
তিনি বলেন, আমি তো মুচলেকা দেইনি। আমি তো চেয়েছিলাম আমার দেশের সম্পদ আগে দেশের মানুষের কাজে লাগবে। ৫০ বছরের রিজার্ভ থাকবে। তারপরে আমরা ভেবে দেখবো বিক্রি করবো কি করবো না।
শনিবার খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনিস্টিটিউশন মিলনায়তনে যুব মহিলা লীগের সম্মেলনের উদ্বোধন অধিবেশনে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা (বিএনপি) ভারতের কাছে কিছুই আদায় করতে পারেনি এখন আবার তারাই ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলছে। এ সমস্ত খেলা তারা বহু খেলেছে। তাদের কোনো দেশপ্রেম নাই। ক্ষমতা তাদের কাছে ভোগের বস্তু।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির নীতিনির্ধারকরা সব সময়ই ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি বিরোধী বক্তব্য দিয়ে আসছেন। আওয়ামী লীগ ভারতের স্বার্থ রক্ষা করছে বলেও তারা অভিযোগ করে থকেন। কিন্তু বিএনপি, জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া যারাই ক্ষমতায় ছিল কেউ তো কখনো একবারের জন্যও সীমানার দাবি করেনি। সীমানা নির্দিষ্ট করার পদক্ষেপও নেয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমুদ্র সীমা সেই আইনও জাতির পিতা করে রেখে যান। জিয়া, খালেদা, এরশাদ কোনো সরকার ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের সমুদ্র সীমা নিয়ে কোনো আলোচনা, পদক্ষেপ নিয়েছে? নেয়নি? কেন নেয়নি? যদি এতই দেশপ্রেমিক হবে দেশের এই সমস্যার কথা তোলেনি কেন?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে এত কথা বলে, এখানে সেই ‘র’ (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) এর প্রতিনিধি সে তো হাওয়া ভবনে বসেই থাকতো। আমেরিকা অ্যাম্বাসির লোক হাওয়া ভবনে বসেই থাকত। ২০০১ সালের নির্বাচন … আওয়ামী লীগকে সম্পূর্ণভাবে হারাবে এবং এখান থেকে গ্যাস নিবে।’
গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটা প্রশ্ন রাখি ৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসল। ক্ষমতায় এসে ভারত গেলো। ভারত গিয়ে উনি (খালেদা জিয়া) বেশ ঘুরে আসলেন। যখন এখানে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করল গঙ্গার পানির কি হলো? তিনি বললনে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলন করলেন, ফারাক্কা পর্যন্ত লংমার্চ করলেন। আর ভারতে গিয়ে গঙ্গার পানির কথা বলতে ভুলে গেলেন।’
প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকার প্রধান হিসেবে ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়ে গঙ্গার পানি নিয়ে কথা বলেননি খালেদা জিয়া। সে বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা প্রশ্ন রাখেন, ‘দালালিটা করে কে?’
যুব মহিলা লীগ সংগঠনকে সুসংগঠিত করার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যে কোনো অবস্থা মোকাবিলা করার মতো শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন, নিরাপত্তা, কর্মসংস্থানসহ নারীর উন্নয়নে সরকারের নেওয়া কাজগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।
যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, যুব মহিলা লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাকিয়া পারভিন মণি, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল প্রমুখ। অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিকেল ৩টা থেকে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। এ অধিবেশনে যুব মহিলা লীগের নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। নাজমা আক্তার ও অপু উকিল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্নির্বাচিত হন।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ৬ জুলাই প্রতিষ্ঠার পর ২০০৪ সালের ৫ মার্চ যুব মহিলা লীগের প্রথম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তখন নাজমা আকতার সভাপতি এবং অপু উকিল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।