চাকরি নিয়ে চিন্তিত ৩০ হাজারের বেশি ট্যানারি শ্রমিক

প্রকাশ: ২০১৭-০৪-১৮ ১৫:১৫:৩৬


Tanaryহাজারীবাগের বন্ধ হওয়া ট্যানারির ৩০ হজারের বেশি শ্রমিক তাদের চাকরি নিয়ে চিন্তিত। কারখানা বন্ধ হওয়ার পর এসব কারখানা আর হাজারীবাগে চালু হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু অল্প কিছু ট্যানারি বাদে সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতেও কাজ শুরু হয় নি। প্রায় ৫০টি ট্যানারি স্বল্প পরিমাণে প্রাথমিক কাজ (ওয়েট ব্লু) চলমান রাখলেও গ্যাসের অভাবে অন্যান্য কার্যক্রম (ক্রাশ্ড ও ফিনিশিং) চালাতে পারছে না। মালিকপক্ষও শ্রমিকদের ফের কাজে নেয়ার বিষয়ে নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের মধ্যে হতাশা তৈরি হচ্ছে।
রাজধানীর লালবাগে সেগুন কমিউনিটি সেন্টারে এক আলোচনা সভায় এ প্রসঙ্গটি তোলেন ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির দায় বিসিক কিংবা মালিকপক্ষ যারই হোক না কেন- সংকটে শ্রমিকরা। আমাদের না খেয়ে মরার উপক্রম হয়েছে। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বাড়ি চলে যেতে বলছে। এক সময় মালিকপক্ষের দাবি ঠিকই পূরণ হবে। তাদের ব্যাংকের ঋণও হয়তো মওকুফ হবে। অথবা অন্যান্য সুবিধা ঠিকই পাবে। কিন্তু শ্রমিকের কী হবে?
হাজারীবাগে ট্যানারি বন্ধ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মালিকপক্ষের দেয়া ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নানামুখি তৎপরতার অংশ হিসেবে হাইড এন্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ও হাইড এন্ড স্কিন রিটেইলারস অ্যাসোসিয়েশন সোমবারের ওই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন  বাংলাদেশ হাইড এন্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী দেলোয়ার হোসেন।
মতবিনিময় সভা শেষে আবুল কালাম আজাদ ইত্তেফাককে বলেন, দিন শেষে শ্রমিকরাই ভুক্তভোগী। হাজারীবাগে গ্যাস-বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে শ্রমিকরা। মালিকরাও তাদের মূল অস্ত্র শ্রমিকদের দিকে তাক করে রাখছে।
তিনি বলেন, হাজারীবাগে ৬৫ শতাংশ শ্রমিক অস্থায়ীভিত্তিতে কাজ করে। তাদের কোন স্থায়ী নিয়োগপত্র দেয়া হয় না। শ্রম আইনে থাকা বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত করতে স্থায়ী করা হয় না বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমাদের দাবি হলো, সেখানে শ্রমিকদের চাকরির অভিজ্ঞতার সনদ আদায় করা, যাতে তারা সাভারে কাজ পায়। এটিও মালিকপক্ষ দিতে চাইছে না।
এদিকে, সভায় চামড়া শিল্প রক্ষা ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ খাত সংশ্লিষ্ট নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বক্তারা সাভারে চামড়া শিল্পনগরীতে দূষণ বন্ধ করার দাবি জানান। এ জন্য সেখানে বিশ্বমানের কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) স্থাপনের দাবিও জানান। তারা বলেন, সাভারে দুষণের দায় মালিকপক্ষকে দেয়া যাবে না। সেই সঙ্গে তাদের দেয়া ৯ দফা দাবিও স্মরণ করিয়ে দেন। অন্যথায় আগামী ২৮ এপ্রিলের পর কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।