হারিকেন ‘মারিয়া’র আঘাতে লণ্ডভণ্ড ডোমিনিকা

প্রকাশ: ২০১৭-০৯-১৯ ১৩:১৯:৩৪


hurricane_mariaশক্তিশালী হারিকেন ‘মারিয়া’র আঘাতে ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র ডোমিনিকা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রুজভেল্ট স্কেরিট।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, আমাদের সব কিছু হারিয়ে গেছে, যা কিনতে অর্থ খরচ করতে হবে।

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানার আগে হারিকেনটি ব্যাপক শক্তিশালী হয়ে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক মাত্রা পঞ্চম ক্যাটাগরিতে রূপ নেয়।

প্রথম দিকে ডোমিনিকার প্রধানমন্ত্রী স্কেরিট ফেসবুকে এক লাইফ আপডেটে জানান, হারিকেনের আঘাতে তার বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়ে। পরে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়।

এর পর তিনি ফেসবুকে লেখেন, আমার খুবই ভয় হচ্ছে যে সকালবেলা হয়তো ঘুম ভাঙার পর আমরা এই খবর শুনব যে মুষলধারে বৃষ্টিতে ভূমিধসের ফলে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে।

স্থানীয় সময় সোমবার রাত সোয়া ৯টার দিকে হারিকেনটি ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানে। এটি প্রথমে ডোমিনিকা দ্বীপের ওপর দিয়ে বয়ে যায়। সে সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার।

চলতি মাসে হারিকেন ইরমা ক্যারিবীয় এলাকাকে যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করেছে, হারিকেন মারিয়াও একইভাবে ওই এলাকা অতিক্রম করছে।

বর্তমানে ২৫০ কিলোমিটার গতিতে মারিয়া সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটিকে চুতর্থ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে আনা হয়েছে।

তবে এটি পুয়েত্রো রিকো এবং ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় আবারও শক্তিশালী হবে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদরা।

এদিকে হারিকেন মারিয়ার কারণে মার্টিনিক দ্বীপে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া ফরাসি দ্বীপ গুয়াডেলোপ থেকে লোকজন সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পুয়েত্রো রিকো: স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মার্কিন ভূখণ্ডে অন্তত তৃতীয় ক্যাটাগরির শক্তি নিয়ে হারিকেন মারিয়া আঘাত হানবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানকার গভর্নর রিকার্ডো রোজেলো দ্বীপবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

ইউএস ও ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ: উভয় দ্বীপপুঞ্জই হারিকেন ইরমার আঘাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডসে সতর্কতা জারি করেছেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ মারিয়ার আঘাত নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে আছেন, তাদের ধারণা এবারের আঘাতের ফলে ইরমার ক্ষতির ধ্বংসস্তূপ বাড়তি ক্ষতির কারণ হতে পারে।

এদিকে সেন্টমার্টিন, সাবা, সেন্ট ইস্টাটিয়াস এবং অ্যানগুইলাতে হারিকেন মারিয়ার দেখা মেলায় সেন্ট কিটস ও নেভিস, মন্টসেরাট ও সেন্ট লুইসা দ্বীপে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে, সোমবার হারিকেনটি ক্যাটাগরি ২ মাত্রার ছিল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা পর্যায়ক্রমে ৪ ও ৫ মাত্রার রূপ নেয়।

এর আগে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ ও যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ওপর দিয়ে বয়ে যায় আরেকটি ক্যাটাগরি ৫ মাত্রার হারিকেন ইরমা। সেটির তাণ্ডবে নিহত হন কমপক্ষে ৩৭ জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কয়েকশ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ।