মিয়ানমারের মন্ত্রী আসছেন ঢাকায়

আপডেট: ২০১৭-১০-০১ ১১:২০:৩৩


mayanmarমিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির দপ্তরের মন্ত্রী টিন্ট সোয়ে সংক্ষিপ্ত সফরে আগামীকাল সোমবার ভোরে ঢাকায় আসছেন। রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতার পর সেখানকার পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানান, টিন্ট সোয়ে সোমবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রাধান্য পাবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গ। বিশেষ করে, তাদেরনিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে রাখাইনে ফেরানোর বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে বাংলাদেশ। সমস্যার উৎস যেহেতু মিয়ানমারে, সমাধানটাও মিয়ানমারকেই করতে হবে—এই বার্তা দেওয়া হবে সরকারের পক্ষ থেকে।

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সংকট চলাকালে রোহিঙ্গাদের সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশে আসছেন মিয়ানমারের কোনো মন্ত্রী। মন্ত্রণালয়ের অন্য একজন কর্মকর্তা গতকাল দুপুরে এই প্রতিবেদককে জানান, সম্প্রতি নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গাদের ফেরানোর ওপর জোর দেবে বাংলাদেশ। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থং তুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে আলোচনা করেন। ওই আলোচনায়ও বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি জোর দিয়ে বলেছে। রোহিঙ্গাদের ফেরানোর প্রক্রিয়া নিয়ে মিয়ানমারকে একটি রূপরেখাও দিয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকায় এলে মিয়ানমার যেন এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়ে আসে, সেটাও নিউইয়র্কের আলোচনায় উল্লেখ করা হয়েছিল। তাই সোমবারের আলোচনায় এটাই থাকবে মূল প্রসঙ্গ।

বাংলাদেশের কূটনীতিকেরা মনে করেন, নিরাপত্তা পরিষদের শুক্রবারের উন্মুক্ত আলোচনার পর রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বেড়েছে। রাখাইনে দ্রুত সহিংসতা বন্ধ, সেখানে জরুরি ত্রাণকর্মীদের অবারিতভাবে যেতে দেওয়া এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশ পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের প্রায় সবাই জোর দিয়েই বলেছেন। এর ফলে সু চির দপ্তরের মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় রোহিঙ্গাদের ফেরানোর ওপর জোর দেবে বাংলাদেশ।

গত অক্টোবরে সীমান্তচৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার জেরে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। অক্টোবরের ওই সহিংসতার পর প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল। এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য জানুয়ারিতে সু চির বিশেষ দূত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিউ তিন ও জুলাইতে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থং তুন বাংলাদেশে আসেন। দুবারই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কী করা উচিত, সেটা বাংলাদেশ খুব স্পষ্ট করেই মিয়ানমারকে জানিয়েছে। মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা এ নিয়ে সহযোগিতার কথা জানালেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। এর ফলে রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে মিয়ানমারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে বাংলাদেশের।