১৪ মাস পরেও ধরাছোঁয়ার বাইরে খুনিরা
প্রকাশ: ২০১৭-০৫-২০ ১৩:১২:১৫
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের ১৪ মাস অতিক্রান্ত হলো আজ শনিবার। কিন্তু দীর্ঘ এ সময়ে তনুর ঘাতকরা শনাক্ত কিংবা গ্রেফতার হয়নি। এভাবে যতই দিন যাচ্ছে, সুষ্ঠু তদন্ত আর বিচার পাওয়া নিয়ে তনুর বাবা-মা ও স্বজনদের মাঝে বাড়ছে সংশয়। এদিকে তদন্তের অগ্রগতি নিয়েও সাংবাদিকদের নিকট কোনো মুখ খুলছেন না মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
গতবছরের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি জঙ্গল থেকে কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তার বাবা ও কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর গতবছরের ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি-কুমিল্লা। ওই বছরের মে মাসে তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজনের শুক্রাণু পাওয়ার কথা এবং হত্যার আগে তনুকে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে সিআইডি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল।
আক্ষেপ প্রকাশ করে তনুর স্বজনরা জানান, ‘ঘটনার পর ঘাতকদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংগঠন, গণজাগরণ মঞ্চ ও মানবাধিকার সংগঠনসহ প্রতিবাদী মহল দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিল। কিন্তু প্রতিবাদের পাশাপাশি মামলার তদন্তের গতিও ধীরে ধীরে যেন থেমে গেছে।’ মামলার অগ্রগতির বিষয় জানতে চেয়ে গত ২০ মার্চ সিআইডিকে ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপারের বরাবর স্মারকলিপি দাখিল করেছিল গণজাগরণ মঞ্চ-কুমিল্লার নেতৃবৃন্দ। এই মামলার অগ্রগতি জিজ্ঞাসাবাদে আটকে আছে। তনুর লাশের দুই দফা ময়নাতদন্ত, মামলার তদন্তকারী সংস্থা ও কর্মকর্তা পরিবর্তন হলেও এ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই।
এদিকে তনুর মৃত্যুদিবস উপলক্ষে আজ শনিবার জেলার মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের বাড়িতে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন তনুর মা আনোয়ারা বেগম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন,‘সিআইডি আজ পর্যন্ত মামলার তদন্তের কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। আমরা তাদের তদন্ত কার্যক্রমে হতাশ হয়ে পড়েছি। মেয়ের শোকে কেঁদে কেঁদে এখন চোখের পানিও যেন শুকিয়ে গেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি-কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালালউদ্দীন আহমেদ বলেন, মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই একথা বলা যাবে না, তবে তদন্তাধীন এ মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না।