‘ধর্ষণের পর দুই তরুণীকে গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়ায় সাফাত ও নাঈম’

আপডেট: ২০১৭-০৫-১৬ ১১:০৩:২১


safat_n_meaim
একের পর এক ঘটনা উন্মোচিত হচ্ছে বনানীর সেই রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের পার্টির। সেদিন ধর্ষণের পর গর্ভধারণ রোধে দুই তরুণীকে জোর করে গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়ায় সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফ।এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় পুরান ঢাকার নবাবপুর থেকে সাফাতের গাড়িচালক ও দেহরক্ষীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১০। গ্রেফতারের পরপরই জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে রেইনট্রি হোটেলে সেই রাতের চঞ্চল্যকর এসব তথ্য দেন সাফাতের ব্যক্তিগত গাড়িচালক বিল্লাল।

গাড়িচালক বিল্লাল জানায়, জন্মদিনের পার্টিতে দুই তরুণীকে সেদিন রাতভর ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি দুই ধর্ষক সাফাত ও নাঈম। ধর্ষণের পর গর্ভধারণ রোধে দুই তরুণীকে জোর করে জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ খাওয়ানো হয়।

এর আগে গত রবিবার ধর্ষণের আগে ভিডিও করার কথা স্বীকার করে সাফাত আহমেদ গোয়েন্দাদের জানিয়েছিল, অভিযোগকারী দুই ছাত্রীর সঙ্গে আসা শাহরিয়ার নামে এক চিকিৎসককে মারধরের দৃশ্য তারা ভিডিও করেছে। আর ধর্ষণ করার আগে গাড়ি চালক বিল্লাল হোসেন ওই দুই ছাত্রীর সঙ্গে তাদের ওঠাবসার দৃশ্য ভিডিও করেছেন। তবে এর বাইরে ধর্ষণ করার সময় সেই দৃশ্য গাড়িচালক ভিডিও করেছে কি না তার জানা নেই।

যদিও রেইনট্রি হোলেটের ৭০১ নম্বর কক্ষে মোবাইল ফোনে ভিডিও করার দৃশ্য এখনও পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি।

জিজ্ঞাসাবাদে সাফাত আরো জানান, বন্ধু নাঈম আশরাফের মাধ্যমেই সুন্দরী মডেলদের ডাকতেন তিনি। শুধু তাই নয়, এই বন্ধুর মাধ্যমে তিনি সুন্দরী তরুণীদেরও সংগ্রহ করতেন। এরপর কোনো না কোনো হোটেলে পার্টির আয়োজন করতেন। আর সেখানেই রাতভর ফূর্তিতে মেতে উঠতেন তিনি। এসব পার্টি চলত গভীর রাত পর্যন্ত। কখনও কখনও ভোরের আলোয় ভাঙত তাদের সেই মিলনমেলা।

তিনি আরও জানান, সুন্দরী মডেল-আইটেম গার্লরা ছাড়াও মাঝে মধ্যে বিদেশি অতিথিদের আনা হয় এসব জলসায়।

এর আগে প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে সাফাত বাংলাদেশের সিনেমা জগতের ৪ জন নায়িকার সঙ্গে নিয়মিত অবৈধ সম্পর্ক থাকার কথা জানান। যাদের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে তিনি অনৈতিকভাবে মেলামেশা করতেন। এছাড়া প্রায় এক ডজন বান্ধবীর নাম ফাঁস করেছেন, যাদের সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্কের কথাও খোলামেলা স্বীকার করেছেন। এ সব বান্ধবীদের মধ্যে উঠতি কয়েকজন মডেলও রয়েছেন।

তিনি আরও জানান, প্রতি রাতেই তিনি ও তার বন্ধুরা পার্টি করতেন। পাঁচ তারকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে আয়োজিত এসব পার্টিতে বন্ধু-বান্ধবীরা হাজির থাকতেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ বন্ধুর সঙ্গে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণী। ওই ঘটনায় ৬ মে রাজধানীর বনানী থানায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ (সিরাজগঞ্জের আবদুল হালিম) ও সাদমান সাকিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তারা।