ঈদে ত্বকের সতেজতায় ঘরোয়া ফ্রুট ফেসিয়াল

আপডেট: ২০১৭-০৬-২৪ ১৩:৩১:২১


bangla-fruit-facialত্বকের সতেজতায় ফেসিয়ালএর কোনও জুড়ি নেই । ফেসিয়াল করার জন্য আমরা কত কেমিক্যাল ইউজ করে থাকি যা আমাদের ত্বকের জন্য অনেক ক্ষতিকারক ।ফ্রুট ফেসিয়ালের সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে অন্য সব ফেসিয়ালের চেয়ে অনেক কম সময়ে করা যায় এবং এর কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। প্রচন্ড গরমে বাইরে বের হলে ধুলাবালি, রোদের তাপ, কালো ধোঁয়া ইত্যাদি মিলে ত্বককে অনেক মলিন করে তোলে। ফলে বাসায় ফিরে মুখ ধোয়ার পর যত কিছুই ব্যাবহার করা হোক না কেনো চেহারায় সেই সজীব ভাবটা আর থাকে না। বিশেষ করে এই গরমে কোন পার্টি বা বিয়ের আগে যদি চেহারার এমন নিষ্প্রাণ অবস্থা হয় তাহলে কিছুতেই সেই সব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছে করে না। আবার প্রতিদিনের এই ব্যস্ততম জীবনের ভীড়ে হয়ত পার্লারে গিয়ে নিয়মিত ফেসিয়াল করাও হয়ে উঠে না। কিন্তু তাই বলে তো আর ঘরে বসে থাকা চলে না। কিন্তু চাইলে এই সময় আপনি বাসায় বসে মৌসুমি ফল দিয়ে ফেসিয়াল করে ত্বকের লাবণ্য ও সজীবতা ফিরিয়ে আনতে পারেন। জেনে নিন ফ্রুট ফেসিয়ালের কয়েকটি পদ্ধতি ।

আপনাকে যা যা করতে হবে:
ত্বকের সতেজতায় ফ্রুট ফেসিয়ালফ্রুট ফেসিয়ালের জন্য আপনি আপনার ত্বকের সাথে মানানসই কিছু ফল পছন্দ করতে পারেন। তবে কিছু কিছু ফল আছে যা সব ধরনের ত্বকেই বেশ মানিয়ে যায় যেমনঃ তরমুজ, স্ট্রবেরী, পাকা পেপে, কলা, শসা ইত্যাদি।

তাই প্রথমে যেকোনো ভালো মানের ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এরপর চুলে কোনো ক্লীপ দিয়ে পেছেন দিকে ভালোভাবে বেধে নিতে হবে। এরপর টোনার অথবা গোলাপ জলে তুলা ভিজিয়ে মুখের ময়লা পরিষ্কার করে নিতে হবে। এবার একটি বড় পাত্রে কুসুম গরম পানি নিয়ে এতে এক টুকরো লেবু চিপে নিন। এবার একটা বড় তোয়ালে দিয়ে মাথা মুড়িয়ে ঐ পানি থেকে ভাপ নিতে হবে যাতে করে মুখের পোর গুলো খুলে যায়। এভাবে ১ মিনিট করে সম্পুর্ন ১০ মিনিট ভাপ নিয়ে একটু বিরতি দিয়ে হালকা স্কারব দিয়ে ঘষে মুখ ধুয়ে নিচের যেকোনো একটি ফ্রুট ফেস প্যাক লাগিয়ে নিন।

সাধারণত ফ্রুট ফেসিয়াল সপ্তাহে ১ দিন করা যায়। আপনি চাইলে মাস্ক আগে বানিয়ে ফ্রীজে রেখে দিতে পারেন। ফ্রুট মাস্কগুলো ফ্রীজে এক সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকে।

টমেটোর মাস্কঃ
এই মাস্কটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। বিশেষ করে যাদের ত্বকে রোদে পোড়া দাগ আছে তারা এটি ব্যাবহার করতে পারেন। একটা পাকা টোমেটো কেটে ভালোভাবে ব্লেন্ড করতে হবে। এবার এর জেলোটা দিয়ে প্রথমে মুখ ঘষে নিতে হবে। এরপর ব্লেন্ড করা অংশটা মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। এতে ত্বকের মৃত কোষ গুলো বের হয়ে যায় এবং ত্বক অনেক উজ্জ্বল হয়।

ফ্রুট ফেসিয়াল
ঘরোয়া ফ্রুট ফেসিয়াল
আপেলের মাস্কঃ
আপেলের এই মাস্কটি সব ধরনের স্কিনের জন্য অনেক ভালো হয়। প্রথমে অর্ধেক গ্রীণ আপেল কেটে নিন। এবার এর সাথে ১ চামুচ মধু, ১ টি ডিমের কুসুম ও ২ ফোটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে ব্লেন্ড করুন যতক্ষন পর্যন্ত না এটি ফোমি হয়ে যায়। এবার এটি চোখের চারপাশ বাদে সম্পুর্ন মুখে লাগিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। আরপর কুসুম গরম পানিতে ঘষে ঘষে তুলে ফেলুন। এতে মাত্র কয়েক দিনেই আপনার মুখের সজীবতা ফিরে আসবে।

স্ট্রবেরীর মাস্কঃ
এই ফলটি সারা বছর কম বেশী পাওয়া যায়। এটী খেতেও যেমন সুস্বাদু তেমনি রূপচর্চায়ও এর বিশেষ ভূমিকা আছে। ২ টা স্ট্রবেরী ভালোভাবে পেষ্ট করে নিন। এবার এটি সম্পূর্ন মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার কুমুম গরম পানি দিয়ে আলতো করে ঘষে মুখ ধুয়ে নিন।

কলার মাস্কঃ
একটা পাকা কলা ভালোভাবে পেষ্ট করে নিন। এবার এর সাথে ১ চামুচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে তার উপর নরম পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর মাস্ক টি শুকিয়ে গেলে হাত দিয়ে আলতো করে টেনে তুলে নিন। এবার ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে আয়নার নিজের চেহারার পার্থক্যটা অনুভব করুন।

পাকা আমের মাস্কঃ
যাদের ত্বক অনেক সেন্সিটিভ তাদের জন্য পাকা আম অনেক উপকারী একটা উপকরন। একটা পাকা আম ভালোভাবে চটকে মুখে লাগিয়ে নিন। এবার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।

তরমুজের মাস্কঃ
এক কাপ তরমুজ নিয়ে এটি চামুচ দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এবার এর সাথে আধা চামুচ মধু মিশিয়ে আবার ফেটে নিন। আবার এটি আপনার সম্পুর্ন মুখে লাগিয়ে নিন। যদি মিশ্রণটি খুব বেশী পাতলা হইয়ে যায় তাহলে এর উপর একটি পরিষ্কার নরম কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন। এবার ২০ মিনিট পর কাপড়টি আলতো করে টেলে তুলে কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।