চুক্তি যাই করুন, প্রকাশ করুন: সরকারকে মওদুদ

প্রকাশ: ২০১৭-০৪-০৮ ১৭:৫৬:৪৫


Mududবাংলাদেশের স্বার্থহানী হয় ভারতের সঙ্গে এমন কোনো চুক্তি না করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। সরকারকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, ‘চুক্তি বা সমঝোতা একই কথা। কিন্তু যাই হোক না কেন তা জনগণের সামনে প্রকাশ করুন। কারণ চুক্তির মধ্যে কি আছে, কোন শর্তে চুক্তি হচ্ছে ১৬ কোটি মানুষের তা জানার অধিকার আছে।’

শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি ও জঙ্গিবাদ দমনে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।

গতকাল চারদিনের সফরে ৩৫১ জন সফরসঙ্গী নিয়ে ভারত যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে ভারতের সঙ্গে সাইবার নিরাপত্তা, প্রযুক্তি, পরমাণু বিদ্যুৎ, বিজ্ঞান ও প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৩৫টির মতো চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার কথা। ভারতের সঙ্গে কী কী চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে তা জানানোর জন্য বিএনপি নেতারা আগে থেকে দাবি জানিয়ে আসছিল।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর ও চুক্তির প্রসঙ্গে তুলে মওদুদ বলেন, ‘শুনতে পাচ্ছি অনেক চুক্তি এবং সমাঝোতা স্মারক হবে। প্রতিরক্ষার জন্য সমঝোতা হবে। প্রতিরক্ষা চুক্তি বলেন আর সমঝোতা বলেন একই কথা। কিন্তু এতে কী স্বাক্ষর হবে আমরা জানি না। তবে সরকারকে বলবো, এমন কিছু করবেন না যাতে দেশের স্বার্থহানী হয়। দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো চুক্তি দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।’

প্রতিরক্ষা চুক্তির কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শুনতেছি ভারত বাংলাদেশকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে। যার বেশিরভাগ ভারত থেকে সামরিক সরঞ্জাম কিনতে এই ঋণ দেয়া হবে। কোনো টেন্ডার হবে না। ভারত যে মূল্যে দেবে সেই মূল্যে কিনতে হবে। আমরা আশা করবো এমন কোনো শর্ত সমঝোতা স্মারকে থাকবে না যাতে সেনাবাহিনী আরো দুর্বল হয়ে পড়ে। তাদের দক্ষতা, সক্ষমতা কমে যায় এমন কোনো শর্ত সমঝোতায় থাকা উচিত হবে না।’

জঙ্গিবাদ নিয়ে মওদুদ বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র ও রাজনীতি না থাকায় জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে। বিএনপি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরোধী। আমরা বলতে চাই, জঙ্গিবাদ নির্মূলে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। বিএনপিকে ছাড়া তা সম্ভব না।’

দেশে ১০ বছর ধরে রাজনৈতিক শূন্যতা চলছে এমন দাবি করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠনেতা বলেন, ‘সকলেই জানি ২০০৮ ও ২০১৪ সালে কীভাবে নির্বাচন হয়েছে। এসব নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার ক্ষমতায় না আসায় জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়েছে।’ তিনি বলেন, বিএনপির নিবন্ধন চলে যাবে। নিবন্ধন থাকুক না থাকুক সেটা কোনো ইস্যু নয়।মানুষের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া সবথেকে বড় ইস্যু।

মওদুদ আহমদ বলেন, ‘জঙ্গিবাদ দমনের নামে নিরীহ মানুষ ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। বিষয়টি দেশের সকল মানুষের মনে ভীষণভাবে দাগ কেটেছে।’

নির্বাচন কমিশন তাদের নিরপেক্ষতা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে মওদুদ বলেন, ‘কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনেক অনিয়ম হয়েছে। তারা এমন কিছু করতে চেয়েছিলো যাতে ভোটাররা ভোট দিতে না যায়। কিন্তু কুমিল্লার মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে কত প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও ভোট প্রয়োগ করা যায়। প্রমাণ হয়েছে বিএনপি সবচেয়ে জনপ্রিয় দল।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ড. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সাম্যবাদী দলের কমরেড সাঈদ আহমেদ প্রমুখ।