দেশজুড়ে ঝড়ের সঙ্গে বজ্রপাত, নিহত ১৬

প্রকাশ: ২০১৭-০৫-১০ ১৩:০৩:৫০


Bajroমঙ্গলবার সারা দেশে ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে ব্যাপক বজ্রপাত হয়েছে। বজ্রপাতের আঘাতে মোট ১৬ জন নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আরো পাঁচজন আহত হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিত্সা দেয়া হচ্ছে।সংবাদদাতা ও  প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
গাইবান্ধা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বজ্রপাতে নব চন্দ্র (২৭) নামে এক রিকশাভ্যান চালক মারা গেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কামদিয়া ইউনিয়নের পিয়ারগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নব চন্দ্র ওই গ্রামের প্রেমা চন্দ্রের ছেলে। দুপুরে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে নব চন্দ্র ভ্যান চালিয়ে কামদিয়া বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন।
বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): উপজেলার ছলিমাবাদ ইউনিয়নের পাইকারচর গ্রামের মধ্যপাড়ার মো. আক্কাছ মিয়ার ছেলে মো. শাহাব উদ্দিন (৩৫) নামে এক ব্যক্তি গতকাল বজ্রপাতে মারা গেছেন । জানা গেছে, দুপুর সাড়ে বারটায় ট্রাক্টর নিয়ে জমি চাষ করার জন্য শাহাব উদ্দিন মাঠে গেলে সেখানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু ও কালীগঞ্জ উপজেলায় মঙ্গলবার দুপুরে বজ্রপাতে তিনজন নিহত হয়েছেন। তারা হচ্ছেন হরিণাকুন্ডুর পোলতাডাঙ্গা গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে মিরাজ হোসেন (৫০) ও আমেরচারা গ্রামের ইমদাদুল হকের ছেলে মোঃ আমানুল্লাহ (৪০)। অপরজন হচ্ছেন কালীগঞ্জ উপজেলার মোল্লাডাঙ্গা গ্রামের মো. ফসিয়ার রহমানের স্ত্রী আঞ্জুরা বেগম (৪৫)।
রৌমারী (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বজ্রপাতে আনোয়ার হোসেন (৪২) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে বাবু মিয়া (৯) নামের আরো এক শিশু। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের আমবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আনোয়ার হোসেন ওই সময় হলহলিয়া নদীতে মাছ ধরছিলেন। পাশে দাঁড়িয়ে ছিল বাবু মিয়া।
সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মঙ্গলকাটা গ্রামের ভৈষার পাড়ে বজ্রপাতে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সাইফুল (১২) নামের একজন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাইফুল মিয়া ও ডালিম মিয়া (২৭) বাড়ি পাশের সবজি খেতে কাজ করছিলেন হঠাত্ ব্রজপাতে দুই ভাই গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে সাইফুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা।
ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে শহরের জিলাস্কুলে ও ধোবাউড়া উপজেলায় বজ পাতে স্কুলছাত্র, কৃষকসহ তিনজন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের জিলাস্কুল মাঠে ফুটবল খেলার সময় জিলা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র তামিম (১৪) বজ পাতে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ দিকে এদিন জেলার ধোবাউড়া উপজেলায় পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নের রাওতি গ্রামে দুই কৃষক বজ পাতে নিহত হয়েছে। এরা হচ্ছে রাওতি গ্রামের এংরাজ মিয়া (৪০) ও আরসাদ মিয়া (৪৫)।
গোপালদী বাজার (নারায়ণগঞ্জ): আড়াইহাজারে বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ছোট মনোহরদী ও মাহমুদপুর ইউনিয়নের মরাদাসদী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। মাহমুদপুর ইউনিয়নের মরদাসাদী গ্রামের সুবেদা দুপুর ১২টার দিকে তার বাড়ীর সামনের বসে কাজ করছিলেন। এই সময় হালকা ঝড় ও বৃষ্টি হচ্ছিল। ঝড়ের সময় হঠাত্ বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ছোট মনোহরদী গ্রামে আফাজ উদ্দিন এর ছেলে জামির হোসেন (৪২) বাড়ির সামনে খালে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন। অন্যদিকে, বিশনন্দী ইউনিয়নের বিশনন্দী গ্রামের ইসহাক মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা (৪০) বজ্রপাতে গুরুতর আহত হয়। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামে মঙ্গলবার দুপুরে কালবৈশাখী ঝড়ের সময় বজ্রপাতে একজন মহিলা মারা গেছেন এবং মানিকনগর এলাকার মেঘনার পাড়ে বালুবাহী বলগ্রেডের দুই শ্রমিক আহত হয়েছে। নিহতের নাম মোসাম্মত্ খোদেজা বেগম (৩০)। তার বাড়ি শ্রীঘর বণিকপাড়ায়। বাড়ির পাশে কৃষিজমিতে গরুর ঘাস কাটার কাজ করছিলেন খোদেজা হঠাত্ কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয় সেই সময় বিকট শব্দে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। মানিকনগরের আহত শ্রমিকরা হচ্ছেন মো. আজিজুর রহমান (৩০) ও মো. সামছু মিয়া (৪০) তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানার দৌলতপুর গ্রামে।
হরিনাকুণ্ডু (ঝিনাইদহ): ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলায় বজ্রপাতে পার্বতীপুর গ্রামের আমান উল্লাহ (৪৫) ও পুলতাডাঙ্গা গ্রামের মিরাজ (৩৫) নামে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আমান উল্লাহ পার্বতীপুর গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে ও মিরাজ পুলতাডাঙ্গা গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে।
দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা): চুুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কানাইডাঙ্গা ও কুতুবপুর মাঠে বজ্রপাতে স্কুল ছাত্র আব্দুল মালেক (১০) ও কৃষক আব্দুস সামাদ (২৫) নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে পৃথক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল মালেক উপজেলার কানাইডাঙ্গা গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে এবং কানাইডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্র। আব্দুস সামাদ একই উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে।