‘শিববাড়িতে অভিযানে ২ জঙ্গি নিহত’

প্রকাশ: ২০১৭-০৩-২৭ ১১:১৫:৩৮


bandgladesh_army_breifingসিলেটের শিববাড়িতে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ২ জঙ্গি নিহত হয়েছে। সেখানে এখনো অভিযান চলছে। ওই বাড়িতে আরো জঙ্গি জীবিত আছে।

দক্ষিণ সুরমা এলাকার শিববাড়ির পাঠানপাড়ার আতিয়া মহল ঘিরে অভিযানের তৃতীয় দিন রোববার বিকেলে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান।

তিনি বলেন, দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। তবে ভেতরে এক বা একাধিক জঙ্গি জীবিত রয়েছে। কতো জন পুরুষ বা কতো জন নারী, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

ফখরুল আহসান বলেন, ‘ভেতরে যেসব জঙ্গি ছিল, যারা ছিল তারা প্রশিক্ষিত, কীভাবে গ্রেনেড প্রতিহত করা যায়, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে কিভাবে বাঁচা যায়, এগুলো জানে তারা।’

তিনি বলেন, অভিযান চলাকালে ভবনের ভেতরে একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয় ভেতরে। কিন্তু এই গ্রেনেড জঙ্গিরা কমান্ডোদের দিকে পাল্টা ছুড়ে মারে।

ফখরুল আহসান বলেন, ঘরের বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরক ফিট করে রেখেছে জঙ্গিরা। এতে বুঝা যায়, জঙ্গিরা জানে, কীভাবে নিজেদের আবাসস্থল দুর্গম করে রাখতে হয়।

তিনি বলেন, ‘যেভাবে তারা বিস্ফোরক লাগিয়ে রেখেছে, এজন্য অভিযান চালানো ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এজন্য সময় বেশি লেগেছে। তবে আমাদের প্রাথমিক যে টার্গেট ছিল, ভেতরে থাকা সাধারণ লোকদের সরিয়ে আনা, তাতে কমান্ডোরা সফল হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, নিচতলার সিঁড়ির দিকে বেশি পরিমাণে বিস্ফোরক লাগিয়ে রাখে জঙ্গিরা। তাদের ধারণা ছিল, অভিযান নিচতলা থেকে শুরু হয়ে ওপরে যাবে। যে জন্য তারা নিচে বিস্ফোরক লাগায়। যখন কমান্ডোরা ভবনে ঢুকে বিষয়টি দেখতে পায়, তখন উল্টোভাবে অভিযান শুরু করেন কমান্ডোরা। পাঁচ তলা থেকে শুরু হয় অভিযান। একটা থেকে আরেকটা ফ্লোরে অভিযান হয়। এভাবে দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে আটকা পড়াদের উদ্ধার করা হয়। নিচতলায় অভিযানের সময় সিঁড়ি ব্যবহার না করে জানালার গ্রিল কেটে নিচতলায় থাকা সাধারণ লোকদের উদ্ধার করা হয়।

ফখরুল আহসান বলেন, ‘অভিযানে রকেট লাঞ্চার দিয়ে ভবনে বড় গর্ত করা হয়। কিছু বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তাতেও প্রশিক্ষিত জঙ্গিদের কাবু করা যাচ্ছিল না। এ অবস্থায় টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। এ শেলের প্রতিক্রিয়ায় ভেতরে জঙ্গিরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। দুজন নিহত হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত দেখতে পেয়েছি। একজনের দেহে সুইসাইড ভেস্ট লাগানো ছিল। দুজনকে দৌড়ানো অবস্থায় দেখে আমাদের কমান্ডোরা ফায়ার করেছে। তারা পড়ে যাওয়ার পর একজন সুইসাইড ভেস্ট বিস্ফোরণ ঘটায়।’

তিনি বলেন, ‘লাশ দুটি ভেতরেই রয়েছে। দুজনই পুরুষ। ভেতরে এখনও এক বা একাধিক জঙ্গি রয়েছে, এটা নিশ্চিত। তবে কয়জন পুরুষ বা কয়জন মহিলা আছে, তা নিশ্চিত নয়।’

জঙ্গিদের কাছে স্মল আর্মস, রূপান্তরিত বিস্ফোরক (আইইডি), বিস্ফোরক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেগুলো দিয়ে তারা পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেছে।

গতকালের বাইরে হামলার সাথে ভেতরের জঙ্গিতের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট অপারেশনের জন্য এসেছি। বাইরের বিষয়টি পুলিশ বা অন্য সংস্থাগুলো বলতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘অভিযান চলছে। অভিযান শেষ করেই কমান্ডোরা ফিরবে। তবে অভিযান শেষ করতে কতোদিন বা কতো সময় লাগবে তা বলা যাচ্ছে না।