বিদ্রোহের অপরাধে দণ্ডিত হন ৬ হাজার জওয়ান

প্রকাশ: ২০১৭-১১-২৬ ১৩:০৮:২৪


pilkhanaপিলখানায় হত্যাকাণ্ডের মামলার বিচার প্রচলিত আদালতে হলেও বিদ্রোহের বিচার হয়েছে সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর নিজস্ব আইনে, যাতে সাজা হয় প্রায় ছয় হাজার জওয়ানের।
২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিডিআর ব্যাটালিয়নে। সেসব ঘটনায় মোট ৫৭টি বিদ্রোহের মামলা হয় বিডিআর আইনে।

বিডিআর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব তদন্ত এবং বিডিআর কর্মকর্তাকে প্রধান বিচারক করে একটি প্যানেলের মাধ্যমে সেসব মামলার বিচার কাজ পরিচালিত হয়।

ওই বিচারের প্রধান বিচারককে সহায়তা করেন অ্যাটর্নি জেনারেলের একজন প্রতিনিধি। এছাড়া বিডিআর কর্তৃপক্ষকে আইনি সহায়তা প্রদান করেন সরকার নিযুক্ত আইনজীবীরা।

পাশপাশি আসামিদের আইনি সহায়তার জন্যও তাদের নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন আদালতে। এসব মামলার বিচার কাজ পর্যবেক্ষণে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরাও আদালতে ছিলেন।

পিলখানায় যে দরবার হলে প্রথম বিদ্রোহ এবং হত্যার ঘটনা ঘটে, সেই দরবার হলেই বসানো হয় একটি আদালত। পরে মামলা দ্রুত নিস্পত্তি করার জন্য পিলখানার ভেতরে আরেকটি আদালত বসানো হয়।

এসব মামলার সবগুলোর শেষ হতে প্রায় তিন বছর সময় লাগে। সর্বোচ্চ সাতবছরসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পান ৫ হাজার ৯২৬ জন।
বিদ্রোহ মামলার মধ্যে ২০০৯ সালে ২৪ অক্টোবর প্রথম বিচার শুরু হয় রাঙামাটির ১২ রাইফেল ব্যাটালিয়ন রাজনগরের ৯ জনের বিরুদ্ধে। ২০১০ সালের ২ মে এই মামলার রায়ে প্রত্যেক আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।

বিদ্রোহের মামলার প্রথম রায় হয় পঞ্চগড়ের ২৫ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের বিদ্রোহের ঘটনায়।

এর প্রায় তিন বছর পর ২০১২ সালের ২০ অক্টোবর পিলখানার সদর ব্যাটালিয়নের রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিদ্রোহের বিচার শেষ হয়।

পিলখানায় মোট ১১টি ইউনিটের মামলায় ৪ হাজার ৩৩ জন সাজা পান, খালাস পান ৫৬জন।

পিলখানার বাইরে বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন/ইউনিটে এক হাজার ৯৫২ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিল। বিচারে সাজা পান ১ হাজার ৮৯৩ জন, খালাস পান ৫৯ জন।

সাজাপ্রাপ্তদের অধিকাংশই হত্যা মামলার আসামি। খালাসপ্রাপ্তরা প্রত্যেকে চাকরি ফিরে পান, তবে ততদিনে বাহিনীর নাম বদলে বিজিবি হয়ে গেছে।