হাথুরুকে মহানামার অভিনন্দন

প্রকাশ: ২০১৭-০৩-২৩ ১৩:২৮:৩৮


hatura singরাস্তার এ পাশে সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মানে এসএসসি বা শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের সদর দপ্তর। ওপাশেই সিসিসি, কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব। একটু দূরে ননডেসক্রিপ্ট ক্রিকেট ক্লাব, এনসিসি। ৫০০ মিটার পরিধির মধ্যেই শ্রীলঙ্কার বিখ্যাত তিনটি ক্রিকেট ক্লাব।

রোশান মহানামা কাল এলেন সিসিসিতে, তাঁর সাবেক ক্লাবে। যতটা না বাংলাদেশ দল ও শ্রীলঙ্কান বোর্ড সভাপতি একাদশের মধ্যকার প্রস্তুতি ম্যাচটি দেখতে, তার চেয়েও বেশি যেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহের টানে। একসঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন, সমান বয়সী। বোঝাই গেল দুজনের বন্ধুত্ব এখনো কী ভীষণ উষ্ণ। হাথুরুসিংহেকে বারবার বাংলাদেশের শততম টেস্টে লঙ্কাজয়ের জন্য অভিনন্দন জানালেন। ব্যাটিং পরামর্শক থিলান সামারাবীরা ও ম্যানেজার খালেদ মাহমুদকেও জানালেন অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। তারপর সিংহলিজ ভাষায় বন্ধু হাথুরুসিংহের সঙ্গে মেতে উঠলেন খোশগল্পে। কিছু ক্রিকেটীয় পরিভাষা কানে আসতে বোঝা গেল, শুধু অতীতের স্মৃতিই তাঁদের আলোচনার বিষয় ছিল না। বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটও অনেকটা জায়গাজুড়ে সেখানে ছিল।

পি সারা ওভালে কেমন দেখলেন বাংলাদেশের খেলা? মহানামার ভ্রু কুঁচকে গেল, ‘না, আমি তো খেলা দেখিনি।’ টিভিতেও দেখেননি? সোজা-সাপ্টা উত্তর, ‘না।’ এটুকু অন্তত বলুন, বাংলাদেশের এই জয়টাকে কীভাবে দেখছেন? ‘আমার বন্ধু দলটিকে নিয়ে অসাধারণ কাজ করেছে। ওকে অভিনন্দন জানিয়েছি।’ আর কোনো কথাই বলতে চাইলেন না শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রিকেট তারকা। কোনো সাক্ষাৎকার দেন না কাউকেই। বলে দিলেন, ‘সরি, আমি কোনো ইন্টারভিউ দিই না।’

ক্রিকেট ছেড়ে দিয়েছেন প্রায় ১৮ বছর হলো। এখনো চলনে-বলনে তারকা। পঞ্চাশ পেরিয়েছেন, নির্মেদ-চনমনে শরীরটা দেখলে মনে হয় এখনো মাঠে নেমে যেতে পারবেন। চিতার ক্ষিপ্রতায় সেই ফিল্ডিং করতে পারবেন কাভারে।

একেবারেই স্পিকটি নট হয়ে থাকার কারণ কী, ভেতরের দহন? বাংলাদেশও এখন শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দেয়!

মহানামার ভেতরে দহন থাকুক আর না থাকুক, জয়াসুরিয়া-কালুভিতারানা ও ভাসের মধ্যে যে সেটি আছে বোঝাই যায়। সনাৎ জয়াসুরিয়া প্রধান নির্বাচক, রমেশ কালুভিতারানা সহ-নির্বাচক—ব্যাটিংয়ে সেই বিস্ফোরক ওপেনিং জুটির মতো জুটি বেঁধেছেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের দল নির্বাচনী কাজে। দুজনই কাল ক্লাব হাউসে বসে ম্যাচ দেখলেন। লাঞ্চের পর যদিও জয়াসুরিয়া চলে গেছেন এসএসসিতে, সেখানে টেস্টে হারের পর জরুরি সভায় বসেছিল এসএলসি। জয়াসুরিয়া ও কালুভিতারানাও মহানামার মতো বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। অনেক পীড়াপীড়ির পরও তাঁদের মুখে কোনো কথা নেই।

চামিন্ডা ভাসের ব্যাপারটি আলাদা। অনূর্ধ্ব-১৯ শ্রীলঙ্কা দলের বোলিং কোচ তিনি। বোর্ডের অনুমতি নেই বলে তিনি কথা বলতে পারলেন না। তবে এর মধ্যেও একটা দুঃখ যেন উঠে এল তাঁর ভেতর থেকে। বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন, ভেবেছিলেন চাকরিটা হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ নিল কোর্টনি ওয়ালশকে। শ্রীলঙ্কার সাবেক পেসার জানালেন, ‘বিসিবির সিইও আমার সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলবেন জানিয়েও আর ফোন করলেন না!’