প্রাক্তন পররাষ্ট্র সচিব ফারুক চৌধুরী আর নেই

প্রকাশ: ২০১৭-০৫-১৭ ১৩:২৫:৩৫


Farukপ্রাক্তন পররাষ্ট্র সচিব ও রাষ্ট্রদূত ফারুক আহমেদ চৌধুরী আর নেই। বুধবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।

তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি হৃদরোগ, কিডনি জটিলতা ছাড়াও বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ।

আজ বাদ আসর ধানমন্ডির ৭ নম্বর রোডে বাইতুল আমান জামে মসজিদে তার নামাজে জানাজা হবে। এর আগে দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার মরদেহ নেওয়া হবে। সেখানেও তার জানাজা হওয়ার কথা রয়েছে।

অভিজ্ঞ কূটনীতিক ফারুক আহমেদ চৌধুরী ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত লন্ডনে বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার ছিলেন। ১৯৭৬ সালে আবুধাবিতে, ১৯৭৮ সালে বেলজিয়ামে, পরবর্তীতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

১৯৮২ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওআইসির চতুর্দশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলন এবং ১৯৮৫ সালে প্রথম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের সমন্বয়ক ছাড়াও তিনি জাতিসংঘ এবং অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংস্থায় দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

১৯৮৪ সালে পররাষ্ট্র সচিব নিযুক্ত হন ফারুক আহমেদ চৌধুরী। এরপর ১৯৮৬ সালে তিনি ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার নিযুক্ত হন। ১৯৯২ সালে অবসরে যাওয়ার আগে পর্যন্ত সেখানে দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

ফারুক আহমেদ চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৪ সালের ১৪ জানুয়ারি সিলেট জেলার করিমগঞ্জে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৫ সালে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। এরপর ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন।  সে সময় পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) থেকে মাত্র দুজনকে মেধার ভিত্তিতে এই ক্যাডারে সুযোগ দিত।

একজন লেখক হিসেবেও ফারুক চৌধুরীর সুনাম রয়েছে। সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক ছিল তার ছোটবেলা থেকেই। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে- দেশ দেশান্তর, প্রিয় ফারজানা, নানাক্ষণ নানাকথা, সময়ের আবর্তে ইত্যাদি।

তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘জীবনের বালুকাবেলায়’ কূটনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত। বাংলা গদ্যসাহিত্যেরও এটি অনন্য সংযোজন। এই বইয়ের জন্য ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।