টানা দু’বছর উন্নয়নশীল দেশগুলোর রেমিটেন্স প্রবাহে ধস: বিশ্বব্যাংক
প্রকাশ: ২০১৭-০৪-২২ ১৫:৩৭:৫৩
উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবাসী আয়ের প্রবাহে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে বড় ধরণের ধস দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এমন অবস্থা গত তিন দশকে আর দেখা যায়নি। অভিবাসন ও উন্নয়ন-বিষয়ক হালনাগাদ নিয়ে সংস্থাটির সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠক চলাকালে বৃহস্পতিবার ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ আগের বছরের চেয়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ৪২ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে নেমেছে। ২০১৫ সালে এই দেশগুলোর প্রবাসী আয় ছিল ৪৪ হাজার কোটি ডলার। এ ছাড়া ২০১৬ সালে বিশ্বজুড়ে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ আগের বছরের চেয়ে ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে ৫৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে নেমেছে। ২০১৫ সালে যা ছিল ৫৮ হাজার ২০০ কোটি ডলার।
ভূ-মধ্যসাগরীয় দেশগুলো ও রুশ ফেডারেশনে তেলের দরপতন ও দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর প্রবাসী আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। পাশাপাশি ইউরোপে দুর্বল প্রবৃদ্ধির কারণে আফ্রিকার উত্তর ও সাহারা মরু অঞ্চলের দেশগুলোর প্রবাসী আয় কমেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, গত বছর বাংলাদেশে রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়) কমেছে প্রায় ১১ দশমিক ১ শতাংশ। সংস্থাটির পূর্বাভাস, চলতি বছরে প্রবাসী আয়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি থাকবে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী আয়ের অবদান মোট জিডিপির ৬ শতাংশের মতো, যা ভারতের ক্ষেত্রে ২ দশমিক ৯ শতাংশ। আর জিডিপিতে প্রবাসী আয়ের অবদান সবচেয়ে বেশি নেপালে, ২৯ দশমিক ৭ শতাংশ।
২০১৬ সালে পাশের দেশ ভারতে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এলেও আগের বছরের চেয়ে কমেছে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ। চলতি বছর দেশটিতে প্রবাসী আয় এসেছে ৬ হাজার ২৭০ কোটি ডলারের। ২০১৫ সালে এই আয় ছিল ৬ হাজার ৮৯০ কোটি ডলার। ভারতের পর সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয়গ্রহীতা দেশ হলো চীন, গত বছর দেশটির প্রবাসী আয় কমেছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে ফিলিপাইন, পাকিস্তান ও মেক্সিকোতে প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল ২০১৬ সালে। এ ছাড়া বিশ্বের শীর্ষ প্রবাসী আয়গ্রহীতা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো নাইজেরিয়া। ২০১৬ সালে দেশটির প্রবাসী আয় কমেছে ১০ শতাংশ। মিসরে প্রবাসী আয় ৯ দশমিক ৫ শতাংশ হারে কমেছে।
বিশ্ব ব্যাংকের গ্লোবাল ইন্ডিকেটরস গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রিতা রামালহো বলেন, ‘উন্নয়নশীল বিশ্বে লাখো পরিবারের আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস প্রবাসী আয়। প্রবাসী আয় প্রবাহ কমে গেলে এসব পরিবারের স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা ও যথাযথ পুষ্টির চাহিদা পূরণের ক্ষমতায় মারাত্মক প্রভাব পড়বে।’