শ্রমিকের ক্ষতিপূরণে নীতিমালা হয়নি এখনও
প্রকাশ: ২০১৭-০৪-২৪ ১১:৫৪:০৩
ভয়াবহ রানা প্লাজা দুর্ঘটনার চার বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের আশুলিয়ায় ৯ তলা রানা প্লাজা ধসে ১১শ’ এর বেশি শ্রমিক নিহত হন। আহত হন আরও প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক। বিশ্বের শিল্প ইতিহাসে ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনা কাঁপিয়ে দেয় বিশ্ব বিবেক। ওই দুর্ঘটনার পর নানামুখী চাপে শিল্প শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের একটি নীতিমালা করার প্রতিশ্রুতি দেয় সরকার। কিন্তু এখনও আলোর মুখ দেখেনি ওই নীতিমালা। ফলে কোন শ্রমিকের মৃত্যুর পর ক্ষতিপূরণের পরিমাণ এক লাখ টাকাই রয়ে গেছে। শ্রমিক অধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কথা বলা হলেও এ বিষয়ে কার্যত অগ্রগতি নেই।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিল্স) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ নীতিমালা না হওয়ায় এ বিশাল সংখ্যক শ্রমিক প্রতিদিন এক লাখ টাকা জীবনের দাম নিয়ে কাজে যায়। আমরা দাবি জানিয়েছিলাম, আইএলও’র মানদণ্ড অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের মানদণ্ড নির্ধারণ হোক। এ বিষয়ে হাইকোর্টের একটি আদেশের ভিত্তিতে এম এম আকাশের নেতৃত্বে গঠিত উপ কমিটি একটি সুপারিশে জমা দেয়। সেখানে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ টাকা করার কথা বলা হয়েছিল।
যোগাযোগ করা হলে শ্রম সচিব মিকাইল শিপার বলেন, হাইকোর্ট থেকে এখনো নির্দেশনা পাই নি। এ জন্য ক্ষতিপূরণের নীতিমালা এখনও হয় নি। তবে আইএলও’র মানদণ্ড অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, মালিকরা এখনও ওই পরিমাণ অর্থ দিতে সক্ষম নন। তবে তিনি বলেন, শ্রমিকের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়েছে। এতে কোন শ্রমিক মারা গেলে কল্যাণ তহবিলের ৩ লাখ টাকা এবং ২ লাখ টাকার বীমাসহ ৫ লাখ টাকা পাবেন।
তবে সৈয়দ সুলতান বলেন, কল্যাণ তহবিল আর ক্ষতিপূরণ এক করা যাবে না। কেননা ক্ষতিপূরণ মালিকের দায় এবং শ্রমিকের আইনি অধিকার। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ক্রেতাগোষ্ঠীর আর্থিক সহায়তায় রানা প্লাজার নিহত শ্রমিকের পরিবার গড়ে ১০ লাখ টাকা করে পেয়েছেন। আহতরাও তিন থেকে চার লাখ টাকা করে পেয়েছেন। তবে এটি সহায়তা। ক্ষতিপূরণ নয়।
সূত্র: ইত্তেফাক