ঘুমানোর সময় মোবাইল যেভাবে রাখবেন

প্রকাশ: ২০১৭-০৯-০৮ ১১:২৯:৫৮


sleepআমাদের দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল ফোন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মোবাইল ছাড়া যেন একমুহূর্তে চলা দায়। পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে অফিস,বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন সবার সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা বলতে মোবাইল ফোনের জুড়ি নেই। মোবাইল খুদে বার্তা বা ফোনের মাধ্যমে মুহূর্তে আপনি জানতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ অনেক খবর।

মোবাইল ফোনের যেমন উপকারিতা রয়েছে, তেমনি এর অপকারিতাও রয়েছে। অনেকেই ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোন বন্ধ করেন না৷ অ্যালার্ম দিয়ে ফোনকে বালিশের নিচে বা পাশে রাখার অভ্যাস রয়েছে অনেকের৷ অনেকেই আবার ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোনটি সঙ্গী করে ঘুমান।

যারা এ কাজ করেন, তারা ঘুমানোর আগে বালিশের পাশে কিংবা বিছানার ওপর না রেখে কিছু দূরে কোনো কিছুর ওপরে ফোনটি রাখুন। এতে ফোনের রেডিয়েশন থেকে ঘুম নষ্ট হবে না। যখন অ্যালার্ম বাজবে তখন আপনাকে উঠে গিয়ে ফোন বন্ধ করতে হবে। তাই অলসতা সহজেই কেটে যাবে। ফোন সঙ্গী করে ঘুমানোর এই অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসটি থেকে মুক্তি পেতে এবং শান্তিমতো ঘুমাতে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা ফোন পাশে রেখে ঘুমান, আগে সেটি বন্ধ করতে হবে। ফোন থেকে নীল রঙের যে আলো নির্গত হয় তা মস্তিষ্ককে জাগিয়ে রাখে বলে ঘুম নষ্ট হয়। যদিও কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা ট্যাব থেকেও এ ধরনের আলো নির্গত হয়; কিন্তু ঘুমানোর আগে আপনার ছোট স্মার্টফোনটির ব্যবহারে ক্ষতি বেশি হয়।

মোবাইল থেকে নির্গত রেডিয়েশনে ক্যানসার বা এজাতীয় কোনো সমস্যা সৃষ্টির বিষয়ে গবেষকরা নির্দিষ্ট উপসংহারে পৌঁছাননি। তবে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ফোনের এই রেডিয়েশনের কারণে ঘুমচক্র নষ্ট হয়।

আসুন জেনে নিই ঘুমানোর সময় কীভাবে রাখবেন মোবাইল-

১. ফোন বালিশের নিচে রাখবেন না:
বালিশের পাশে বা নিচে পড়ে থাকা ফোনটিতে কল এলে আচমকা ঘুম ভেঙে যায়। মোবাইল ফোন কখনোই বালিশের পাশে রেখে ঘুমাবেন না। ঘুমানোর সময় কিছুটা দূরে সরিয়ে রাখলে ঘুম ভালো হয়।

২. গান শুনতে শুনতে ঘুম:
অনেকেই মোবাইল ফোনে গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েন, যা মস্তিষ্কের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আবার দেখা যায়, মোবাইল ফোনের সঙ্গে হেডফোন লাগিয়ে তা কানে দিয়ে ঘুমানোর আগে গান চালান অনেকেই। এটি আরও মারাত্মক ক্ষতিকর।

৩. ফেবসুক,মেইল বন্ধ রাখুন:
ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনার ফোনের ফেসবুক, মেইল বন্ধ রাখতে হবে। অনেকেই ফেসবুক চালাতে চালাতে ফোন চালু রেখেই ঘুমিয়ে যান। আবার অনেকেই ঘুমানোর আগে দীর্ঘ সময় মেইল ব্যবহার করেন বা গেম খেলেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন- এ ধরনের অভ্যাস ঘুমানোর জন্য মোটেও ভালো নয়। এতে মানসিক চাপ বাড়তে থাকে।

৪. ফোন দূরে রাখুন:
রাতে ঘুমানোর সময় ফোনটি সঙ্গে না রেখে দূরে রাখুন। আপনার ফোন রাখার জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ রাখুন। যেখানে চার্জার, হেডফোন বা অন্যান্য টুকিটাকি দরকারি জিনিসপত্র রাখেন, আপনার মোবাইল ফোনটিও সেখানেই রেখে দিতে পারেন।হাতের কাছে ফোন থাকলে তা বারবার ব্যবহার করার আগ্রহ বাড়বে। এতে মস্তিষ্ক কিছুতেই বিক্ষিপ্ত না হয়।

৫. ফোন ঘুমকে বাধাগ্রস্ত করে:
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফোন ও মস্তিষ্কের মধ্যে অল্প তফাৎ থাকলে তা ঘুমের পরিমাণ ও ঘুমের মান দুয়ের ওপরেই প্রভাব ফেলে৷ ফোন কাছে নিয়ে শুইলে তা আমাদের স্নায়ুকে উত্তেজিত রাখে৷ অবচেতনে আমরা পরের ফোন অথবা ম্যাসেজের জন্য অপেক্ষা করে থাকি, যা আমাদের বেশিক্ষণ চোখ বন্ধ করে রাখতে দেয় না৷

৬. ফোনের স্ক্রিনের আলো চোখের রেটিনার ক্ষতি করে:
রাতের অন্ধকারে ফোনের স্ক্রিনের আলো মানুষের চোখের রেটিনার পক্ষে ক্ষতিকারক। এ আলোই আমাদের মস্তিষ্ককে জানান দেয় ফোন অথবা ম্যাসেজ আসার প্রাথমিক খবর৷ এই আলো তন্দ্রার জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনকে নিঃসরণ হতে বাধা দেয়৷